• কবিতা

    কবিতা- আবার বৃষ্টি নামুক

    আবার বৃষ্টি নামুক
    – অমিতাভ সরকার

     

    তোমার জন্য কত কবিতা,
    মুঠো মুঠো আবির ছড়ানো বিকেলে।
    নগ্ন দুপুর বিতাড়িত আজ,
    গগনে ছড়ানো অপূর্ব মিশেলে।

    রামধনু কবে এঁকে ছিলে তুমি,
    লগ্ন তো নয় আজও ফ্যাকাসে।
    জোনাক জ্বলা নিশি পার হয়ে গেছে,
    তবুও হৃদয় কেন ভাবে অবকাশে।

    তৃষিত জীবন মিশে গেছে সম্প্রদান কারকে,
    চাতকের আকাশ জ্বলে দাবানলে।
    বৃষ্টি নামুক দূর হোক জ্বালাতন,
    অমানিশা দূর হোক নতুন সকালে।

  • কবিতা

    কবিতা- এসো তুমি

    এসো তুমি
    -অমিতাভ সরকার

     

    সৃষ্টির বীজ, শুষ্ক পল্লব,
    আকুতি তোমাকে নিয়ে।
    সৃষ্টি সুধা নিয়ে এসো তেজে,
    তর সয়না যে হিয়া মাঝে।

    দক্ষিনে দেখো ওড়না উড়ছে,
    দোয়াত ভাঙ্গা কালো রঙে।
    গরম হাওয়ায় হিম ধরেছে,
    সস্থিতে জীবন নব রঙে।

    দুরন্ত নূপুর বেজে উঠল ,
    বর্ষার উচ্ছ্বাস আকাশে বাতাসে।
    বীজ হাসে বৃষ্টির ফোঁটা নিয়ে,
    সৃষ্টির গল্প শোনো হরষে।

    শুষ্ক পল্লব বারি ধরেছে বুকে,
    সবুজ মেখেছে প্রান্তর।
    ক্ষীণ নদী কল্লোলিনী,
    তরী ছোটে উত্তর।

  • অণু গল্প

    অণু গল্প- ভোরের স্বপ্ন

    ভোরের স্বপ্ন
    অমিতাভ সরকার

     

    এক ঝাঁক উপন্যাসের একটি পাতা। প্রস্ফুটিত শরতের শিউলি। এ রকমই ভাবনা নিয়ে আবাস গড়তে চেয়েছিলাম মঙ্গলের বুকে সেই কবে। আবাস গড়েছি। নীলিমা তুমি দেখতে পাচ্ছো?
    তোমাকে দিতে পেরেছি পাকা আম রঙের আকাশ। এক চিলতে জমিতে আবাস চেয়েছিলে না? তোমার জন্য রয়েছে আবাসের সাথে হেক্টরের পর হেক্টর জমি প্রভাত ভ্রমণের জন্য। অফুরন্ত বনানী। অঢেল দূষণমুক্ত শ্বাস গ্রহণের প্রান্তর। হাত ধরাধরি করে সকলের চলাফেরা। দরজার আগল নেই। এখানের অভিধানে ধনী দরিদ্র বলে কিছু নেই, হিংসা বিদ্বেষ কি জিনিস জানেনা কেউ। এখানে হাসি ছাড়া কান্নার স্থান নেই। হাসপাতাল দরকার হয় না। বিষ ঢেলে জমিতে ফসল হয় না। দেখো নীলিমা কিছুদিনের মধ্যে আমাদের গায়ের রং আকাশের মত হয়ে গেছে না! তুমি কি সুন্দর বুঝতে পাচ্ছ! গ্রহান্তরের পরীরা এসে তোমার ঘুম এনে দেয়। তোমার মুখের উপর দেখতে পায় গৈরিক চাঁদের আলো।
    প্রভাতের কলকাকলি তোমার আমার ঘুম ভাঙায়। তরঙ্গে তরঙ্গে ভেসে আসে পৃথিবীর বুকে নীলিমার উচ্ছাস আহ্বান ও স্মৃতি, ও বিথী দেখে যা আমাদের কত সুখ আমাদের আবাসে।

  • কবিতা

    কবিতা- রহস্য

    রহস্য
    -অমিতাভ সরকার

     

    কবিতাগুলো গল্প হয় না স্বপ্নের মতো ফেরে।

    শব্দগুলো শিল্প হয়ে ছবির মতো ভাসে।
    আকাশ থেকে আসে, না হৃদয় থেকে আসে!

    কবির থাকেনা উৎপত্তির রহস্য মনে।
    লেখনি শুধু এগিয়ে চলে সহসার আগমনে।

    প্রজাপতির পাখনা উড়ে,
    ফড়িংয়ের ছোটাছুটি।
    নদী তীরে দেখা যায় ,
    গাঙশালিখের লুটোপুটি।

    আকাশে চিলের খেলা,
    নদীতে জাল ফেলে জেলে।
    রাঙ্গাবৌ স্নান সেরে ,
    ঘরে ফিরে ধীরে।

    শঙ্খ ধ্বনি বলে দেয়,
    আকাশে আবির এলো।
    নতুন বউ দীপ জ্বালো,
    সন্ধ্যে হয়ে এলো।

    গড় হয়ে প্রণামে,
    আশীর্বাদ ঝরে পড়ে।
    কবিতার ছবিগুলো ,
    পাড়ি দেয় দূরে।

  • কবিতা

    কুর্নিশ কবিতা

    কুর্নিশ কবিতা
    -অমিতাভ সরকার

     

    আমার কবিতা কি ভালবেসেছিল তোমাকে !
    উষ্ণ চুম্বনে কি ভালোবাসা ছিল না?
    শিরীষের ডালে ছিল পাখির কিচিরমিচির,
    সকালের সমীরে ছিল সরষে ফুলের ঘ্রাণ।

     

    হাত ধরাধরি করে, দেখ সকালের ভ্রমণ,
    কবুতরের ঠোঁট ঘষাঘষি ছাদের কার্নিশে।

    প্রভাতের ভৈরবীতে দেবতার আহ্বান,
    আমার কুর্নিশ শুধু কবিতার প্রশ্বাসে।

     

    এস কথা বলি তোমাতে আমাতে,
    শব্দ গুলো ভেসে বেড়াক কবিতার বাসরে।
    চাঁদ ছুঁই-ছুঁই চুমুগুলো সব ছুঁড়ে দিয়ে আকাশে,
    কবিতার জাল বুনি সেই ভালোবাসা দিয়ে।

  • কবিতা

    কবিতা- একান্তে তুমি

    একান্তে তুমি
    – অমিতাভ সরকার

    কবিতার দেশে কবিতা হেসেছে,
    আমিও হেসেছি তোমাতে।
    মিলনের কথা কতবার বলেছি,
    প্রেম সুধা তুলে তোমাতে রেখেছি।

    আঁধার নীলিমায় রাত কেটে গেছে,
    চাঁদ ওঠে নি তো আজো।
    বসন্তের কোকিল কুহু কুহু ডাকে,
    রাধাচূড়া ঝোঁকে কৃষ্ণচূড়া শাঁখে।

    ভাটিয়ালি গান ধরেছে মাঝি,
    মেঝেন বাজালো বাঁশি।
    আমার প্রেম বাসি রয়ে গেল,
    তুমিতো হোলেনা ছলছল।

  • কবিতা

    কবিতা -ডুমুর, বৃষ্টি ,ভালোবাসা

    ডুমুর, বৃষ্টি ,ভালোবাসা
    -অমিতাভ সরকার

     

    বরাত এলো কবিতা লেখার,
    বিষয়, তোমায় ভালোবাসি।
    খুঁজতে গিয়ে বিষয়গুলো,
    নিজের মাঝে নিজেই ভাসি।

    পদ্ম দীঘির পদ্ম হাসে বৃষ্টি নিয়ে বুকে,
    বাঁশ ঝাড়েতে টিয়া গুলো লুকোচুরি খেলে। এইগুলো মোর ভালোবাসা জেনে রাখো মনে,
    বেলীর গন্ধ হাসনুহানায় মন যে আমার দোলে।

    নদীর চরে পটল দেখ ,লালিম গুলো চিকচিকে,
    আকাশে ওড়ে চখাচোখি ফুটি ফাটা দুপুরে।
    নদীর জল স্বচ্ছ দেখো, মাছ গুলো সব চকচকে,
    এটাই আমার ভালোবাসা ডুব দিতে যায় পুকুরে।

    লাল টুকটুকে ডুমুর, ভাসছে কেমন পুকুরে,
    দোয়েল পাখি ডাক দেয় ডালে বসে দুপুরে। ফরিংগুলো দেখো কেমন করছে শুধু লুটোপুটি,
    এই ভালোবাসা পোষণ করি বুকের মাঝেখোটরে।

    ইলশেগুরির নাচন দেখি চিলেকোঠায় বসে,
    দুহাত তুলে নাচলে তুমি ভিজলে বৃষ্টি জলে।
    এটাই তোমার স্বচ্ছ মন এটাই ভালোবাসা,
    এই মনেতে ভাসব মোরা দুটি হাত তুলে।

  • কবিতা

    কবিতা- এলোমেলোতে

    এলোমেলোতে
    -অমিতাভ সরকার

     

    বসে নদী তটে স্নিগ্ধ সমীর,
    দিশাহীন ভাবনা,অন্তিম রবি।
    পাখিরা গেছে চলে নীড়ে,
    তোমার বাসবি রাত মনেতে গভীর।

    একদিন ছন্দ ছিল গল্প অনেক,
    তরুতে তুহিন ,বাতাসে বিশ্বাস।
    বুকেতে কষ্ট– গেছ চলে,
    যন্ত্রনা শরীরে কষ্টে বিবেক।

    আকাশে গভীর মেঘ অশনি সংকেত,
    বজ্র নিনাদ, বুক দুরু দুরু।
    বৃষ্টি শুরু– ভেজাক আমাকে,
    ভেসে এলে হৃদে হঠাৎ।

    সঞ্জীবিত হোল মোর চেতনা,
    ঝিরিঝিরি বাতাস বহমান।
    তোমার গন্ধ –তুমিতো পাশে,
    তরু এখন তুমি যাতনা?

  • কবিতা

    কবিতা- কালবৈশাখী

    কালবৈশাখী
    -অমিতাভ সরকার


    কালবোশেখীর ধূসর ধুলো আকাশ ভরা মেঘ,
    বাজলো নুপুর ঝমঝমিয়ে বাতাসে সংকেত।
    ভাঙল গাছ, উড়ল চালা , উড়িয়ে নিল রেলিং, ভিজলো মাটি ফাটা মাঠে ,বজ্রপাতে শকিং।

    গাছ গুলো সব সবুজ হলো, রঙ ধরেছে আসল,
    চাষীর মুখে ফুটল হাসি, উঠলো কাঁধে লাঙল।
    বলদ গুলো উঠলো ঝেড়ে, খুলল তাদের আগল,
    চাষী গিন্নি গোছ গাছেতে আনন্দে হলো পাগল।

    খরার চোটে নলকূপেতে উঠছে না তো জল,
    কয়েকদিনে বৌ ঝিয়েদের ছিঁড়তে পারে কপাল।
    এটাই হলো ঋতুর খেলা, যুগে যুগের ধারা,
    মাতুক সবাই গ্রাম-শহরে ,ঝরুক আনন্দধারা।

  • কবিতা

    জীবনের রঙ

    জীবনের রঙ
    -অমিতাভ সরকার

     

    তুমি বলেছিলে আবিরের রং কোনদিন মোছেনা–
    বছর পেরোই–বাতাসে রুক্ষতা আসে,
    কুলিকের সবুজ জল বাষ্প হয়;–শির শির করে,
    পাতা ঝরার শব্দ ভেসে আসে পক্ষীনিবাসের
    বুক চিরে–হিম রক্ত তরতাজা হয়
    পলাশের মতো!

    আমার মনে হল অন্তত এই মুহূর্তে বসন্ত আসে
    বারবার রং মেখে জীবনের জন্য
    পসরা নিয়ে—উচ্ছাস, আবেদন ও আলিঙ্গনের!!

    বাসনা, আজও তোমার ওষ্ঠের নির্যাস
    অনুভব করছি পর্যটন নিবাসের অলংকৃত গোলাপে!!

You cannot copy content of this page