-
কবিতা- এসো গাছতলায় বসি
এসো গাছতলায় বসি
– তাপস বর্মনবিষণ্ণতার বুক চিরে এগিয়ে চলেছি
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে।
দুপুরের বজ্র মেঘে এক পশলা বৃষ্টি হলো বটে,
কোনো কিছু ধুয়ে মুছে সাফ হলো না।
জীর্ণ পাঁজরে বাসা বেঁধেছে অলসতা।
সামনের আস্তাকুঁড়ে থেকে ইতরের সঙ্গে লড়াই করে
খাবার সংগ্রহ করছে অসহায় মানুষ;
শুভবুদ্ধি সম্পন্নরা পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
মানবিকতা, বিবেক, সাহানুভূতিরা কোথায়?
লজ্জায় মুখ ঢাকছে আগামী।
পাঁই পাঁই করে ছুটতে থাকা ব্যস্ততায়
চেনা মানুষগুলো হারিয়ে যাচ্ছে অচেনার ভিড়ে।
পৃথিবীটা দিনে দিনে ছোট হয়ে আসছে,
আমাদের জন্য নেই কোনো বিশ্রামাগার,
নেই কোনো নিরাপদ আশ্রয়।
এসো শ্যাম, এসো সেলিম আমরা গাছ তলায় বসি,
আর স্বপ্নের রং তুলি দিয়ে আঁকি
প্রীতির ছবি, সমানুভূতির ছবি, মনুষ্যত্বের ছবি,
বড় পৃথিবীর ছবি। -
কবিতা- ছায়া কেন সঙ্গে যাবে?
ছায়া কেন সঙ্গে যাবে? (লিমেরিক)
– তাপস বর্মনছাতা মাথায় স্বপন বাবু বেরিয়ে ছিলেন পথে,
হটাৎ দেখেন ছায়াটি তার চলছে সাথে সাথে।
ছায়া কেন সঙ্গে যাবে
শনির দশা নিশ্চই হবে
পঞ্জিকা খুলে দেখতে হবে কি আছে তাতে।পঞ্জিকা খুলে স্বপন বাবু দেখেন সরষে ফুল,
কেন্দ্রে দিব্যি বৃহস্পতি কোথায় হলো ভুল।
এবার ওঝা ডাকতে হবে
তিনি সঠিক কথা কবে
ছাতাটি বোধ হয় স্বপন বাবুর যত নষ্টের মূল।রাত দুপুরে ওঝা এলেন সঙ্গে চন্ডাল হাড়,
অং বং চং করলেন শুরু ছায়া তাড়াবার।
গিন্নি গেলেন বেজায় চটে
ঝাঁটা হাতে যেই না ওঠে
অমনি ওঝা ঝোলা গুটিয়ে হলেন পগার পার।আর তো বাবুর ঘুম আসেনা দুরু দুরু বুক,
ছায়া বিভ্রাট কেড়ে নিল স্বপন বাবুর সুখ।
অবশেষে তিনি ভাবেন
নন্দ বাবুর কাছে যাবেন
নন্দ বাবু ঐ এলাকার বিজ্ঞানের মুখ। -
কবিতা- বদ্ধ ভূমি
বদ্ধ ভূমি
-তাপস বর্মন
আমার ভুবনে গ্রীষ্মের দাপট ঘাম ঝরে অনর্গল,
হৃদয় চাতক মেঘ পানে চায় চাহে একফোঁটা জল।
চেরাপুঞ্জিতে মেঘমালারা অবগুণ্ঠনে ঢাকা,
সবকিছু ফেটে চৌচির হয় পাই না কারোর দেখা।
তপন বাবু ক্রমান্বয়ে বাড়ায় ক্রোধের ঝাঁঝ,
শিয়রে নির্ঘাত বিপদ দাঁড়িয়ে ললাটে পড়ে ভাঁজ।
এলনেনো বুঝি জলরাশিকে করে ফেলেছে গ্রাস,
মনের সবুজ বনানীরা তাই তৃষ্ণায় হাঁস ফাঁস।
বাধা ঠেলে মেঘ বালিকা না আসলে তুমি,
জীবনটাই পুরো পন্ড হবে,হবে বদ্ধ ভূমি।