-
কবিতা- বসন্তের আলিঙ্গন
বসন্তের আলিঙ্গন
– পলি ঘোষফাগুন হাওয়ায় ভেসে চলি আপন অনুভবে।
আবেগী মন পাখি আজ ক্লান্ত হয়ে বেঁচে থাকা।
বসন্তের কুহু কুহু ডাকে পেখম তুলে রঙ বেরঙের রঙিন স্বপ্ন এঁকেছি।
পাতা ঝরে যাওয়া এই দিনের উত্তাল ঢেউ খেলে যায় তোমার ছোঁয়ার আলিঙ্গনে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষায় মন হারায় ক্ষণে ক্ষণে। এলোমেলো খোলা চুলে উজ্জ্বল রঙীন স্বপ্ন নিয়ে।
রাঙালো ক্যানভাসে আঁকা ছবি ভরিয়ে তুলি শিমুল পলাশে।
ডাক পিয়নের কুহু সুরে সুর মেলাতে উদাসী হলাম নিজেই আমি।
বিরহী এ মন মানে না কোন অভিমান।
বসন্ত বাতাসের মতো আবীর রঙে রাঙিয়ে যায় দুরন্ত খোলা আকাশের বুকে মাথা নেড়ে বাতায়ন। -
কবিতা- ফাগুন হাওয়ায় ভেসে
ফাগুন হাওয়ায় ভেসে
– পলি ঘোষফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়
রঙ চিনেছে মনের পাতায়।
গাছে গাছে হলুদ পলাশ
শিমুল বনে খেলবো হোলি
সখি আয়রে সখি আয়।
বসন্ত আজ এসেছে মোর দ্বারে।
চূড়ায় চূড়ায় মনের মাঝে
কৃষ্ণ নাম লিখছি হৃদয় জুড়ে।
বাতাসে চাঁপা ফুলের মিষ্টি সুবাস ভাসে।
কনক চাঁপা দীপ্তি ঝরায় যৌবনে চলার পথে।
তোমার গৌরবে
নয়নে নয়ন মেলে দেখি
আকাশ থমকে গেছে
মৌচাক দের ভিরে।
কোকিল কালো মেঘের পালক ঝরে,
বকুলের মালা গেঁথে ,
ডালে ডালে আঁখি জ্বলে করছে খেলা তাই -
কবিতা- বসন্তের কোকিল
বসন্তের কোকিল
– পলি ঘোষআজ ও একি রকম ভাবে ভালবেসো আমায়,
ঠিক যেমন করে পূর্ণিমা রাতে চাঁদের আলোয় আলোকিত হয় এই শহরতলি।ফিরবো আবার
হারানো সেই কৃষ্ণ চূড়ার তলে।
শূন্য হাত রবে নীরবে হৃদয়ে মম চিত্তে।
নতুন বসন্তের কুহু কুহু ডাকে।
সে ক্লান্তি ভুলে পথে একলা পথিক হয়ে ছড়িয়ে দেয় রঙ বেরঙের রঙিন এক বসন্ত।
সাক্ষী থাকে চলার পথে অলি গলিতে ঝরা পাতা।ডাক শুনে তাই পাঠিয়ে দেয় রঙিন ডানা মেলে।
দেখো রে এসেছে মোর জীবনের ভাবনার সাগরে ভেসে।
মনের ক্যানভাসে আঁকা ছবি
ভরিয়ে তুলি অপরূপ তরঙ্গের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে।
অভিমানী বিকেল এর মতো আবীর রঙে রাঙিয়ে যাই আপন অনুভবে পলাশ শিমুল বনে বনে। -
কবিতা- দুরন্ত
দুরন্ত
-পলি ঘোষ
আজ এই ক্ষনে প্রতি ক্ষনে
প্রতি মুহূর্তে হারাই যদি তোমার হৃয়ার মাঝে
বৃষ্টি হয়ে নামব পাশে থেকো উষ্ণ স্পর্শ আলিঙ্গন নিয়ে।
হেমন্ত পেরিয়ে নতুন এক অপরূপ তরঙ্গের বসন্ত এলো এই নবরুপে।
এ এক শীতের চাদর ঢাকা মিষ্টি সুরের দুষ্ট পাখি কুহু কুহু ডাক।
এই গোধূলি বেলায় সূর্যের আলো কাঁদে নিশুতি রাত জেগে থাকা এক রাত জাগা দুরন্ত পাখি।
এক পূর্ণিমা চাঁদ এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেলো মেঘের ভেলা করে ।
সেই দুরন্ত ক্লান্ত চোখ হারিয়ে নিজেকে খুঁজে পেলো এক খুশি মেশানো এক নতুন পাতা জন্মানো। -
অণু কবিতা- আনন্দ
আনন্দ
– পলি ঘোষআষাঢ়েরর প্রবল রবীন আনন্দে।
গানখানি প্রিয় গাঁথিলাম মোর ছন্দে।
দিল তারে বনবীথি
কোকিলের কলগীতি
ভরে দিল মোর বিশ্বভুবন
বকুলের গন্ধে।
চারিদিকে বয়ে চলে
মাধবীর মধুময় মহামন্ত্র
নদীতে মাঝি বৈঠা বায়ে
তরণী পরে
রঙ্গে রঙ্গে রাঙ্গালো এ ত্রিভুবন
বানীমম নিল তুলে
পলাশের কলিগুলি
বেঁধে দিল মোর হৃদয়ের
মনিবন্ধে। -
কবিতা- আকাঙ্খা আজও জেগে আছে
আকাঙ্খা আজও জেগে আছে
– পলি ঘোষমনের মানুষটিকে খোঁজার ছলে
এক জনম-মরণের খেলার মাঝে,
মায়ার খেলার সাথে অভিনব আলোতে।
দিনের আলোর কোলে বসে
উঠোনের কোণে, সেই মুখ খুঁজি।
ভাঙ্গা কলাগাছের ফাঁকে ফাঁকে
পরিব্যস্ত শিহরণ জাগে।
মুমূর্ষু মানুষের সত্ত্বা আমার সামনে,
কাছে আসে, গোধুলিবেলায়, দিনের শেষে।
রোদে দূর মরচে-ধরা পথে
হেঁটে চলে যাই অনেকটা পথ।
তবুও তাঁকে পাবো না ফিরে, জানি —
অস্তিত্বের চরম বাস্তবতায়।
মানুষের মধ্যেই সন্ধান করি মহামানবের।
চেনা মাঠ, চেনা ফুল, গাছের ছায়া —
এ সবই মৃত্যুর পথ।
শুধুই আকাঙ্খারা আজও জেগে আছে। -
কবিতা- পদভূমি
পদভূমি
– পলি ঘোষনষ্টকল্পে তলিয়ে যাবার সময়
বেঁচে আছি জড়িয়ে তোমার গানে।
নরকলোলুপ ডাকে তা ধিন ধিন
নয়ন মেলে দেখি তুমি আছ সঙ্গে।আমার কাছে গান জীবনপথের এক মন্ত্র
মেঘপাড়ার গোপনতম অলিন্দে
আমার ব্যকুলতার দীর্ঘশ্বাস।সৃষ্টিকে রক্ষা করতে চেয়ে
যে নায়িকা শুধুই প্রতিরোধ গড়ে
পাখির চোখের শত শান্ত বলয়রেখা
সমাজ, পরিজন হিসেব রাখে
জ্বলে ওঠে চোখ ও নিশানা
ঘোর অমাবস্যার নেশায়।
সে কথা বলে মৌন নির্জনতায়
শূণ্যতায় বুঝেছে কবিতার পদভূমি। -
কবিতা- প্রাণ স্পন্দন
প্রাণ স্পন্দন
-পলি ঘোষআমি আজ বাকরুদ্ধ হয়ে
আমার প্রাণ স্পন্দন তোমাকে দিয়েছি,
তুমি অফুরন্ত।
যত দূরে যাই, আমি ততই জ্যোতির্ময় শিলা হয়ে উঠছি,
আকাশ ছোঁয়া এক দীর্ঘ জ্বলন্ত মোমবাতি জগৎ সংসারে।যে অপরূপ আমাকে নিয়ত আকর্ষণ করে,
মুহুর্তে খন্ডিত হয়ে যায় সহসা সংযুক্ত,
ক্ষুদ্র প্রয়াসে, শিল্পকারুতে সে নক্ষত্র নীলিমা।আজ আমি চেয়েছিলাম ত্যাগের কবিত্ব,
তুমি আমাকে ভালবেসে দিলে প্রাপ্তি।
সে কবিত্ব পূর্ণতা পেয়ে আজ আমি বাকরুদ্ধ এক চন্দ্রতারিকা।
শ্বেত রাজহংসের মতন আজ আমি শুভ্র এক দীর্ঘকার মন্দ বাতাসে উড্ডীন। -
কবিতা- প্রেম সার
প্রেম সার
– পলি ঘোষসীমাহীন সুখের নিরানন্দ
রয়েছি নিদারুন যন্ত্রনায়
ক্রমে ক্রমে বহমান অনুভূতির ছলনায়।পেয়েও যদি হারায় তোমায়
জাগ্রত তব বিরহ বেদনা,
আমি কাঁদি আমি মরি,
প্রেমের সার বস্তু অনেকের অজানা।তোমার প্রেমের অসীম শক্তি
মধুরতা মিষ্টতা না পাওয়ার,
নহে প্রেম তব কামনা বাসনা পূরন,
বন্ধুত্ব মেনে নেওয়ার শান্তি, নিষ্কাম।অবুঝ এই মনের কাননে লাগে ব্যাথা,
বেদনা বিধুর মম হৃদয়,
বিরহ বেদনা, মিলন আনন্দ
প্রেম সুমধুর তাই তো এতো মধুর। -
কবিতা- একদিন
একদিন
– পলি ঘোষআজ আমার শূন্যতা তুমি অনুভব করতে পারবে না,
যখন আমার অহংকার বেড়ে গেলো আমার স্বপ্নেতখন তুমি বুঝবে সেদিন বদলে গেছে বহু দূরে
এক চিলতে রোদে পাখনা মেলে উড়ে গেছে চিন্তা ভাবনাগুলো মোর মুখে।
আমার স্বপ্নে বিভোর নিরন্তর বিরহ অনল ভেজাই চোখের জলের সাথেলড়াই করে বেঁচে থাকা এক গভীর রাতের।
আমার নীড় বাঁধে হৃদয় জমিনে এক রঙা মেঘে রাঙিয়ে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অনেক গভীর ঘুমের ঘোরে।
আমার মনের মাঝে শিহরন যেন মাটির উর্বর জমিতে নামিয়ে আনলো এক অসাধারণ অনুভূতি।
আমার নীড় আছে এমন একটি জায়গা
যেখানে আমার খেলা বসন্তের কোকিল কালো মেঘের পালক ঝরে পড়ল
হঠাৎ করেই বুকের ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে।