• কবিতা

    কবিতা- স্বপ্ন ভেলা

    স্বপ্ন ভেলা
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

    এই তো এলো শরৎ, সে তার অরুণ আলোর দোলায় ভেসে,
    শ্বেতশুভ্র বিকশিত হেলছে যে কাশ হেসে হেসে।
    ঠিক সে সময় জ্যোতির্ময়ের আগমনের আভাস পেয়ে,
    টলোমলো ছুটছি আমি মাতাল হ‌ওয়া মনকে নিয়ে।

    মুখোমুখি তুমি-আমি রোদ ও ছায়ার খেলার মাঝে,
    সামনে নদী ছলাৎ ছলাৎ, সাথে মেঘের মৃদং বাজে।
    আজ দু’জনে চোখে চোখে বলবো প্রাণের গোপন কথা,
    রোদের চাদর জড়িয়ে গায়ে উড়িয়ে দেবো সকল ব্যথা।

    মিটিয়ে নেবো মান-অভিমান, স্বচ্ছ সাদা মেঘের ভোরে,
    উষ্ণ পরশ গায়ে মেখে মাতবো দু’জন গানের সুরে।
    নিন্দুকেরা বলুক কথা, আমরা দু’জন সংগোপনে,
    ছড়িয়ে দেবো স্বপ্নের বীজ, নীল নীলিমায়, কাশের বনে।

    হাতের ওপর হাতটি দিয়ে, পায়ে পায়ে সপ্তপদী,
    কখন‌ও বা মেঘের দেশে,কখনও বা বেয়ে নদী,
    চাঁদের দেশে পাড়ি দেবো, কখনও বা পাহাড় ছুঁয়ে,
    কখনও বা ফুল বাগিচায় ভ্রমর হয়ে উঠবো গেয়ে।

    জ্যোৎস্না আলোয় অবগাহন, দিঘীর জল আঁকবে ছবি,
    অহরাত্র গল্পকথার এক কবিতা লিখবে কবি।
    মদিরতার ঘোর কাটিয়ে ভৈরবী সুর কপাল চুমে,
    নতুন গাথা তৈরি হবে সরিয়ে দিয়ে রাত নিঝুমে।

  • কবিতা

    কবিতা- হঠাৎ পাওয়া

    হঠাৎ পাওয়া
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

    কাটছিল জীবন ভালোমন্দ মিশে,
    চার দেওয়ালের সুখের রাংতা মোড়া,
    ভোর থেকে রাত গন্ডি কাটা সময়ে
    আপন হাতে রচেছিলাম সে কারা।

    মন বলেছিল এই তো জীবন বেশ,
    স্বপ্নগুলো ভাঙছিল জোর শব্দে
    তবুও ভাঙন আটকে রেখে দু’হাতে
    দিবানিশি থেকে মাস পেরিয়ে অব্দে।

    কোথাও ছিল না একটুকু খোলা হাওয়া
    বায়ুশূন্যতা ভরেছিল কুঠুরিতে,
    প্রশ্বাসে তবু অক্সিজেনের জোগান
    ভালোবেসে কভু দিইনি কম হ’তে।

    তবুও কোথাও জীবন হচ্ছে শেষ,
    প্রতিদিন বুকে হাতুড়ি মারার শব্দ,
    সাইরেনের সেই কর্ণকুহর ভেদ
    হাসিখেলা সব বোবাকান্নায় জব্দ।

    সুখের ভরমে নিজেকে হারিয়ে দিয়ে
    সম্বিতে দেখি বিলুপ্তপ্রায় আমি,
    হঠাৎ সজোরে দরজা খোলার শব্দ
    ওইতো জ্যোতি, এলো অন্তর্যামী।

    মুখে দিল ভাষা, হাতেতে কলম খুলে
    অনুভূতিগুলো তুললো সে জাগিয়ে,
    শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে নিয়ে
    কথামালা থেকে উঠলো কবিতা হয়ে।

    এসেছো যে তুমি মুক্ত বাতাস হয়ে
    ফিরে পেলাম সেই নতুন ভালোবাসা,
    নতুন ছন্দে, নতুন কবিতা সাথে
    ফিরে পেলাম জীবনে বাঁচার আশা।

  • কবিতা,  স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার

    কবিতা- একটি মেয়ের গল্প

    ।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।

     

    একটি মেয়ের গল্প
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    শ্যামল ঘেরা গ্রামের মাঝে ছোট্ট মাটির ঘরে,
    একটি মেয়ের বেড়ে ওঠা সোহাগে – আদরে।
    তন্বী মেয়ের হাসির পরশ থাকতো লেগে মুখে,
    এমন করেই কাটছিল দিন, আনন্দে ও সুখে।

    মনেতে বসন্ত এলো,ফুটলো হাজার ফুল,
    ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে প্রেমেতে মশগুল।
    রূদ্র তোমার ও রূপ দেখে তন্বী পাগলপারা,
    তোমার নিবিড় চাউনি তাকে করলো দিশেহারা।

    এখন মেয়ের চোখের কোণে শ্রাবণ লেগে থাকে,
    মেঘের গায়ে উদাস হাতে জলছবি সে আঁকে।
    রাতজাগা তার দুটি আঁখির কাজল যায় ধুয়ে,
    একদিন তো ঘুমোতে যেত স্বপ্ন ভরে নিয়ে।

    স্বপ্ন গুলো ধূসর মরু, ফুল ফোটে না বাগে,
    তন্বী মেয়ে আর কাঁদে না গভীর অনুরাগে।
    তোমার ও বুক আকাশ হয়ে দেয় না যে আর ঠাঁই,
    মন ভাঙার শব্দে কেবল চমকে ওঠে তাই।

    এখন মেয়ে হাতড়ে মরে ছোট্ট মাটির ঘর,
    যেখানেতে সবাই আপন, কেউ ছিল না পর।
    যেখানেতে ছিল না তো নিন্দে – অপমান,
    জানতো না সে জীবন মানে কান্না- প্রহসন।

    মেয়ের চোখে এখনো ভাসে আবছা এক ছায়া,
    আসবে তুমি আবার নিয়ে অনুরাগের ছোঁয়া।
    ভালোবাসা বাঁধবে যে ঘর মন্দবাসা ছেড়ে,
    সেই মেয়েটি ভালোবেসে বাঁচবে নতুন করে।

  • কবিতা,  স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার

    কবিতা- এমন শ্রাবণ দিনে

    ।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।

     

    এমন শ্রাবণ দিনে
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    শ্রাবণ আকাশ সেজেছে অনুরাগে,
    বাদল – রোদের চলছে লুকোচুরি,
    মনে জমছে মনখারাপি মেঘ,
    তুমি ক্রমে যাচ্ছো দূরে সরি।

    মনে পড়ে? এমন শ্রাবণ দিনে,
    বর্ষা সোহাগ ভিজিয়েছিল তোমায়,
    সিক্ত তোমায় দেখে লাজে রাঙা,
    মুখে আমার গোধূলি রঙ ছায়!

    সেদিন শ্রাবণ ছিল পাগলপারা,
    গন্ধরাজ আর কামিনীর সুবাসে,
    কালো মেঘের ছিল না তো দেখা,
    আমরা দু’জন চলেছিলাম ভেসে।

    হঠাৎ সেদিন শরৎ এসেছিল,
    ফুটেছিল হাজার শিউলি ফুল,
    আবার আজকে শ্রাবণ গরজনে
    বুক কাঁপিয়ে, ধরাচ্ছে সব ভুল।

    সত্যিই কি ভুল ছিল সবটুকু?
    প্রেমের বানে ভ্রমের স্রোতে ভাসা!
    বর্ষা- বাদল মিলবে না কখনও?
    আর নেই কি একটুখানি আশা?

    আজকে তুমি খেলছো রোদের সাথে,
    ঝলকানিতে যাচ্ছো আমায় ভুলে,
    মনের ব্যথা পড়ছে ঝরে ঝরে,
    এমন রোদন ঘুচবে কোন কালে?

    মাঝে মাঝে তোমার গরজনে,
    বিদ্যুতের ঐ আলোক দেখে বাঁচি,
    আমার বাদল ফিরবে আমার কাছে।
    বলবে আমায় এই তো আমি আছি।

    আবার তুমি আসবে শ্রাবণ দিনে,
    বর্ষা -বাদল মিলবে আবার দোঁহে,
    প্রেম-দরিয়ায় চলবো আমরা ভেসে
    ভালোবাসা থাকে না আটকে মোহে।

  • কবিতা,  স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার

    কবিতা- সময়

    ।। অমরনাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।। 

    সময়
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

    অতিমারীর প্রকোপে শিক্ষা স্থানচ্যুত,
    বিবেক বিক্রিত খোলা বাজারে
    চেতনা মাতৃহীন, বিপ্লব দেশদ্রোহী
    সেই সুযোগে পুঁথিগত শিক্ষা অবলুপ্ত।

    বিপ্লবী বাজারে কিনতে পাওয়া যায়,
    মনুষ্যত্বের অভাবে প্রাণহীন ধরিত্রী,
    ধর্ম টনিক গলধ্যকরণে বিষাক্ত মনভূমি
    তবুও মানুষ বাঁচে এক চিলতে সুখের আশায়।

    স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিলেন যাঁরা,
    বিস্মৃত আজকের দেশপ্রেমীর মননে,
    চেতনহীন অ—শিক্ষা মূর্তি ভাঙে মনীষীদের
    আকাশ জুড়ে শুধুই কালো,অন্তরালে নক্ষত্ররা।

    সামাজিকতা দূর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে,
    পড়শি’র অসুখে দরজায় উঠছে খিল,
    মানসিক দূরত্বে স্বজনের মৃত্যুও গা- স‌ওয়া
    রোজ ভালোবাসা, আবেগ, স্বপ্ন মাথাকূটে মরছে।

    অন্ধকার বর্তমান কোন্ ভবিষ্যতের পথে?
    দিশাহীন যুব- সমাজ লাশকাটা ঘরে,
    ছাত্রছাত্রীরা আন্তর্জালে জড়িয়ে
    মাথা ও হৃদয় শ্লথ,দিশাহীন গতিতে।

  • কবিতা,  স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার

    কবিতা- বাহানা

    ।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।

     

    বাহানা
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    তোমাকে ভুলে থাকার বাহানা খুঁজতে গেলাম,
    অহরাত্র মনসাগরে উথাল-পাথাল করে-
    অবশেষে দেখলাম আরও বেশী অনেক বেশী মনে গেঁথে গেলে তুমি।

    মনে পড়লো সেদিন ঝিলের ধারে পাশাপাশি বসে কত গল্প!
    হাসির কলরোলে মুখরিত কানা ময়ুরাক্ষীর পাড়,
    মনে পড়লো, জ্যোৎস্না রাতে হাতে হাত চোখে চোখ,
    অনন্ত পথ চলার শপথ, সপ্তপদীর অঙ্গীকার।

    মনে পড়লো অভিমানে বালিশ ভিজিয়ে একলা ঘরের যাপন,
    ঠিক সেই সময় অসীম প্রেমে তোমার আগমন।
    মুখ ফিরিয়ে থাকতে না পেরে,নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ।

    একি! ভুলে থাকার বাহানা খুঁজতে গিয়ে তুমিময় মননে
    হাতড়ে দেখি তুমি ছাড়া কোনো বাহানায় নেই জীবনে,

    বাহানা আমি খুঁজছি তোমাকে ভোলার,
    তোমার তা প্রয়োজন হয়নি কখনও,
    আমাকে ছেড়ে থাকার অভ্যাস রপ্ত করতে সময় লাগে নি একটুও।
    হয়তো রপ্ত করতেই হয়নি, তোমার মন চেয়েছিল এই মুক্তির স্বাদ,
    আমি একা ভোলার বাহানায়, উপেক্ষিত প্রেমের শুনছি আর্তনাদ।।

  • কবিতা

    কবিতা- প্রশ্ন তোমাকে

    প্রশ্ন তোমাকে
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    মনে পড়ে প্রথম দেখার দিনটা?
    না, ছিল না কোনো সাজের ভরম
    ছিল না কোনো কথ্য নাটকীয়তা,
    সোজাসুজি দুজনে দুজনের মুখোমুখি।

    অদ্ভুত রোমাঞ্চ জাগছিল মনে- শরীরে,
    কি অপূর্ব লাগছিল তোমাকে, তোমার কথাগুলো-
    কর্ণকুহর দিয়ে সোজা হৃদয় ছুঁয়েছিল।
    বিগলিত, আপ্লুত আমি ভাসছি, ভেসে চলছি-
    ভালোবাসার উজান স্রোতে।

    তোমার আবদার, তোমার আকুলতা
    আমাকে পাগল করে তুলতো,
    প্রেমের গরবে গরবীনি আমি সদা চঞ্চল কল্লোলিনী,
    বয়ে চলেছি মোহনায় মিলবো বলে।

    হঠাৎ দিনবদলের সাথে তোমার আবেগ স্তিমিত,
    অপেক্ষা আর উপেক্ষার নোঙর বিঁধতে থাকলো আমাকে।
    তোমার গতি অন্য খাতে ব‌ইতে শুরু করলো,
    আমার মোহনায় পৌঁছনো হয়নি এখনো।
    কেমন যেন গন্ডি কেটে দিয়েছে কেউ।

    প্রশ্ন তোমার কাছে, কেন এমন হলো?
    কথা ছিল তুমি বুক পেতে অপেক্ষা করবে আমার,
    আমি ছন্দে গীতিতে ধেয়ে যাবো তোমার দিকে।
    আমাদের মিলনে প্রকৃতি উদ্বেলিত হবে।
    কেটে গেল ছন্দ, স্তব্ধ, নিষ্প্রাণ, নিষ্প্রভ আমি আজও তোমার অপেক্ষায়।
    আসবে কখনও সেই প্রথম প্রহর?

  • কবিতা

    কবিতা- কখনও অবকাশে

    কখনও অবকাশে
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    আজকে আকাশ একটু খানি মেঘলা
    মনের মাঝে সেই আঁধারের আবেশ,
    তোমাকে পেতে একটু অন্যভাবে
    আঁধার ছাপিয়ে পুলকের ছিল রেশ।

    সব কেটে গেল, ঘটলো ছন্দপতন,
    অনেক বাধা আমার কাছেও থাকে,
    সব পার করে তোমাকে পাওয়ার আশায়
    জল ঢেলে দিলে জবাবখানি রেখে।

    কত পথ আমি চলছি এগিয়ে মনে,
    ব্যস্ত সময় তোমার সারাবেলা,
    রাগ-অভিমান সব তো শুধু তোমার
    আমার জন্য উপেক্ষা- অবহেলা!

    আমার জন্য না’সূচক কথকতা
    আমার জন্য অপেক্ষা অবিরত,
    তুমি চলো, আপন মর্জি মতো
    দু’হাত ভ’রে দিচ্ছো শুধুই ক্ষত।

    ভালোবাসা শুধু চায় যে ভালোবাসা
    চেয়েছিলাম শুধুই তোমার সময়,
    সেটুকুই তুমি না দিয়ে ফেরালে রোজ,
    ব্যস্ত জীবন ভরিয়ে রাখুক তোমায়।

    কখনও যদি পাও কোনো অবকাশ,
    একদিন তুমি ভাববে মনে মনে,
    অফুরান এক পাগল প্রেমীর প্রেম,
    বারবার তারে ফিরিয়েছো কেমনে।

    ভালো থাক ভালোবাসায় থাক জীবন
    ভালোবেসে শুধু এটুকুই তো চাওয়া,
    তোমার জন্য সুখের বৃষ্টি ঝরুক
    আমার জন্য থাক শুধু পথ চাওয়া।।

  • কবিতা

    কবিতা- তোমাকে পেয়ে

    তোমাকে পেয়ে,
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    হঠাৎ সেদিন তোমার দেখা পেয়ে
    পাল্টে গেছিল জীবনের বাঁধা ছন্দ,
    হৃদয় চাইছে আপন করে পেতে
    সমাজের ভয়ে কাটে না মনের দ্বন্দ্ব।

    এ লড়াই ছিল অতীব ক্ষণস্থায়ী,
    বাঁধ ভাঙা সেই প্রেমচ্ছাসের কাছে,
    সংস্কারের বেড়াজাল ছিঁড়ে দিয়ে-
    প্রবল বেগে মন ছুটে চলে গেছে।

    তুমি আর আমি পড়েছি জড়িয়ে মনে
    কেউ কি আছে তোমার মতো আপন?
    অভিমান আর অভিযোগ সাথে নিয়ে
    আমরা চলবো আমাদেরই মতন।

    মাঝে মাঝে ভাবি, কোথা ছিলে তুমি
    কোথায় বা আমি ছিলাম?
    ভালোবাসা ঘুচালো যে ব্যবধান
    মন হারিয়ে তোমাকে তাই পেলাম।

    হারাতে চাই না পরমধন ভালোবাসা,
    সব সীমারেখা পার হয়ে যাব তাই,
    মগ্ন মনেতে হারাবো দিকবিদিক।
    তুমি আর আমি দুজনাতে দুজনাই ।

    জীবনে পাওয়া আনমল এ রতন
    যতনে রেখো হৃদমাঝারে তোমার,
    তোমার আসন পাতা জেনে রেখো
    মনের মণিকোঠায় তোমার প্রিয়ার।

  • কবিতা

    কবিতা- সেদিন দুজনে

    সেদিন দু’জনে
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    এমন একটা সকাল দাওনা
    সেদিন যেমন দিয়েছিলে
    চক্ষু খুলে ভোরের আলোয়
    সেই দুজনে পলক ফেলে-
    দেখেছিলাম হৃদয়তটের
    সেই সে গহীন অতল সীমা
    তোমার আমি তোমার মাঝে
    এক শরীর এক আত্মা।

    আর একটা সেই দিন দাওনা
    সেদিন যেমন দিয়েছিলে–
    ফাগুন-আগুন এনেছিল
    তপ্ত দুপুর সেই সেকালে।
    পক্ষীরাজে উড়িয়ে নিয়ে
    নিয়ে গেলে সেই সুদূরে,
    আবার কখন পৌঁছে গেলে
    আমার আপন সেই কুটিরে।

    এমন একটা গোধূলি দেবে?
    সেদিন যেমন দিয়েছিলে,
    সিঁদুর রাঙা লালাভ আভায়
    আমায় তুমি দেখেছিলে।
    পাশাপাশি, নিস্পলকে
    নদীর পাড়ে দুই জনেতে,
    রক্তের সেই ঢেউয়ের আওয়াজ
    এ মন থেকে ঐ মনেতে।

    আর‌ও একটা রাত দাওনা
    সেদিন যেমন দিয়েছিলে,
    সোহাগ মাখা, আদর আবেশ
    শরীর জুড়ে ছড়িয়ে দিলে।
    হিমেল হাওয়ার চেয়েও হিমেল
    তোমার ছোঁয়ায় হয়েছিলেম।
    লজ্জাবতীর মতোই সেদিন
    পরশে তোমার গুটিয়ে গেলেম।

    ধুকপুক ধুক করছে হিয়া
    মনের ভিতর চলছে হাপর,
    আগুন সে তো নিভবে তখন
    বুঝবে ভালোবাসার বহর।
    আবার তুমি কাছে এসো
    শুরু হোক সেই পাগলামি,
    আমার প্রেমীর প্রেমের তোড়ে
    স্বপ্ন ভেলায় ভাসবো আমি

You cannot copy content of this page