-
কবিতা- নিজেকে পাই
নিজেকে পাই
– পিকন দেকখনো কখনো আমি যেন,
গাছের মাঝে নিজেকে পাই!
নীরব হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে,
সকলের জন্য করেই যাই।
পাতার ভাঁজে মিষ্টি বাতাস,
ছড়িয়ে দিয়েও পরিবেশে।
নিত্য কেমন কুঠার ঘায়ে!
আঘাত পেয়েও,থাকি হেসে।
সকলে কেবলি ব্যস্ত এখন,
এগিয়ে চলেছে স্বার্থ নিয়ে!
গাছের মতোই নিঃস্বার্থ ভাবে,
একাকী আছি আঁকড়িয়ে।
নিজের কাছে নিজেই হেরে,
ঢেকে রেখেছি দুঃখগুলি!
গাছের মতোই আমার জীবন,
যখন যেদিকে-সেদিকে চলি।
হঠাৎ আমার ভাবনা ভেঙে,
হৃদয় মাঝে কড়া নাড়ে।
তখন বুঝি গাছগুলো যে,
কমছে শুধুই কেমন হারে। -
কবিতা- বিরহের বসন্ত
বিরহের বসন্ত
-পিকন দেআমার ঘরে লাগেনা ভাই,
বসন্তের মিষ্টি হাওয়া।।
তোমার দেওয়া নিঠুর ব্যথা!
হয়নি রওয়া সওয়া।।
যখন তোমার পলাশ গাছে,
পলাশ কুড়ি আসে।।
মনের করুণ দশা দেখে,
চোখটি জলে ভাসে।।
বলতে গিয়েও মুখ বেঁধেছে,
সিঁদুর-শাঁখা-পলা।।
একসাথে আর তোমার সাথে,
হয়নি পথটি চলা।।
হৃদয়ে যখন ভাঙ্গন ধরে,
লাগে না কিছুই ভালো।।
আমার ঘরেতে জ্বলবে কবে!
ঐ ছয়টা ঋতুর আলো।।
আশা আজ ছেড়েছি সব,
বিরহের সুরে থাকি একা !
হারিয়ে গেছো অনেক দূরে,
আর হবেনা কখনো দেখা।। -
কবিতা- প্রিয়তমার জন্মদিন
প্রিয়তমার জন্মদিন
– পিকন দেজীবনে এক নতুন বাঁচার রসদ পেয়েছিলাম,
যেদিন তুমি আমাকে শুধু নিজের করেছিলে।
সীমাহীন ভালোবাসা দিয়ে জড়িয়ে রাখলে,
সব না পাওয়াগুলো নিমেষে গেছিলাম ভুলে।
তোমার সেই প্রতিদিনের দুষ্টুমি করার ছল,
চোখের নিমেষে ইচ্ছেমতো সব করেছো শেষ।
সে এক অন্ধকারাচ্ছন্ন কালো দমকা বাতাস,
তবে কখনোই কাটবে না তোমার স্মৃতির রেশ।
আমায় আজ অনেক দূরে তুমি করেছো জানি,
থাক সেসব, তোমার দুঃখ-কষ্ট গুলি নিপাত যাক।
আনন্দঘন মুহূর্তরা যেন শুধু তোমার থাকুক,
মনখারাপেরা জীবন থেকে চিরতরে ছুটি পাক।
ঐ নীল রাতের আকাশে তুমি তাকিয়ে দেখো,
শুভেচ্ছা আমার হয়ে সাজিয়েছে তারার মালা।
সারাটি জীবন এভাবেই তোমার সুখময় হোক,
হোক সুন্দর তোমার আগামী দিনের পথ চলা।
এভাবেই সংসার ভরে থাকুক তোমার সবসময়,
হয়ে উঠুক মধুরতাময় উজ্জ্বল আর রঙিন।
দূর থেকে রইলো তোমায় অনেক শুভকামনা,
ভালো থেকো তুমি জানাই তোমার শুভ জন্মদিন। -
কবিতা- তুমি যদি জানতে
তুমি যদি জানতে
– পিকন দেধরে ছিলে তুমি যে হাত ভালোবাসবে বলে,
বুঝিনি এভাবে ছেড়ে চলে যাবে ভুলভ্রান্তে।
কত শত টুকরো টুকরো করেছিলে হৃদয়টার,
চাওনি সেদিন আমার কাছে একবারও জানতে।
কত বেদনার ঝড় তুলে গেছিলে সেদিন প্রাণে,
আজ জানি বলে কিছু হবে না, চাইবে না মানতে।।
বুকের পিঞ্জিরার কতটা গভীরে রয়েছ যে তুমি,
আমার ভালবাসাখানি একবার তুমি যদি জানতে।
পারতে না কখনো, পারতে না তুমি দূরে গিয়ে,
একমুহুর্ত এভাবে স্বার্থপরতায় ভালো থাকতে।
কতটা যে ভালোবেসেছিলাম আমি তোমায়,
মন থেকে কথাটি একবার তুমি যদি জানতে।
হাফ আফসোস, যদি দেখতে চোখের সামনে,
হয়তো নিশ্চয়ই আমার হাতটি টেনে আনতে।
কষ্টের অথৈ-সাগরে আমি হাবুডুবু খেতে খেতে,
তলানীতে আজ, সেই কথাটি তুমি যদি জানতে।।
ভুল-ত্রুটি, সব ভুলে আলোর রেখা সঙ্গে নিয়ে,
আমার কাছে হয়তো আবারো ফিরে আসতে।
আশাগুলো নিরাশা হয়ে একাকী “আবর্তমান”,
অন্ধকারে ডুবেই আছি তা তুমি যদি জানতে।
তোমায় ছাড়া দিনগুলি কাটিয়েছি আমি কষ্টে,
প্রতিমুহূর্তে দম বন্ধ হয়ে আসে একাকী একান্তে।
কতটা নিস্বার্থ-নির্লজ্জ ভাবে, ভালোবেসেছিলাম,
আফসোস তুমি যদি একটিবার আমায় জানতে। -
কবিতা- আঘাত
আঘাত
– পিকন দেযতই কাছে চেয়েছি তোমায়,
দূরে যেতে করেছো আদেশ।।
আঘাতে আঘাতে হয়েছি আজ,
আমি যেন পুরোপুরি শেষ।।
তোমার দেওয়া নির্মম আঘাতে,
পারিনি আমি তোমাকে ভুলতে।।
তোমার ভালো সবসময় চেয়েও,
চলেছি আমি আজ মরতে।।
সরল মনকে বোঝোনি তুমি,
নাকি বুঝেও বুঝতে চাওনি কোনদিনো।।
আমি তো শুধু তোমারি ছিলাম,আছি-
সে কথাটি হয়তো জানো এখনো।।
প্রতিটা মুহূর্ত পাশে যেন থাকি,
এভাবেই তো ভালোবাসতে বলেছিলে।।
সবটাই হয়তো এখন একতরফায়,
এক সময় তুমিও তো ভালোবেসেছিলে।।
আঘাতগুলো সযত্নে সয়ে নিয়েছি,
তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নয়।।
প্রত্যাঘাত ভালোবাসা হতে পারেনা,
তুমি এর জন্য পেয়ো না কোন ভয়।।
শুধু তুমি একা নয় সবাই জানে,
আমার সবটুকু জড়িয়ে তোমারি নাম।।
কিভাবে সেই মনকে আঘাত করে,
নিখাদ ভালোবাসার দিলে এমন দাম।। -
কবিতা- ফিরে চাওয়া
ফিরে চাওয়া
-পিকন দেতুমি যদি শুধু আমার পাশে থাকো,
মানবো না আমি কোনো সমাজের বাঁধ।
দু’টি হৃদয় যদি পরস্পরে মিলে যায়,
জানি ভালোবাসায় নেই কোনো অপরাধ।
যদি আমাকে মন থেকে মেনে নিয়ে,
আবারো নাও তুমি তোমার হৃদয়ে তুলে।
দু-হাত বাড়িয়ে তোমাকে করে নেবো আপন,আসো যদি আমার কাছে কখনো পথ ভুলে।
আবারো আগলে ধরে বাঁচবো তোমায়,
বোঝাপড়ায় মিটিয়ে নেবো জমা যত রাগ।
তোমাকে ভালোবেসে ভুলে যাবো সব,
মোর যত আছে সুখ-দুঃখের চাপা দাগ।
আসবে যখন কাছে দেখাবো তোমায়,
আমার হৃদয়ের জমা সব দ-ুখানি খুলে।
আমার সবটুকু ভালোবাসা যা আছে,
তোমার জন্যই রেখেছি আজও আমি তুলে।
তুমিই ছিলে সব আমার,আজও আছো,
জেনে রাখো বলে দিলাম তোমায় স্পষ্ট।
ভুল বুঝে সেদিন দূরে করেছিলে ঠিক ওই,
তবে জানতে চাওনি দিয়েছিলে কতটা কষ্ট।। -
কবিতা- শুধুই একা
শুধুই একা
-পিকন দেআমার একা জীবন এই বেশ-
কোথাও নেই কোন আলো(!)
ছায়া-ছায়া,সব আবছায়া-
এতেই তো আছি বেশ ভালো।।
যাকে খুঁজে ফেরে দিনরাত,
কোথাও নেই তার দেখা।
আনমনে শুধু মন বিবাগী(!)
সবই যেন কালো মেঘে ঢাকা।।
সে যে শুধু শূন্যতা দিয়ে গেছে,
স্বপ্নে তার আজও ছায়া ভাসে।
তারার মতো জ্বলতে থাকে-
যেন মনে হয় আছে আশেপাশে।।
কিছু পরে দূর আকাশে দেখি,
বিন্দুমাত্র নেই কোন আলো।
বুঝেছিলাম নেই কোথাও কেও,
তবু মনে তারই ছোঁয়া রেখে গেলো।।
সেই দিনগুলো সব মনে ভাসে-
দুজনাতে মিলে হত কত কথা।
সোনালী দিন ছিল,দিপালী রাত-
শেষে রয়ে গেল একাকী নীরবতা।।
মিথ্যে মায়ায় আপোশ করে-
আমার আর হবে না থাকা।
জীবন শেষে শেষ দিনে তেও,
জানি যেতেই হবে শুধুই একা।। -
কবিতা- ক্ষুদ্র মাত্র
ক্ষুদ্র মাত্র
– পিকন দেআমি একজন ক্ষুদ্র মাত্র’
বড় বড় সব লেখকের মাঝে।
তবে একেবারে তুচ্ছ নয়,
এই বৃহৎ মানব সমাজে।।
আমাকে নিয়ে হাস্যকৌতুক-
করছে জানি আবার অনেকেই!
ক্ষুদ্রের মাঝেই ‘বৃহৎ’ হয়,
সেসব আবার তাদের জানা নেই।।
শব্দের পাশে শব্দ সাজিয়ে-
চলেছি ধীরে ধীরে এগিয়ে,
রাস্তা জানি অনেক দূরে-
তবে আর যাবোনা পিছিয়ে।।
নতুন নতুন লেখা লিখে,
করতে চাই নিজের”পরিচয়”
পাঠকেরা সব পাঠ করে,
আমাকে গ্রহণ করবে নিশ্চয়।।
ক্ষুদ্র এই লেখা গুলো!
মাঝে মধ্যে পড়ে দেখো।
অল্প কিছু সময় দিয়ে,
বন্ধুরা সব পাশে থেকো।। -
কবিতা- “কলম”
কলম
-পিকন দে
কলমেরা চলছে বলেই ভাষার এত তীব্রতা,
কলমেরাই মুছে দিয়েছে সভ্যতার মূর্খতা।।
কলম লিখেই চলত পূর্বে যত প্রেম আলাপ-
সেই কলমেই কবিতায় দুঃখ প্রকাশের সংলাপ!!
বিদ্রোহীরা এগিয়ে সুর দিয়ে মিছিলের দলে”
কলমেরা বড্ড সচেতন বলে,কবিতায় চলে।।
কবিতার মাধ্যমে কবি বুনে চলে কত শত দুঃখ(!)
শুধু কলমেরাই থেকে যায় নিত্যদিনের সাক্ষ্য।।
এই কলমের কালিতে আছে গো অনেক শক্তি,
দোষী কে বিচারক দেয় শাস্তি,নির্দোষ পাই মুক্তি।।
কলম দিয়ে কোমল শিশু বর্ণমালা লেখে,
প্রাপ্ত হলে সেই কলমেই আয় করতে শেখে।।
কলমের লেখনীতে ঝরে পরে নিরাবতার বৃষ্টি,
এ কলম চলবে,এভাবেই নবপ্রজন্মের হবে সৃষ্টি।।
কলমে লিখেই কবিতা,তৈরি শত শত নতুন কবি-
এই কলমের জোরেই নোবেল প্রাপ্ত বিশ্বকবি রবি।। -
এক পশলা সুখ
এক পশলা সুখ
-পিকন দেরাখবে যতই দূরে আমায়,
থাকবো ততই কাছে।।
স্মৃতির ধুলো উড়বে,
মনের আনাচে কানাচে।।
তোমার বুকের আগল বন্ধ করে দাও,
খিলও এঁটে দাও দোরে।।
স্বপ্ন হয়েই আসবো আমি,
তোমার ঘুমের ঘোরে।।
আনমনে খোপা তোমার,
পড়বে যখন খুলে।।
স্মৃতিকথার রূপ ধরেই,
বসবো তোমার চুলে।।
ভুলতে পারো পরিচয়,
ভুলতে পারো সেই মুখ।।
তবু হৃদয়ে তোমার থাকবো হয়ে,
চিন চিনে এক পশলা সুখ।।