-
আত্মার আকুতি
আত্মার আকুতি
-প্রদীপ মণ্ডলঠিক কতবার যে অগ্নিস্নান হয়েছে
এখন তার হদিস নেই, রাখাটা জরুরি ছিল
তবু উপায় নেই বলেই পুড়তে এ’ত ভয়!
আমাকে একবার জাতিস্মর কর হে ঈশ্বর….আমার প্রথম জন্মের বাবা-মা কেমন ছিল!
স্নেহের বাঁধনে আলোতে আবদারে, বন্ধু সজন
তারা এখন কোথায়? কেমন আছে তারা?
আর কি কখনো হবে দেখা! চিনবো কেমন করে!!লোডশেডিং হলে প্রান হাঁসফাঁস অথচো
কতবার যে কবরের অন্ধকারে বিলিন হয়েছি
বন্দি দশায় কেটেছে কত অগুন্তি কাল—
কে দেবে বলে জন্ম জন্মান্তরের হাহাকার…কেন কেঁদে ওঠে প্রাণ কথা দেওয়া ছিল কাকে?
কেন বিষন্নতায় ভরে ওঠে! কার সাথে মিলবে বলে?
কে বসে গুমরে কাঁদে মনের গভীরে অচেতনে
সব অগোছালো হয়ে ওঠে তমশাচ্ছন্ন অব্যক্ত ঘোরে।আমার কত জন্মের বর্বরতা মাড়িয়ে মাড়িয়ে
কত যোনি পার করে অনন্তকালের যাত্রা পথে এগিয়ে
রাজপ্রাসাদ হতে পথের ধুলোয় অসভ্য হতে সভ্যতায়
চক্রবুহ্য আবর্তে বৈচিত্র্যময় ঘুর্ণি পাক হায়রে জীবন…..হে মৃত্যু! তোমাতে ও নেই পরিত্রাণ এ কেমন মায়া
মৃত্যুঞ্জয়ী বিনাশ হীন ঐ আত্মার উপলব্ধি দাও-সেই চোখ দাও
হে মৃত্যু……….আমাকে বরণ কর আবার…
হে আগুন….আমাকে নিস্পাপ কর, কলুষ মুক্ত কর আবার….এই মাটিতে মিশে আছে আমার কত জন্মের ধ্বংসাবশেষ
বায়ুমণ্ডল জুড়ে আমার আপনজনদের কান্নার আর্তি
আমার প্রথম জাতীয় পতাকা কি ছিল?
প্রশ্ন করবো কাকে ? হে ঈশ্বর………হে করুনাময়….. -
অযাচিত
অযাচিত
-প্রদীপ মণ্ডলএকটা মন চায় একা একা
গাছের ছায়া আর শাড়ির আঁচলএকান্তে একটা শরীরী মত্ততা
দুচোখ ভরা ঢেউ প্রতিদিন
চৈতালী তোমার উষ্ণতা ছোঁয়
ঘামে ভেজা শরীরের লাবন্য আর গন্ধ।মাঝে মাঝে অস্থিরতা জাগে—
দিনেদুপুরে দাঁড়কাক, জনপথ ট্রেন-বাস
নিঝুম রাত চাঁদের আলো নীল স্বপ্ন
কোলাজে নেমে আসে শ্রাবনী মায়া।একটা প্রেম প্রেম গন্ধ ছড়াচ্ছে
সারিসারি গাছ পাশাপাশি বসে
রংধনু ক্রমশ বিবর্ণ পথ আঁকে। -
এই বেশ ভালো আছি
এই বেশ ভালো আছি
-প্রদীপ মণ্ডলএকটা মেঘ ভেসে যায়
একটা রাত
একটা কলঙ্ক দাগ দেয় কালো আঁচড়
খুলে যায় নষ্ট সামাজিকতা
মেঘ বৃষ্টি ঝরায় ঝরিয়ে যায়
তবু দাগ থেকে যায়, থেকেই যায়…..বৃষ্টি ঝরে অঝোর ধারায়
অন্ধকার আরো অনেক নিবিড় হয়
সেই যে সন্ধ্যা ছুঁয়ে ছিল পাখির কলকাকলিতে
মনের শুদ্ধতা বেয়ে
তার হদিস এখন অবান্তর
নিলাম হচ্ছে হাটে বাজারে রাস্তার মোড়েতবু তো ফাল্গুন আগুন রাঙিয়ে ধরে
হয়তোবা এভাবেই বেশ ভালো আছি, হয়তো….. -
ভালোবাসার বয়স হল
ভালোবাসার বয়স হল
-প্রদীপ মণ্ডল“শুনতে কি পাও বেদনা ক্লিষ্ট হার্ট বিট?
ধুকপুক ধুকপুক করে বেড়েই চলেছে—
নিঃস্তব্ধ রাত দাঁড়িয়ে চোখের পাতা,
আড়মোড়া ভাঙ্গে নিঃসঙ্গ অস্থিরতা।তোমার কান্না আমি শুনেছি, নিঃশব্দ চোখের জল
চাপা বেদনার কানায় কানায় পূর্ণ হয় নির্নেয় ফল।
তোমার যন্ত্রণা জেগে ওঠে আমার বুক
তুমি হয়তো শুনতে পাওনা সে আওয়াজ
অথবা আমারি মত পড়ে থাকো অসাড়!আচ্ছা, আমাদের ভালোবাসা কি আজ অভ্যাস?
শুধুই কি দিন যাপনের খেলা?
একটু একটু করে কমে যায় অমূল্য সময়—
কমে যায় তোমার আমার ঘনত্ব, সে আকুলতা।
আমার স্পর্শের প্রতি তোমার সে আকুলতা
আজকাল আর ঠাওর করতে পারিনা!
কি জানি হয়তো আমার ভ্রম, তবু মনে হয় বারবার।যখন বারবার ডেকেও তোমার সাড়া পাইনা!
তখন আমার অসাড় কাতর মনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে
চলে যায়, ঠিক কোথায় যে নিয়ে যায় আমিও জানিনা।
তুমি তো দেখো না, হয়তো জানতে ও পারো না!
এমনি একদিন যদি মনটা আর না ফেরে, যদি পথ হারিয়ে ফেলে।সকালে উঠে হয়তো দেখবে শরীর ঠিক আগের মতই আছে
কিন্তু তোমার- একান্ত তোমার ছিল যে মন,
সে আর নেই, এক আনকোরা মনের সম্মুখীন।
কি করবে তখন?
আর তোমার সেই চেনা আপন মন, হয়তো তখন
পথে পথে ঘুরে এ গলি সে গলি ঘুরে ঘুরে দিক ভ্রান্ত
খুদার্ত অসহায়ের মতো কেঁদে কেঁদে ফিরবে আস্তাকুঁড়ে।
সে কান্না কি শুনতে পাবে তুমি?তুমি তো কাঁদতে পারো, তাই বুঝি ভিজিয়ে নিলে হৃদয়
গলে গেলো তোমার ব্যথা, চোখে নামলো ঘুম।কিন্তু আমি—
আমি যে কাঁদতে পারি না, তাই দ্বিগুণ জ্বালায়
ছটফট করতে থাকি-ছটফট করতে থাকি, নিঃস্তব্ধ নিশুতি রাতে।
কুরে কুরে খায় মননে, আমার অভ্যাস গ্রস্থ ভালোবাসা। -
শূন্য এ বুকে
শূন্য এ বুকে
-প্রদীপ মণ্ডলবদলে গেছে সময়, বদলে গেছে মানুষ গুলোসচল প্রকৃতির নিয়মে।বদলে তো যাব’ই, তুই আমি— ওরাও—সব সময়ের খেলা,দিনের পর রাত, রাতের পর দিন…সময় সর্ব শক্তিমানসব বদলে দিয়ে যাবে জানি একদিনযদি প্রশ্নরা ভীড় করে,একটা গোধূলী বিকেল তুলে রাখিসসাজানো মনের ঝকঝকে সোকেশে।তুই তো বলিসনা তাই প্রশ্নরা ও নিঃশ্চুপ!কোনদিন ধুমকি লাগা বুকে হাত রাখিস—সতত বেদনার মর্মর ধ্বনি তোকে বিচলিত করে তুলবেআকাশের শূণ্যতা সেদিন ঢাকতে পারবেনা।তোকে ধরে রাখতে তো পারব না!সে স্পর্ধা কি আমার,সেটাই হয়তো কঠিন নিয়তি!এমনি করে যাই, অবসাদের ওপার—তারো—নির্বিশেষে যদি মেঘ জমে, যদি ঝরে পড়ে,সে বর্ষণে ভিজিয়ে নেব বুক, ভিজিয়ে নেব……ভালোবাসি’ তাই উড়িয়ে দিলেম-—খাঁচার না রেখে!!