-
ওরা কারা
ওরা কারা
-প্রবীর রায়পরণে ছেড়া বস্ত্র,আলুথালু মাথার চুল
পায়ে জুতো নেই,মুখ ভর্তি গোঁফদাড়ি
মুখে কিসব যাতা বলছে,বিশ্রী তার সাজ
পথে পথে ঘুরছে-পথটাই তাদের বাসভুঁই
আত্মীয়স্বজন,পিতামাতা সকলে পর করেছে
পরিচয় দিতে ভয় পাই সমাজের কাছে,সে-কে!
ডাস্টবিন খাবার আর নলকূপ জল নিত্য সঙ্গী
কেউ ঢিল ছুড়ছে,কেউ বাজে ভাষায় গালি দিচ্ছে
সবাই দেখছে তার পাগলামি আর মজাও লুটছে
কে সে,কোথা থেকে সে এলো,কি তার পরিচয়
কেউ এগিয়ে এলোনা,প্রতিবাদহীন হাত সবগুলো
ছেলে হলে রেহাই আর মেয়ে হলে ধর্ষণ চক্র রবে
তাদের মধ্যে কেউ হচ্ছে মা, কারোবা রক্তাক্ত লাশ
ওরা মরলে কিচ্ছুটি হয়না,কারণ ওদের কেউই নেই
না আছে সমাজ, না আছে প্রশাসন, না আছে মানুষ
তবে তাদের বেঁচে থেকে কি লাভ, মৃত্যুদণ্ড দাও ভারত পিতা।। -
জাগো হে মানব
জাগো হে মানব
-প্রবীর রায়মোদের গরব মোদের ভারত,বলতে পাইনা ভয়
চলছে আজো পুরুষ রাজ,বলছো আবার জয়!
নির্লজ্জ রীতিনীতি,অপরাধ ও অপরাধী
সে ফাঁদে বন্দী আজো নারী,ভ্রূণকে করো আধি!নেইতো রেহাই কারোর কোথাও,জোরদার কারবার
ব্যস্ত তোমরা টেলিভিশনে মাতৃত্বের হার!
ধিককার আজ মানুষ বলতে,পরিচয়টাও তুচ্ছ!
সইছে ওরা-সইবেই তো, শিরচ্ছেদ এক গুচ্ছ!
নারীর ব্যথা হৃদে-হাড়ে,বাঁচাও গিয়ে তাকে
নিজের ভালোই মত্ত তোমরা,দূর থেকে সে ডাকে
তোমার দেশের কত যে ঘরে-চলছে দুঃশাসন
খাবার নয় অত্যাচার-দিয়েই চলেছে রাবণ!
খোঁজ কি নিয়েছো-লড়েছো তাদের জন্য!
পরিবর্তন নেই-করবোনা আইন গণ্য!
শুনছো সবি কেন মিছে ভান,চাও পরিবর্তন!
করোনি প্রতিবাদ সাহস করে-ভেঙেছে লাজে দরপণ!
তাই চাইনা-পরিবর্তন,চলছে-চলুক ভারী মজা!
জাগো হে মানব আঁখি খোলো,হস্তে ধরো ধ্বজা!ওরা পাক স্বাধীনতা-নিজ অধিকার
বাঁচুক ওরাও ভেবোনা নিজেকে হার।। -
শিকারি যখন শিকার
শিকারি যখন শিকার
– প্রবীর রায়পূর্বে মানুষ করেছে শিকার সকল জীবকে সদাই
ইচ্ছেমতন হুকুম চালাই হৃদয় কারোর নাই
বাঘ- বকরীর প্যাঁচের খেলাই বাঘ-ই বন্দী আজ
হচ্ছে পতন ব্যাধির শাসন মরণ দ্বার-এ বাজ
ধোঁয়ার দূষণ ভাঙছে বাঁধন যন্ত্রণাময় প্রাণ
গুটখা’ সেবন কারছে আপন বিপদ ঘনায় ঘ্রাণ
বদল ঋতুর অসুস্থ শিশু নিমোনিয়া’ ঝড় ভাসে
ধূমপান আজ সকল মুখ-এ আয়ুর শত্রু পাশে
প্রতিটি শ্বাস-এ বিষ পেটে যায় ছেনির আঘাত বুকে
মুনাফা’ লোভ-এ অজ্ঞানী দেয় সরকার বেঁচে সুখে
কোটি-কোটি ভ্রূণ মরছে গর্ভে জন্ম নেবার আগে
বলছে লোক-এ পাপ-এর সাজা দেবতাও ভয়ে জাগে
আসল কারণ বুঝলোনা কেউ দুষলো সতীত্বকে
হিংস্র মানব তোমরা দানব পুষছো জীবাণু -কে।। -
নিথর দেহ ওঠো
নিথর দেহ ওঠো
– প্রবীর রায়ওঠো জাগো নিথর দেহ!
বাল্যতেই ধরিলো মোহ!
গ্লানি ভুলে মুক্ত করো- বদ্ধ দ্বার!
মুছে ফেলে দাও,হিয়ার সব অহংকার!
ঘুমিয়ে আছো প্রতিবাদ ছেড়ে!
দুর্গম ওই পথ ফেলে!
কত ঘুমোবে-অলস কায়া!
দাওনা প্রেমের বাতি জ্বেলে!
রুদ্ধ কেন তোমার বাক?
স্তব্ধ কেন সাহসী কণ্ঠ?
ক্রুদ্ধ কেন তব রক্ত?
হাতটি বাড়াও হয়ে ভক্ত!
বাঁচুক ওরা শির তুলে!
হকের জন্য লড়ুক সদাই!
তুমি যোগাবে সাহস সদা-
দুর্বলদের তুমিই গদা।। -
আমি বেশ্যার ছেলে
আমি বেশ্যার ছেলে
-প্রবীর রায়মাগো,সকলে বলে বেশ্যার ছেলে! বেশ্যা কারে কয়?
বল’না মাগো-বাবা কোথায়? কি আমার পিতৃপরিচয়?মা কেঁদে কয়-শোনরে বাছা! তোর নেই কোনো দোষ!
বলছি তবে শোন! তোকে ঘিরে কেন সমাজের এতই রোষ?
ছোট্ট বেলাই সবই হারালাম,আপন করিলো পর!
কেড়ে নিলো আমার মাথার ছাদ! পথটা হইলো ঘর!
ভদ্র সমাজের মুখোশে ঢাকা, আসিলো এক নারী;
খাবারও দেবে থাকতেও দেবে, চড়লাম তাই গাড়ি;
সেখানে গিয়ে বেঁচে দিলো,ওই ব্যবসিকদের হাতে!
চললো ধর্ষণ উঁচু সমাজের, রক্ত ঝরা রাতে!
সভ্যরা এসে ছদ্মবেশে,শিশুকে করিলো ‘মা’;
পালিয়ে এলাম নরক ছেড়ে, ঢাকলাম নিজ গা;
জন্ম দিলাম তোকে আমি, সহ্য করলাম আঘাত!
কুমারী মেয়ের মা হওয়াতে, নড়লো সমাজের ছাদ!
মাগো আমায় ক্ষমা করে দাও, বলিবোনা আর কভু!
সমাজ কি বলে বলুক আমায়, তুমি যে আমার প্রভু।। -
সেকাল-একাল
সেকাল-একাল
প্রবীর রায়ভাইরে আমার-আমার সময়-যেতাম হেঁটে ইস্কুল
এখন তোরা-যাস যে গাড়ি-মন ভর্তি মশগুল।আমরা ছিলাম-বাংলায় মত্ত-হইনি কভু নারাজ
তব মুখে ইংরেজ বুলি-করিস তোরাই রাজ।
ছিল তখন পলি সাহারা-কেউবা শূন্য হাতল
এখন দেখি-স্টাইলি ব্যাগ-রঙিন কাঁধ চা।
তিন বা পাঁচের -দিস্তা খাতায়- সর্ব বিষয় খেলে
এখন সবই ভিন্ন ভিন্ন-শেষ না হতেই ফেলে।
এক মাষ্টারেই- ব্রহ্মজ্ঞান-তাতেই মস্তক উঁচু
এখন দেখি-আলাদা রঙ্গ-খাতা ভর্তি কচু।
তখন মোরা খেলেছি মেলা-শেষ নেই তার বেলা
এখন সবাই গেজেট বন্দী-ব্যস্ত জীব একেলা।
টিফিনে মোরা বাড়ি যেতাম-দল বেঁধে একসাথে
এখন সবার পকেট নাচে-বাহারি বাইক পশ্চাতে।
সে সময়ে জ্ঞানের লড়াই-এখন নাম্বারটাই ভরসা
প্রতিযোগিতায়-সব বিপরীত-গ্রীষ্ম আর বর্ষা।
তখন ছিলো-মাষ্টার মশাই-এখন বদলে স্যর
তবু যেন পিছিয়েই তোরা-প্রতি পদক্ষেপ হার।। -
বাবা যখন বন্ধু
বাবা যখন বন্ধু
-প্রবীর রায়বাবা তুমি আজ আর বাবা নয় শুধু
মাতা-পিতা-ভাই-বোন,আসলে যে বন্ধু
বিপদকালে তোমারে বিনে,ভয় লাগে সব পথ
আসান করো মুস্কিল সব,সারথি তুমিই-রথ
সাহারা তুমি বেসাহারার, সব থেকে প্রিয়জন
খেলার সাথী-রাতের আলো,বহু অমূল্য ধন
যেখানে যেমন-সেখানে তেমন,তুমি-তুলনাহীন
অন্ধের যেমন-লাঠিই নয়ন,শিশুর তুমিই জমিন
তোমার শিক্ষা গাঁথি চরিত্রে,গড় আমায় মানুষ
হিংস্র নয়-নম্র স্বভাব,শেখাও জ্ঞানের হুঁশ
কেমনে টেকে নিজ পরিবার-কেমনে টেকে বিশ্ব
নিজের রক্ত-ঘাম করে দাও,শিশুর পালনে কৃচ্ছ্র
নিজ সুখ কভু-চাওনা তুমি,যা করো সব মোদের
আমার লক্ষ্য পূরণে তুমি-সঠিক দ্বীপ হ্রদের
তোমার শাসন- স্নেহের বাঁধন,ধমকে আমার ভাগ্য
তাতেই আমি-সফল আজকে,তুমিই আমার ভাগ্য।। -
ধিক্কার
ধিক্কার
-প্রবীর রায়স্বাধীন ক্ষণে দ্বন্দ্বে লিপ্ত আমার ভারত নবীন
যুদ্ধের নামে ভ্রান্তি বিভ্রাট ভয়ঙ্কর আজ সুদিন।
সাইবার সিস্টেম অস্ত্র প্রথম কোটি মানুষ সামিল
দুষ্কৃতীরা বিষ ঢেলে দেয় গ্রুপে গ্রুপে কাতিল।
উসকে দিয়ে হানছে আঘাত করছে বাজিমাত
আমার দেশ আজ যে ক্ষত মাথায় দ্রোহীর হাত।
মরছে-মারছে দক্ষ সেনা আব্রু বাঁচাতে সবাই
আমরাই পালছি আততায়ী রাখছি গোপন নির্ভয়।
সবার রক্তে ভারত গাঁথা আমরাই গুণ্ডা বদমাশ
ভুলছি কেন ? ভারত মাযে সবার প্রিয় নীড়-বাস।
হচ্ছি বড় মায়ের কোলে গাইছি পরদেশ গান
ছি-ছি ধিক্কার নিজেকে -নিজেই বলতে ভারত প্রাণ।