-
কবিতা- কালো
কালো
-সঙ্কর্ষণসিন্দুকে তালা ওজনে যতো ভারী হয় ততোই মুখ ব্যাদান করতে থাকে সাক্ষাতের ফাটল। ফাটলে মুখ রাখলে যে পাঁচিলটি অনুভূত হয় তা শিরায় এক প্রবল তারুণ্য নিয়ে আসে নেশার মতো।
শেষ যৌবনের চাইতেও বড়ো এই অযাচিত প্রাচুর্য বাক্যালাপে প্রবলভাবে পরাঙ্মুখ হয়, কিয়ৎ পূর্বেও যা নিতান্তই অপরিচিত ছিলো। আমরা বুঝতে শিখি
কেউ কারোর হাতের নই, কারোর আপন কারো’র নয়।খেলার সাথীটি নারী হলে প্রাচীনত্ব বৃদ্ধির সাথেই সে’ও নতুন রূপে আবিষ্কৃত হয়। অথচ এই উৎখননের প্রবল বিরোধী তার সহোদরের চোখে সে নিতান্তই মায়া পড়া বোঝা। বিভীষণ ব্যক্তিগত।
সকলই আপেক্ষিক, তবু এ ঘোরের তীব্রতা থেকে আমরা বাইরে আসিনা। এই যে বিস্তৃত জিজ্ঞাসানদী প্রশ্ন করে দুটি পথ দুটি পারে বিস্তৃত কিনা, জানিনা। স্রোতে ভেসে যাই মুক্ত হতে।
আলো বিভিন্ন দিক থেকে ছুটে আসলে আমরা অন্ধ হয়ে যাই, আশঙ্কা হাত বাড়ায়। এ মূলতঃ এক বিদগ্ধ অসুখ, বিপুল বেগে ঠেলে ফেলে দেয় অতল খাদে। এহেন আলস্যকে কী নাম দেবো? বিশ্বাস?
ভরসা আসলে এক দিগন্তবিস্তৃত তমিস্রার প্রতিরূপ। শৈশব অসুস্থ হলেও তাই মাকেই আঁকড়ে ধরে। জানে তিনিই সেই সহজপ্রাপ্য উজ্জ্বলতমা দিশা। বিশ্বাস করে তিনিই বৈদ্যশ্রেষ্ঠা।
এক্ষেত্রে ফাটল স্বয়ং সিন্দুকে তালাবন্ধ থাকে।
-
কবিতা- বরাভয়
বরাভয়
-সঙ্কর্ষণওরা সব বাইরে থেকে দেখছে তবু
এখন আর হাঁকডাকে না মন্ত্রী গবু
আমরাও ভুল করিনি ঠিকটা কোথায়?জল এলে পা ধুয়ে যায় সত্যি কথা
যারা ঢেউ ছোট্টো শিশু নেই ক্ষমতা
দিনেতেও নামছে আঁধার অস্ত কে যায়?রাজাদের দরজাতে যেই সিঙ্গী ডাকে
কে যেন এই বাড়ি নয় বলতে থাকে
মনে হয় কোনটা মানুষ কোনটা পশু?হঠাৎই চুপ করে যায় ঘাসজমিরা
ঘড়ি যায় উল্টোপথের আলতামিরা
কী কাহন বুনলে মায়ায় বিশ্ববসু?খেলাঘর সব কেড়ে নেয় আর ছেলেরা
এ কেমন বিঁধছে বুকে কার শেলেরা
কে মোছেন ক্লান্ত দু’চোখ মধ্যরাতে?এখন আর রাত নামেনা নিভলে আলো
বিকেলের পরটা শুধুই বড্ড কালো
দেখি হায় রক্ত লেগে মা’র ডানহাতে। -
কবিতা- শিক্ষণীয়
শিক্ষণীয়
-সঙ্কর্ষণআমাদের দেশ চালানোর পরিস্থিতি?
যেখানেই রাখবে দু’চোখ, অরাজনীতি।এখানে নির্বাচকেও খুব বাহারে
থাকে সব খুব খুশীতেই স্বৈরাচারে।খাতাতে সে’ই তো রাজা নৈতিকতায়
অথচ একখোঁচাতেই, “মন্ত্রী কোথায়? “।এসবই খুব বাজে তাই যাচ্ছো চ’লে
নাগরিক, টিকতে তো হয় জিততে হ’লে।নাকি যা ঘ’টছে ঘ’টুক, যাক মিটে যাক?
আমাদের পাত জুড়ে থাক মাছঢাকা শাক,
জীবনেও ভ’রবেনা আর ছোট্টো এ’ফাঁক
কাঁপুনির শব্দে মরে বিপ্লবী ডাক।নিজেকেই প্রশ্ন করো, “রক্ত আছে? “
এহেন লাখ মাতনেও যে না নাচে,
কপালের সব ভাঁজে তার মৃত্যু লেখা…আমাদের রাজনীতি আর হয়না শেখা।
-
কবিতা- সুখকান্নার গল্পরা সব
সুখকান্নার গল্পরা সব
-সঙ্কর্ষণছিলোনা নাকি সে ছিলো সেই আমাদের ঘরবাড়ি,
শুনেছি সকল মানুষের নাকি থাকা খুব দরকারি?যারা সব শুধু দান খেলা এ’ধারে হ’লো কী ও’ধারে
কারা ব’লেছিলো থিতানোর মানে এবারে নিজেরা শোধা রে।মরণেরা জমা হয় যদি ভয় কাকে বলে জানতে
আপন আর পর কে যে ভুলে গেছি খুদকুঁড়োটুকু আনতে।শোনা যায় অভিশাপ আর পেটে, শ্বাসে চলে দ্বন্দ্ব
বহুভাগে ভাঙা সমাজের শবে উঠে আসে পচা গন্ধ।দু’বেলাই পেটে ভাত আরো দু’মাসের অধিকন্তু
এ’ছাড়াও কিছু ম’রে বেঁচে থাকে দু’টি পায়ে চলা জন্তু।আমাদের শেষ সংগ্রাম আর তোমাদের চোখে ‘সেন্টি’…
মহাশ্মশানের দ্বারে লিখে দিও এসেছিলো নাকি ট্রেনটি?
-
কবিতা- অনর্গল
অনর্গল
-সঙ্কর্ষণএ যেন চিরচেনা সে বন্দীদশায়
দধির ভাণ্ডে ক’রে মুক্তি বিকায়,
“শোনোনা শোনোনা” ক’রে যতো ডাকি তাকে
অমলেরা সুখী আছে, ভেবে চ’লে যায়।এটুকু আশাই শুধু কাঁধে রাখা বাঁকে
হঠাৎই পেরোবে সে’ও মোড়ে বাঁকা পথ,
দেওয়ালে সীমানা ঘেরা এ মরুভূমিতে
তারই পায়ে হেঁটে হেঁটে আসবে শরৎ।সতত যতনে রেখো রাজাকে চিঠিটি
প্রাসাদে তাঁরও তো রাখা প্রীতি উপহার,
আমরা সকলে রাজা এটুকু মহলে
অভাব রেখোনা যেন শুভকামনার।তখনই ঘুমিও শুধু জেগে থাকো যদি
প্রতিটি স্বপনে নয় ঝ’রে যাক ফুল,
ভরসা রেখেছি মনে সে অভিভাবকে
হিসেবে জেনেছি যাঁকে চিরনির্ভুল…কে যেন বেড়েছে দ্রুত বন্দীদশাতে
এ ঘরে পারেনা হ’তে স্থানসঙ্কুল। -
কবিতা- ভোঁ
ভোঁ
-সঙ্কর্ষণআমরা আবার তেমন স্বপ্ন দেখবো
আমাদের কেবল ঘুমোতে দেওয়া হোক।
যোগাযোগ বন্ধ হ’লে তুমি-আমি মৃত হ’য়ে যাই…
ছেলেমেয়েদের খেলনা কারা সব কেড়ে নিয়েছে,
মা-বাবাকে গালাগালি করে, বৌকে নোংরা ইশারা।বাবুয়ানি গরমের ইতিউতি পথ…
দু-দু’টি রুটির টানে বিষ হ’য়ে ঘুরি।
থাপ্পড়ে চটাপট শব্দরা আর হয়না তো, ব্যাথাদের
কোটি বুকে তালা মেরে রেখেছি, বেরিয়ে আসতে চায়
ছিঁড়ে ফেলে বহু আগে কেচে রাখা জামা।যে সিঁড়ি ছোঁবোই ভেবে নিজেকে পিষেছি
সেখানে আগেই দেখি কী বিশাল এ ভিড়।
“বেরো তো” বলেনা কেউ, “দূর হ” রাগে ছুটে আসে
পেয়াদার লাঠি, যে জেগে আসলে তার ভাঙেনি তো
ঘুম, যারা তা দেখেছে তারা চোখ জেনো বোজেনি কখনও।এখন ঘুমোতে দাও, পাতার ভেতরে হোক
অথবা বাইরে শুনি প্রবল আওয়াজ,
ওপরে হ’লোনা তাই চাকাকেই ওপরে চালিও…খেলনা, গালিগালাজ
ঢেকে যাক রোগে ভোগা চাদরের নীচে। -
কবিতা- এক শুভদিনে
এক শুভদিনে
-সঙ্কর্ষণহৃদয় কোথাও গোলাপ ছড়ায় কোথাও ব্যাকুল চাঁদ
আলিঙ্গনেও বিষাদ ঘনায় অরণ্যমন ফাঁদ,
কিশোর প্রেমিক অপেক্ষাতে জেনেও এসব ভুল
সলজ্জিতা কীসের ঘোরে সরায় রেশম চুল?দুয়ের হওয়া একের বাধা প্রাচীন সে বজ্জাত
আকর্ষণের নরম নালিশ করেই যে নস্যাৎ,
পুনম রাতের পরেই এমন ভোরের কিরণ হোক
চাদর চড়েই সরুক পাথর বিমিশ্রতার শোক।মাথার ওপর আশীর্বাদী বিমূর্ত হাত যাঁর
মনের মাঝেও প্রতিচ্ছবি উঠেই আসুক তাঁর,
চলনবলন পৃথক ধরন সবার পথিকৃৎ
গোলাপ দিয়ে গোপাল বলুক, “বেগম খুশীর ঈদ”।আজান দিয়ে বোধন শুরু সেটাই ঠাকুরঘর
কারোর চোখে অপার তিনি কারোর পীতাম্বর। -
কবিতা- জসবাতি
জসবাতি
-সঙ্কর্ষণঅবিরাম হাততালি দিয়ে জ্বলছে হাতের তালু
নোনতা ঘাম ঝরে পড়ছে চেটো থেকে।
একটু একটু করে রিক্সাভাড়া অনেক দিন জমালে
ছাপার অক্ষরে নিজের নাম দেখা যায়…
সৌজন্য সংখ্যা বলে যা দেওয়া হয় তা আসলে
অসংখ্য অকবির মূর্তিমান বমন মাত্র।দুর্গন্ধ খালপাড়ের পাশ দিয়ে হাঁটলে
সন্ধ্যার সৌন্দর্যকে অনুভব করা যায় আরেকবার।
বস্তিতে টালির ঘর, উত্তীয়মান বর্জ্যের ফাঁকে
চিরতরুণ বৃদ্ধটি হেসে ওঠে রোজকার মতো…
যেন দৃপ্ত ঘোষণা রাখে, ” আমি আবার আসবো
এই পাঁক থেকে জন্মানো কোকনদ হয়ে”,
ছেলেটিও মাথা নাড়ে ঠিক, ঠিক, ঠিক।ছেঁড়াখোঁড়া খাতাটির পাশ থেকে হাত ধরে যে কলম
তার কাছে ফিকে হয়ে আসে মৃত কালরাত।
যে বাবাকে বলেনি সে কোনোদিন,
“আমি ঠিক বেঁচে নেবো”… সেই ক্ষোভ, প্রতিশোধ
লেখা আছে ক’টি কবিতায়, শুধু জানে
ভরা পাতাগুলো আর জানে কেটে গেছে তেইশটা বছর।জানি কেউ দড়ি খুঁজে করে চলে ধোঁয়া-উদগার
ছেলেটির মান মাপে বিষম এক ঘড়ি…
তকমায় বেকারের খাঁড়া ঝুলে থাকে,
সে তো আর জানলোনা এ লেখায় উঠে এলো
কতো বাঁধা বুক, কতোগুলি ভেজা শেষরাত…কবিতা তো হেরে যাওয়া তরুণের জয়ী জস্বাত।
-
কবিতা- রক্ষকের প্রতি
রক্ষকের প্রতি
-সঙ্কর্ষণতোমার সামনে এসে দাঁড়ালে
ঘাতকের বন্দুক নীচু হ’য়ে যায়,
ধর্ম ব’লে কিছু থাকলে চিৎকার ক’রে কেঁদে ওঠে।
ভেবেছি ওপরে উঠছি এক পা, এক পা ক’রে…
হঠাৎ রক্তে পিছলে প’ড়ে গেলাম।তুমি নাকি বহুবার জেলে গিয়েছিলে,
আজকের নেতারাও টুকটাক ‘জেলে-টেলে’ যায়।
সাহেবরা শিখিয়েছে ধরণীও কারাগার
বেঁচে আছি তারই মানে ফাঁদে প’ড়ে গেছি…
আমাদের গরাদেরও দু’টি ক’রে হাত, দু’টি পা।এপারে-ওপারে থেকে তুমি যেই নেই হ’য়ে গেলে
চারপাশে দেখি, ও কারা ঘিরে ফেলেছে আমাদের বাড়ি
মনে হয় ছুটে যাই টুঙিপাড়া ছুঁতে
কেটেছে প্রতিটি দিনই ধানমণ্ডিতে…
ভালোবেসে এইবারে কাছে নাও ‘ভালো-ভাষা’ দিয়ে।আগামীর ভোর হ’লে বিশাল এক পতাকা ওড়াবো
গন্ধ ছড়াবো, কোনো রঙ থাকবেনা।
বেড়াটুকু উঠে যাবে শহরে শহরে,
না বলা গল্পগুলি শুনবে রাসেল… বন্ধু, পিতাও তুমি
কলকাতা, ঢাকা দু’য়ে মেলাবেন রবি, নজরুল।হত্যাকারীর হাতে উদ্যত ছুরি
কখনও সভয়ে যেন চেঁচিয়ে না উঠি
“মজহব ইয়ে নেহি শিখাতা সায়েব”…ছাই দিয়ে লিখে দিও, “আর কোনো বুকে হেন
আঘাত হেনোনা যেন শোনো ভাইজান”। -
প্রবন্ধ- গ্যাঁদা ফুল- কার হাতে
গ্যাঁদা ফুল- কার হাতে
– সঙ্কর্ষণছোটোবেলায় প’ড়েছিলাম, “শি ইজ পুওর ‘বাট’ শি ইজ অনেস্ট”। অর্থাৎ ‘আর পাঁচজনের মতো’ ঠিক ঐ বা ঐ জাতীয় কিছু ক্ষেত্রে দারিদ্র্য মেয়েটির সততার প্রতিবন্ধক হ’য়ে দাঁড়ায়নি, তাই সে শিক্ষিতদের পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে। গরীব মানুষ তো, রক্তে প্রতারণার দোষ না থাকা নেহাতই অস্বাভাবিক। পেটে খাবার না জুটলে তো সে মেয়ে কুচ্ছিতও বটে। তবে অদ্ভুতভাবে সেই কারণবশতঃ মেয়েটির সৌন্দর্য এবং যৌবন কিন্তু টাল খায়না।
অতএব সদ্বংশজাত জনৈক ধনীপুত্র নিশ্চিন্তে তাকে নিজের বাড়ির বড়ো বাগানে ডেকে নিতে পারলো। দেখিয়ে দিলো অবস্থার এই দুস্তর ব্যবধান বর্তমান থাকতেও সে কতো ভালোবাসে তাকে। কথা দিলো নিজের দায়িত্বে জীবনের সংগ্রাম থেকে অনতিকাল পরেই উদ্ধার ক’রে আনবে তাকে। কিন্তু ‘ভালো ছেলের’ প্রেম কি আর মন শরীর এসব অতো গভীরভাবে বোঝে? মেয়েও তো জানে এইই তো পতি। পরম গুরু। আশ্বাস দিচ্ছে যখন, মিথ্যে হবেনা।
সে ঘটনার কিছু সময় পরেই এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান কোলে কোনো বাউলের আখড়ায় দেখা যায় মেয়েটিকে। কুমারী অবস্থায় মা হওয়ায় তাকে আর স্থান দেয়নি সমাজ। গরীব মানুষের মেয়ে ‘অসতী’ তো হওয়াই স্বাভাবিক। অসতী মেয়েকে তো আর ঘরের বৌ করা যায়না। হয়তো এক শ্রেণীর কাছে এ ঘটনাও প্রত্যাশিত, অপরদিকে তৈরী থেকেও দ্বিতীয় শ্রেণীর কাছে এ যেন অপ্রত্যাশিত। তাই গাছের ছায়ায় ব’সে একান্ত নিজস্ব স্নেহপুত্তলীটিকে সাজায়-গোজায় সে। প্রেমিককে ফিরে না পাওয়ার দুঃখ তার মুখের কথায় ফুটে ওঠে বারবার। মনে পড়ে সাধ, আহ্লাদ, অনুভূতি এসব তো তার মতো মেয়েদের জিনিস নয়। কিন্তু তার অমূল্য ধনটির মুখমণ্ডলে সে ফেলে আসা সুখস্মৃতি খুঁজে ফেরে বারবার। অকারণে গেয়ে ওঠে, “বড়োলোকের বিটি লো, লম্বা লম্বা চুল/অমন চুলে বেন্ধে দিবো লাল গ্যান্দা ফুল”…
.
.
সেকালের বাঙালী সংস্কৃতিতে এ ছবি নতুন কিছু ছিলোনা। পটের গান, গল্প, কবিতা, ছড়া ইত্যাদিতে প্রচুর দেখাও পাওয়া যায় তার। এ দুঃখ, এ হাহাকারে বাংলার প্রতিটি নারী, পুরুষ যেন একাকার হ’য়ে যায়, যেমনটি গেছিলেন গানটির আসল রচয়িতা শ্রী রতন কাহার। এ গানের ইতিহাস ও মর্ম যদি কিছুমাত্র জানতেন সোনি মিউজিকের কর্ণধার, সম্পর্কিত প্রতিটি শিল্পী, ‘গেন্দা ফুল’ গানটির গীতিকার, তাঁরা হয়তো বুঝতেন যে মানসিকতা কতোখানি নীচ হ’লে এই আবেগকে লাস্যের রঙ লাগিয়ে পণ্য হিসাবে বিক্রী করা যায়। আজ যখন গণমাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের গানটিকে সমর্থন জানানো দেখি তখন কিছু মনে হোক আর না হোক, প্রতিবাদ দেখলে হাসি তো পায় বটেই। আসল গানটি শুনেছি ক’জনে? ক’টি মানুষই বা জানেন লোকগীতিকার শ্রী রতন কাহারের নাম? আহা ও তো ছোটোলোকেদের জিনিস। গরীব মানুষের। ওসব চর্চা করা সদ্বংশীয় অভিজাতদের মানায় কি? হ’লোই বা সে আদি, হ’লোই বা সে আমাদের শিকড়… বাঙালির মতে আধুনিকতার অর্থই হ’লো পুরাতনকে ভুলে থাকা। ‘আত্মঘাতী’ বিশেষণ তো আর এমনি এমনি আমরা লাভ ক’রিনি, তাই না?