• কবিতা

    কবিতা- আরও ভালোবাসো

    আরও ভালোবাসো
    সঞ্জিত মণ্ডল

    ওগো প্রিয়তম, তুমি সে কি জানো, ভিজেছি শরীরে মনে,
    এতো কাল তুমি কোথা ছিলে নাথ, প্রাণ যায় ফাল্গুনে।
    দুহাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নিলে কার সে না ভালো লাগে,
    অধরামৃত পান চায় প্রিয়া আশ্লেষী অনুরাগে।
    আরও ভালোবাসো সবটুকু মোর নিঃশেষ করে নাও,
    এতো দিন পরে এলে তুমি নাথ সুখের যাতনা দাও।
    বিরহী বাতাসে রোজ কানাকানি বলে যায় কতো কথা,
    আমি অমৃতা, আমাতে তৃপ্ত হবে জানি প্রিয় দেবতা।
    আকাশে নষ্ট চাঁদ ওঠে আর কালি হয় পোড়া মন,
    শ্রীচাঁদ মুখেতে যখনই তাকাই মন করে উচাটন।
    দু’ হাত বাড়াও নাও আরো নাও যত খুশী মন চায়,
    বিরহী এ প্রাণে প্রিয় সঙ্গমে সব কিছু দিতে চায়।
    প্রিয়র পরশে শিহরিয়া ওঠে চমকিত তনু মন,
    সব দিতে চাই ভালোবাসাটাই আলো করে ত্রিভুবন।
    আকাশে বাতাসে জোছনাও হাসে কুসুমিত ফুলবন,
    আমি যে প্রেয়সী প্রিয় প্রেম লাগি উথলিত প্রাণ মন।
    বিরহী কপোত সারাদিন ডাকে প্রিয়া সঙ্গম চায়,
    আমিও বিরহী কানু প্রেম লাগি বারি যাচি যমুনায়।
    চেয়ে দেখো শ্বেত শঙ্খের মতো যৌবন কামনায়,
    প্রিয়র পরশে স্পন্দিত হবে শিহরিত বাসনায়।
    ক্ষুধিত এ মন কবে থেকে জানো কানু প্রেম শুধু চায়,
    যেদিন ও চাঁদ বদন দেখেছি প্রেমময় যমুনায়।

  • কবিতা

    কবিতা- বর্ষ বরণ

    বর্ষ বরণ
    – সঞ্জিত মণ্ডল

    উদাসী চৈত্র পাতা ঝরিয়েছে নিখিলের বনে বনে
    বিরহী বাতাস হা হুতাশ করে দোলা দিয়ে গেছে মনে।
    বিধুরা মহুয়া বিদায় নিয়েছে বর্ষ শেষের দিনে
    দিগন্ত পার হয়ে গেছে বুঝি বসন্ত মনে মনে।
    সেই থেকে কার কথা ভাবি আর পথ চাই দিন গুনে,
    কালবৈশাখী কবে থেকে যেন দোলা দিয়ে গেছে মনে।
    প্রকৃতিও সাড়া দিয়েছে বুঝিবা নব বরষের গানে
    কচি কিশলয় বর্ষ বরণ করেছে আপন মনে।
    চৈত্রের চিতা ভস্ম উড়েছে মাতাল হাওয়ার দিনে
    স্নিগ্ধ বাতাসে নব বরষের আগমন হবে জেনে।

    বাঙালির ঘরে যত পার্বণ শুরু হয় শুভক্ষণে,
    হালখাতা হবে নতুন পোষাকে বর্ষ বরণ দিনে।
    মঙ্গল ঘট দুয়ারে দুয়ারে আবাহন জনে জনে,
    ধনী দরিদ্র একাকার হোক সমতা আসুক মনে।
    বিভাজন ভুলে উঁচু নীচু আর জাত পাত যাক থেমে,
    বর্ষ বরণ একতা আনুক বাঙালির মনে প্রাণে।

    নব পঞ্জিকা, নব পত্রিকা, নব পুস্তিকা কিনে
    নব আনন্দে বর্ষ বরণ হোক সবাকার মনে।
    যে যেখানে থাক ঘুচুক অভাব নিঃসংশয় মনে
    বর্ষ বরণে সামিল সবাই বাংলার কোনে কোনে।

    শপথ নিলাম সুন্দর মনে বর্ষ বরণ দিনে
    বিদ্বেষ বিষ থাকে নাকো যেন কোনো বাঙালির মনে।
    মঙ্গল করো সবার হে প্রভু নব পবিত্র দিনে
    অশ্রু মুছায়ে বেদনা ঘুচায়ে প্রশান্তি দাও মনে।

  • কবিতা

    কবিতা- খবর

    খবর
    – সঞ্জিত মণ্ডল

     

     

    খবর শুনতে ইচ্ছে করে না, মিথ্যে খবর শোনায়,
    খুনি, ধর্ষক, দলবদলুরা সবাই দাপিয়ে বেড়ায়।
    মীরজাফরকে বিশ্বাস নেই সেকথাটা আজও মানি,
    বিভীষণরা যে কি ভীষণ হয়, আমরা সকলে জানি।
    বিচার হয় না শাস্তিও নেই সকলেরই আহ্লাদ,
    বিচারের নামে প্রহসন শুনি গা-ছাড়া স্বভাব জল্লাদ।
    রামরাজত্ব আনবে ফিরিয়ে বিশ্বাস করো নাকি?
    ধর্মের বিষে নিঃশ্বাস মেশে বাকী সব কিছু ফাঁকি।
    বেপরোয়া সব নেতা নেত্রীরা মিথ্যে বেসাতি করে,
    খোয়াব দেখায় টাকাও ছড়ায় সাধুজীর ভেক ধরে।
    গরীবের দিকে তাকায় না কেউ দেয় মিছে আশ্বাস,
    বেকার যুবক যুবতী শ্রমিক কৃষকের নাভিশ্বাস।
    আশা ভরসার পথ দেখায় না সবাই লুটতে চায়,
    বুজরুকি ভরা লম্বাচওড়া বাতেই বাজার ছায়।
    খবরে আজকে কি বলেছে বলো কটা ধর্ষণ হলো,
    কতো খুনি কতো আসামি আজকে জেল থেকে ছাড়া পেলো!
    কেউ স্ত্রীকে মারে, কেউ বা স্বামীকে, কন্যা ভ্রূণও মারে,
    বাবা-মা কে মারে গলা টিপে ধরে কোথাও বা খুন করে।
    চেঁচাচ্ছে যারা আসলেই তারা সব চুপ হয়ে যাবে,
    বখরাটা পেলে ঘরবাড়ি ছার দেশের নিলাম হবে।
    রেল, ডাক, তার, তেল, গ্যাস সবই বেচে দিয়ে একাকার,
    ব্যাংক, বীমা সব লুঠেরার হাতে তুলে দেওয়া বুঝি দরকার?
    কেমন চলছে বলো না বন্ধু, খবর শুনতে চাও?
    দেশেই রয়েছে উত্তর আর মধ্যপ্রদেশ তাদের খবর নাও।
    আকাশে বাতাসে কতো হুংকার মনের কথাও শুনি,
    দেশটা কারা যে বিকিয়ে দিচ্ছে সবাই খবর জানি।
    খবর শুনলে শরীর খারাপ হাত নিসপিস করে,
    বিভেদের বাঁশি শুনেছি যেদিন সে-ই দিন গেছি মরে।।

  • কবিতা

    কবিতা- হোক কলরব

    হোক কলরব
    -সঞ্জিত মণ্ডল

    আর কতো কর বসাবে জানিনা কর দিতে টাকা ফাঁকা,
    আয়করে ছাড় দেয়নি তো কেউ তুমি নও শুধু একা।
    শিক্ষা স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কমেছে ওগুলো দিয়ে কি হবে?
    বোকা জনগণ শিক্ষিত হলে চালাকিটা ধরে দেবে।
    হতাশ হয়েছে কতো করদাতা ছাড় কোনোটাতে নেই,
    সুদে ও আসলে কর দিতে হবে বোকা এ জনতাকেই।
    লকডাউন আর কর্মচ্যুতিতে জনগণ বেসামাল,
    একশো দিনের কাজ প্রকল্পে স্তব্ধ সে বোলচাল।

    পরিযায়ী যারা কাজ পেয়েছিলো শহরতলি ও গ্রামে,
    বরাদ্দ ব্যয় কমিয়ে দিয়েছ যাবে কোন পরভূমে?
    গ্রামগুলো যদি বেসামাল হয় দায়টা কে নেবে শুনি,
    অর্থনীতির কালবেলা চলে এটা কি বধ্যভূমি!
    করপোরেটের সুবিধা হয়েছে সবাই বলছে তাই,
    গরীব শ্রমিক চাষিরা মরছে বোকা হাবা জনতাই।
    কাজ নেই তার সংস্থানও নেই দারিদ্র সম্বল,
    করপোরেটের দুনিয়া হাসছে তাদের বেড়েছে বল।
    দিশাহীনতায় ভুগছে যে কারা বাজেট না জনগণ
    একুশে আইনে মরছে কিষাণ বাজেট কুলক্ষণ।

    ঘুরে দাঁড়ানোর দিশা নেই কারো দূরদর্শিতা কম,
    হুক্কাহুয়াই বলবে শৃগাল গাঁজায় মেরেছে দম!
    সরকার আর চাকরি দেবেনা বেসরকারিই সব,
    নীতি হীনতায় স্তব্ধ দেশ আজ চারিদিকে কলরব।
    ক্ষমতা পেলেই সব দাদা দেখি রক্ত চোখ দেখায়,
    বোকা জনতাই ধোঁকা খায় বসে তারাই ভোটে জেতায়!
    কলরব হোক হাটে ও বাজারে কলরব দেশময়,
    বোকা জনতার আন্দোলনেই ফিরবে সে সুসময়।

  • কবিতা

    কবিতা- অন্নদাতা

    অন্নদাতা
    – সঞ্জিত মণ্ডল

     

     

    অন্নদাতার অন্ন যারা কাড়তে চাইছে জোর করে আজ,
    করপোরেটের দালাল কারা সার বুঝেছে দেশ ও সমাজ।
    বিফল কথা বিফলে যায় মিথ্যে বুলির ঢক্কানিনাদ,
    অন্নদাতা ভরসা পেলে বাঁঁচবে তবে দেশ আর সমাজ।
    তদ্বির আর তদারকি বুজরুকিরই আর একটা ধাঁচ,
    অনড় অন্নদাতা বোঝে চালাকিটার নতুন সে ছাঁচ।
    নিজের ভালো সবাই বোঝে কালা কানুন কি দরকার আজ,
    লুটবে যারা ক্ষেতের ফসল তাদের জন্যে পেটাচ্ছো ঢাক!

    আজকে যারা লাগামছাড়া লোটার জন্যে পেতেছে ফাঁদ,
    তাল ঠুকছে তাদের সাথে করপোরেটের সন্ধানী বাজ।
    তুমিও খাবে আমিও খাবো বখরা হবে আধা আধি,
    অন্নদাতার পা ধরে আয় সবাই করি সাধাসাধি।
    সমর্থন কেউ করে নাকো তবুও দেখি কতোই লাফাস,
    সংখ্যার জোরে পাশ করেছিস মুখটা ঘরে গিয়েই লুকাস।
    কানুন যদি কালা কানুন কে মানবে সে আইনটা আজ,
    অন্নদাতার সহিষ্ণুতা কদিন রুখবে ভাবুক সমাজ।

    শর্ত দিলে আলোচনা হয় কিভাবে কে বলবে আজ,
    বুরারির ময়দানে শুনি ব্যারিকেড ভাঙার আওয়াজ ।
    সরকার যখন পিছু হটে কমিটি কমিশন গড়ে,
    বুঝতে হবে ঘাড় ভেঙেছে আন্দোলনের প্রবল ঝড়ে।
    গঙ্গাজলের দিব্যিতে কি আজকে কোথাও চিঁড়েও ভেজে,
    ঘোর কলিকাল অন্ধ বিকাল গঙ্গাজলেও মিথ্যে চলে।
    সব কথা তাই বিফলে যায় ছল চাতুরীর মরণ খেলা,
    অন্নদাতার মান ভাঙাতে আগুন নিয়ে করছো খেলা!

    বলছে না কেউ গলদ কোথায় কালা কানুন তুলতে হবে,
    বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভাবো এমনি করেই দেশ চালাবে!
    কালা কানুন আগুন জ্বালায় আজকে দেখো সারা দেশে,
    কালা কানুন রদ না হলে দেখে নিও কি হয় শেষে।।

  • কবিতা

    কবিতা- চৈতন্য

    চৈতন্য
    – সঞ্জিত মণ্ডল

     

     

    চৈতন্য দাও মহাপ্রভু আজ কিছু শিখে নিতে চাই
    গরুর দুধেতে কতো সোনা আছে বলো-
    দেশটাকে সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়ে যাই।
    শিক্ষা দীক্ষা নাকি চেতনা
    অচেনা সমীক্ষাতে কি যে বলে পাগলে মানিনা।
    বিজ্ঞানী মহাজন কেউ কিছু জানে না,
    নেতারা যা বলে গেছে সব দেখি ফলে গেছে মিথ্যা না।
    মুখ্যু দেশের লোক বোঝে না,
    তালিতেই রোগ সারে জানে না।
    আমরা তোমার লোক, বর্গী বলুক লোক
    চেনা বামুনের পৈতে লাগে না।
    কতো নেতা কতো করে বাহানা-
    তুমি বুঝি আজকাল কান পেতে শোনো না?
    ছুঁতো নাতা তুলে ধরে দিনরাত গান করে আমাকেই এ ভোটে জেতাও না।
    কে বলেছে নেই ধ্যান ধারণা –
    বাঙালি সংস্কৃতি, সেরা সেটা তো মেনেছি
    কতো কিছু জানি তুমি দেখোনা।
    পাঁচশো বছর আগে মহাপ্রভু চলে গেছে, কি হয়েছে,
    কেশব ভারতী এসে এই তো কদিন আগে দীক্ষা দিলেন না-
    দুশো বছরের আগে দীক্ষা নিয়েছে বলে
    নেতারা তো মিথ্যা রটান না।
    কবিগুরু ও নিমাই কোথায় জন্মেছে ভাই
    পাখিপড়া করিয়েছি জানো না!
    মানলাম, জোড়াসাঁকো কোথা সেটা জানে না,
    নদীয়ায় নবদ্বীপ সেটাও সে জানেনা।
    শান্তিনিকেতন যদি জন্মভিটাই বলে
    কাটোয়াতে তফাৎ তেমন কিছু দেখিনা।
    ব্রহ্মাস্ত্রটা দেখি পরমাণু বোমা নাকি,
    মিসাইল একাঘ্নী জানো না!
    পুষ্পকরথে চড়ে প্রথম পাইলট কারে,
    কারে দেখি উনি সেই রাবণ না!
    কুবেরের ভাই তিনি হোন না,
    পুষ্পকরথ কেড়ে উবের ব্যবসা ধরে
    কারে চেপে রথে উড়ে যান না।
    হনুমান আকাশে ওড়ে, গরুও গাছেতে চড়ে
    ভেবে দেখি গণপতি দুধ নাকি খান না!
    প্লাস্টিক সার্জারি গণেশের মাথা নাকি
    টেস্ট টিউবের বেবি কৌরব নাম না!
    ঠেকাতে করোনা চাই গরুচোনা আছে ভাই
    গোময়েই শুদ্ধতা এখনো জানেন না!
    মোক্ষটা পেয়ে যাবে হাতে তালি বাজাবে যে
    রোগ শোক ধরবে না, কিছু না –
    প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখো ঘন্টা বাজিয়ে দেখো
    কাঁসর বাজালে রোগ থাকে না।
    ভাইরাস ভয়েতেই ঘর ছেড়ে পালাবেই –
    বিজ্ঞানী বিস্মিত হবে না।
    ঝাড়ফুঁক ওঝাতে বিশ্বাস ফেরাতে,
    কতো নেতা ধরে কতো বাহানা।
    নেতা যে কথাটা বলে অনুগত ছাগলে
    বলে তার বেশী কিছু কম না।
    দ্বিধা হও ধরণী, চোখ মোছো আপনি
    বিদ্যেবুদ্ধি কিছু চাই না,
    চৈতন্য দাও মাগো এবার পবিত্র হবো
    গোময় গোচোনা বিনা ওষুধ খাবোই না।

  • কবিতা

    কবিতা- বরাভয়

    স্বাগতম
    – সঞ্জিত মণ্ডল

     

     

    বিদায় বিশের বিশ সাল আর স্বাগত নতুন একুশ,
    বিষের অনল জ্বালিয়ে দিয়েছে জ্বলেছি অহর্নিশ।
    চেনা পৃথিবীটা হঠাৎ করেই বদলে গিয়েছে জানো,
    এন আর সি আর কৃষি কানুনের ভাতেই বিষ মাখানো!
    লকডাউনেই পরিযায়ী যারা বেঘোরে হারায় প্রাণ,
    ক্ষুধা আর শ্রমে হাঁটে পরিযায়ী মালগাড়ি নেয় জান।
    অচেনা শব্দ দূরত্ব বিধি মুখ ঢাকা মুখোশে,
    বিষের বাঁশিতে প্রাণ হারিয়েছে কতো অসহায় মানুষে।
    মানুষ যখন বিষে দিশেহারা উম্পুন ঝড় আসে,
    লাখো লোক সব গৃহহীন হয় লাখো গাছ শুয়ে ত্রাসে।
    ভাইরাস আর উম্পুন ঝড়ে বাঙালি বিষম লড়ে,
    বিশসাল অভিশাপ বয়ে আনে বিশ্বের ঘরে ঘরে।
    নিরলস লড়ে বিশ্ববাসীরা রাজ্য ও দেশ পাশে,
    নষ্ট জীবন তবু্ও লড়াই বেঁচে থাকবার আশে।

    মহীরুহ কতো পতন হয়েছে রাজনীতি ক্রীড়াঙ্গনে,
    সংস্কৃতি ও শিল্পকলা আর বিজ্ঞান জগতও জানে।
    রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি আর সৌমিত্র অভিনেতা,
    সোমেন মিত্র, দেবেশ রায় আর অলোকরঞ্জন তথা।
    মানবেন্দ্র ও পিকে ব্যানার্জি আর চুনী গোস্বামী,
    নক্ষত্র পতনে বাংলার আকাশ শূন্য হয়েছে জানি।
    কতো চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মী নার্স ও সাফাইদার,
    সেবা দিয়ে তারা চলে গেছে দূরে কেউ ফিরবে না আর।
    প্রয়াত হয়েছে পুলিশ কর্মী সরকারি আধিকারিক,
    প্র‍য়াত হয়েছে চিত্রগ্রাহক আর অনেক সাংবাদিক।
    সত্তর ছুঁই রমনী দুজন বাংলার কান্ডারী,
    রাস্তায় নেমে দিনরাত খাটে তাদের শ্রদ্ধা করি।
    সব ধাক্কাই সামাল দিয়েছে তবু সকলেই ক্ষতি চায়,
    প্রশংসা আর করে নাকো কেউ হিংসায় জ্বলে যায়।
    দুইটি মেয়ে সে দুর্গার মতো রুখে দাঁড়িয়েছে আগে,
    হাসি মমতায় এটাই প্রাপ্তি নারী শক্তিই জাগে।।
    বিশসাল কেড়ে নিয়েছে অনেক শিখিয়েছে কিছু কম নয়,
    বিদায় বিশ আর স্বাগত একুশ, একুশ আনুক বরাভয়।।

  • কবিতা

    কবিতা- স্বাগত নতুন

    স্বাগত নতুন
    – সঞ্জিত মণ্ডল

    স্বপ্ন দেখতে এখনো ইচ্ছে করে, স্বপ্নটা বেঁচে থাক-
    ফিরে দেখা বড়ো কষ্টের বন্ধু, নতুনকে আজ স্বাগত জানানো যাক।
    সাড়া ফেলে দেয় অনেক কিছুই ভালো ও মন্দ মিশে,
    বিশ সাল যেন বিষের বাঁশিটা বাজিয়ে দিয়েছে এসে।
    প্রশ্ন জেগেছে অনেক কারণে শুধু ভাইরাস নাকি?
    আজাদী চাওয়াটা বিচ্ছিন্নতা দেশপ্রেম কি মেকি!
    বিরোধীরা কথা বলবেই সেটা অধিকার নয় আর-
    গলাটিপে সব বিরোধী হত্যা থমকে মানবাধিকার!

    অজানা দৈত্য আর দু বন্ধু গলা জড়াজড়ি করে,
    আজগুবি সব আইন এনেছে জনতা বেঘোরে মরে।
    আবরণ ছিঁড়ে বেরোতে চাইলে কেউ বাঁঁচবেনা আর,
    শৈশব স্মৃতি ছেলেবেলা সবই দেখছে অন্ধকার।
    জনতার রবি উদয় হলেই পুবাকাশ লাল হবে,
    এই আশা নিয়ে দ্বিধা ঝেড়ে ফেলি স্বাগত জানাই সবে।
    আসুক একুশ জয়গৌরবে বরণ করিয়া লবো,
    আজাদী চাইছি সব কিছুতেই আবার মানুষ হবো।

    ইতিহাস খুঁড়ি সামনে পিছনে যতদূর চোখ যায়,
    মুখ ঢেকে যায় বেদনার গ্লানি কুড়িতে দেখেছি তায়।
    বহু শতাব্দী পার হয়ে গেছে দাসত্ব ঘোঁচেনি তবু,
    বন্ধু খুঁজেছি দেশে ও বিদেশে মিলেছে কতোনা প্রভু!
    হে নূতন তুমি দ্বার খুলে দাও মুক্ত বাতাস চাই,
    ঘোর দুর্দিনে এ দুটি নয়নে সূর্যের আলো পাই।
    স্বাগত নতুন স্বাগত জানাই এসো দ্বার খুলে দাও,
    পূণ্য প্রভাতে নবদিগন্তে বিশ্বে শান্তি দাও।।

  • কবিতা

    কবিতা- ওষুধ

    ওষুধ
    – সঞ্জিত মণ্ডল

    ভালোবাসায় মজলে দেখি কতো মানুষ হয় কুপোকাৎ,
    ভাবুক উদাস আনমনা ভাব বুকের মধ্যে রক্ত ছলাৎ!
    মিষ্টি লাগে তেতো ওষুধ বসন্ত বয় মনের বাতাস-
    শীত বসন্তে নেই ভেদাভেদ উড়ু উড়ু মনটা উদাস।

    মিষ্টি লাগে আকাশ বাতাস মিষ্টি মধুর অপেক্ষা রাত-
    সব কিছুতেই ভাবনা বিলাস একাকার হয় সব দিনরাত!
    ভালোবাসি বলতে হাসি মুচকি হাসি মুচমুচে স্বাদ-
    গরম গরম সিঙাড়া যেমন সঙ্গে না হয় চা টাও থাক।

    সত্যি বলো প্রেম করাটা কঠিন হলেও কি আরিব্বাস!
    সবাই যদি চেষ্টা করে ভালোবেসে জীবন শাবাশ।
    বুকের মধ্যে দুরুদুরু প্রথম প্রেমের দমকা বাতাস-
    সবাই যদি ভালোবাসে বাঁচা মরায় নয় কুপোকাৎ।

    নদীর জলে নৌকা বেয়ে এদিক ওদিক ঘুরতে তো যাস-
    জীবন ধারা বদলে যাবে প্রেমের ফাঁদে বুঝবি তফাৎ!
    না হয় হবে নরম গরম প্রলয় বুকের শ্বাস প্রশ্বাস-
    খানা খন্দ নয়কো দ্বন্দ্ব মিষ্টি প্রেমে পড়লে উদাস।

    কেউ কি ভাবো করবে না প্রেম কিছুতে আর ছোঁবে না জল-
    বাঁচা বড়ো কষ্ট হবে দেখবে জীবনতরী টলমল।
    উপরওয়ালা প্রাণ দিয়েছে প্রানের সাথে মন জুড়ে যাস-
    পৃথিবীটা দেখবে ভালো আঁধার কালোয় আলোর আভাষ।

    মনের ওষুধ নয়কো কড়া পাওয়ার দেখো যার যেমন ধাত-
    বেশী পাওয়ার পড়লে পরে দুচার দিনেই পড়বে ধপাস!
    যার যেমন হয় অভিরুচি সমান সমান কেউ খুঁজে পাস-
    বদ হজমের লাগবে গুলি উঁচু নীচু থাকলে বিবাদ।

    দেখে শুনে বাজিয়ে নিও মনের ওষুধ মনের সাথী-
    বয়স টয়স নয়কো বাধা মনের মিলেই জ্বলবে বাতি!
    সবাই দেখো ছুটছে কতো গণৎকার আর বদ্যি বাড়ি-
    মনের সাথী ভাব করে নাও ভরবে জীবন কাটবে রাতি।।

  • কবিতা

    কবিতা- এক রা

    এক রা
    – সঞ্জিত মণ্ডল

    সব শৃগালের একটাই রা হুক্কা হুয়াই ডাকে,
    সব শাসকেরা শৃগালের জাত একই ডাক ডেকে থাকে।
    আন্দোলনটা পছন্দ নয় হোক না সে বাম ডান,
    সব শাসকেরা প্রতিবাদ রোখে একই রাস্তায় জান।
    যতই ন্যায্য দাবী দাওয়া হোক সে সব কি যায় মানা,
    শীতের রাতেও জাল কামানের দিচ্ছে কেমন হানা।
    অনড় চাষি ভাইরা জেনেছে কালা কানুনের জ্বালা,
    রক্তে বোনা ফসল তাদের লুটে নেবে কারো চেলা।
    ভালোবাসা কোনো চাষিকেই নয় ভালোবাসে মহাজন,
    অশুভ আঁতাতবদ্ধ হয়েছে সরকার ও মহাজন।
    দেশের লোককে বোকা ঠাউরেছে মন্ত্রী আমলা যত,
    মুখে মধু আর অন্তরে বিষ ভাষণ ঝাড়ছে কতো!
    নূন্যতম দাম পাবে না কৃষক, বণিক দেখাবে কলা,
    করপোরেটের লুঠতরাজের কতই না ছলাকলা!
    নিয়ন্ত্রণটা উঠে গেলে পরে সবাই মজুত করে,
    চাল ডাল আলু পিঁয়াজ আর তেল ঢুকবে যে হিমঘরে।
    পিঁয়াজের ঝাঁজ কেমন সেটা তো টের পায় জনগণ,
    কৃত্রিম অভাবে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে চলে অনুক্ষণ।
    কৃষক পায় না কানাকড়ি দাম লুটছে করপোরেট,
    দামের ছ্যাঁকায় শীত পালিয়েছে হা হুতাশ করে দেশ।
    কালা কানুনটা বাতিল নয়কো বলেছে যে সরকার,
    শমন দমন দন্ড ভেদ নীতি চালিয়ে দিচ্ছে এবার।
    বশীভূত কিছু দালাল এনেছে দেশ থেকে ছলে বলে,
    তারা সব বলে ভালোই হয়েছে কালা কানুনের ফলে।
    সংশোধন না বাতিলের দাবি করছে কৃষক ভাই,
    মজুতদারি ও দাম বৃদ্ধির প্রতিকার পেতে চাই।।

You cannot copy content of this page