অণু কবিতা- অচেনা বোধ

অচেনা বোধ– তাপসী শতপথী পাহাড়ী     হয়তো পৃথিবীকে দেওয়ার মতো কোনো ইচ্ছেই অবশিষ্ট ছিলো না আর!ছিলো না নিজের প্রতি নিজের,সমস্ত দায় দায়িত্বহীন অস্তিত্বের খোঁজে,ভারমুক্ত হতে চেয়েছিলো সেও একদিন।তাই দিনান্তের শেষে,রাত্রি খুঁজে পেয়েছিলো বহুদিন পর।সমস্ত নির্যাস ফেলে নিশ্চিন্তেনির্বিঘ্নে, সেও চেয়েছিলো কাটাতে বহু বছর!তারপর অনন্ত শান্তির বার্তা দিয়েছিলো মন,পরম আত্মার সাথে মিলনের ক্ষণ।

অণু কবিতা- মোকাবিলা

মোকাবিলা– সুজিত চট্টোপাধ্যায়   যুদ্ধ,সীমান্ত অতিক্রম করেএকেবারে ঘরের মাঝখানে!শত্রু অদৃশ্য, ক্ষিপ্র ভয়ঙ্কর। বহুমূল্য ডলারের হেলিকপ্টার ব্যর্থসৈনিক বিজ্ঞানী, মিসাইল নয়ওষুধ চাই ওষুধ। ট্রাম্প টা টা..বাই.. রাতজাগা প্রহরী চিকিৎসক, সঙ্গেফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল।নাগরিক গৃহবন্দী, নগর কোমায়যুদ্ধ, ঘরের মাঝখানে, সীমান্ত ঘুমায়।

অণু কবিতা- এক ছাদ। ভিন্ন ক্রিকেট।

এক ছাদ। ভিন্ন ক্রিকেট।– জিৎ সাহ    এক আকাশ ছাদের নীচে ক্রিকেট হাজার খানেক টীম।রাতের আঁধার ভেদ করে কান ভাঙানী হ্যারিকেনের আলো করে ঢিম!পক্ষ-প্রতিপক্ষ মিলেমিশে একাকার।বোঝার উপায় নেই, শুধু খাবার টেবিলেইহয় যত মোকাবিলা…যত হা-পিত্যেশ শুধু দর্শক হয়ে যারা বুক চাপড়ায়।হায়!…শুধু তাদের।আম্পায়ার তো নির্বিকার, ঠিকঠাক খেলা পরিচালনায়।

অণু কবিতা- মুক্তি দাও আমায়

মুক্তি দাও আমায়– মানিক দাক্ষিত     খাঁচাতে বন্দী তোমার সাথে। চারপাশকালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। নাভিশ্বাসউঠছে ক্ষণে ক্ষণে। চাঁদের আলোটাশোকাতুর নিওন বাতি। জীবনের মানেটানিরুদ্দেশ। অনেক হয়েছে আর নয়,মুক্তি দাও আমায়। সময়ের অপচয়বন্ধ হোক। প্রাণ ভরে মুক্ত বাতাসনিই, তার সাথে পাই খোলা আকাশ।লক্ষ্মীটি ছেড়ে দাও। থাক তর্ক-যুক্তি,স্থির বিশ্বাস—-তুমিও পাবে মুক্তি।

অণুকবিতা- সহাবস্থান

সহাবস্থান– জিৎ শাহ     ..অথচ এই আমরাই ভাঙি বাঁধ! সহিষ্ণুতার।আমরা করি আর্তের সেবা।আমরাই মেলাই কাঁধেতে কাঁধ,আরআমরাই জন্ম দিই উষ্ণতার….আমরা হাতে হাতে মিলায়ে রচি মানবতার সেতুবন্ধন, এই আমরাই ,অমানবাধিকারে যোগাই ইন্ধন!

অণু কবিতা- ক্লিষ্ট ধরিত্রী

ক্লিষ্ট ধরিত্রী– উজ্জ্বল মল্লিক     হায় ঈশ্বর! যৌনতার মত্ততাদেখি সর্বত্র;ভালোবাসা মূঢ়তা,আসক্তি ভিন্ন নয় কিছু;অচিরেমোহভঙ্গেই বিচ্ছেদে অবসান,শ্রদ্ধাহীনের এই তো পরিণাম।তোমার মহান সৃজিতরা সব দেখিঅপজাত;পশুর মত একমাত্রমৈথুন সাথে ভোগলিপ্ত:এ তোমারসৃষ্টির চরমতম অবনমন,দ্বিধাহীন ভাবে চলে মনোপূরণ;নিরন্তর মানবত্ব লঙ্ঘিত,মিথ্যার বেসাতিতে ধরিত্রী আজক্লিশিত,চলনে অপারগ, পীড়িত,মাগে নিবারন তোমার কাছে,সতত।

অণু কবিতা- “ক্রমাগত প্রেম”

“ক্রমাগত প্রেম”– অলোক শীল     ক্রমশ স্মৃতিরা ধরা দেয় মুঠোফোনে;বয়ে বেড়ায় মন তোর দেওয়া ডাকনামে,শুকনো গোলাপ পথ চায় মনে-মনেভালোবাসা হায় তবুও রোজ আনমনে। অপবাদ বিবাদ লিখে রেখেছে ডাইরি;তাই তো স্বপ্নরা দিয়েছে ভীনদেশে পারি,সবই ভালোবাসার নামে শ্বাসকষ্টে প্রদুষনক্রমে ক্রমে বাড়ছে আরো প্রেমের দূষন॥

অণু কবিতা- পরমানন্দ হৃদয়ে

পরমানন্দ হৃদয়ে– মানিক দাক্ষিত     প্রকৃতির স্পর্শসুখে আবদ্ধ শিখণ্ডীউল্লসিত সৃষ্টির অশুদ্ধবেলায়।অস্তমিত জ্ঞানের অখণ্ডতার বিলোপ ঘটেখণ্ডতার অশুভ জ্বালায়। জ্ঞানের সঞ্জিবনী শঙ্খ স্তব্ধপঞ্চজনা অসুরের মাঝে।হৃষিকেশ নীরব দর্শকযতদিন না পাঞ্চজন্য শঙ্খ বাজে। অখণ্ড প্রাণে ক্রিয়ার স্ফূরণ ঘটেজ্ঞানের উদয়ে।চৈতন্যস্বরূপের অনুভূতি আলোড়ন তোলেপরমানন্দ হৃদয়ে।

অণু কবিতা- মান হুঁশ

মান হুঁশ– সুজিত চট্টোপাধ্যায়     ধনী হতে চেয়েছিলি তো?হয়েছিস, হয়েছিস দুর্নীতি অগাধ,চোরাগোপ্তা লুকোচুরি। চেয়েছিলি, কেতাদুরস্ত নামী হতে?হয়েছিস তো, নাটুকে দাম্ভিক নেতা,বেচাকেনা মুখোশ ধারী। মানুষ হতে চেয়েছিলি যে?নাহ্, থাক..এবার উত্তরটা তুইই দে..দেখি তোর বুকের পাটা কতো,কতখানি হিম্মতদার।

অণু কবিতা- কুঁড়ি

কুঁড়ি– বিভূতি ভূষন বিশ্বাস ছোট্ট আমি ফুলের কুঁড়ি,পথের ধারে আছি।পথিক তুমি মিষ্টি ভারী,তোমার সাথে আড়ি।আসল কারন,শোনো বারণ,তুলো না’কো আমায়।ফুটবো আমি ভোরবেলাতে,আছি সেই আশায়।ইচ্ছে আমার আছে ওগো,যাবো দেবালয়।পূর্ন হবে সাধ আমার,তোমার অছিলায়।সঙ্গ যদি দাও আমায়,থাকবো আমি নুয়ে।ধন্য হবে ছোট্ট জীবন,প্রভুর চরণ ছু্ঁয়ে।