ক্রমান্বয়ে

ক্রমান্বয়ে -শিবানী গুপ্ত    সাঁঝের ছায়া ঘনায় বেলাশেষের ধূপছায়া শাড়ি পড়ে বেহালায় সুর টেনে করুণ রাগিনীতে উদাসী বাউল ফেরে নীড়ে   কূলবধূ নিকোনো আঙ্গিনা প’রে সত‍্যনারায়ণ পূজোর ত’রে আলপনা আঁকে –নৈবেদ‍্য সাজায় দূরে—-নামাজের কোলাজ ধ্বনি বাতাসে ছড়ায়   শঙ্খচিলেরা দিগন্ত রেখা ধরে উড়ে যায় অচিন—ঠিকানায় তন্ময় একাগ্রতায় পাঠরত কিশোরের কন্ঠে–‘ভারততীর্থ’ চারপাশে মুগ্ধতা–আবেগিক   সীমান্তে-স্বজনচ‍্যুত-দেশপ্রেমী সৈনিক […]

দুঃসময়

দুঃসময় -শিবানী গুপ্ত   আচমকা যখন পারিপার্শ্বিক চিত্রটা আমূল বদলে যায় স্বস্তি–সুখের সহজ যাপন-অংকে গরমিল–ছল্-ছুঁতোর ছিদ্র যতোই রি্যুকরি-ছিদ্র বাড়তেই থাকে একসময়,চারপাশের দেয়ালটা বক্ষে চেপে বসে,দমবন্ধ নিঃশ্বাসে আর,তখনি,মনটা অস্থিরতায় কাঁপে দুঃসময়ের অজানা ত্রাসে ! পরিচিত আবেষ্টনী ঘিরে শুধুই চানক‍্যের কূটনীতি শকুনির চতুর পাশা খেলা চেনা মুখ- চেনা বসতি- সব কেমন অচেনা–অস্পষ্ট চক্রব‍্যূহের রহস‍্য মোড়কে আবদ্ধ বাতাসও […]

ছন্দপতন

ছন্দপতন -শিবানী গুপ্ত     হলুদরঙ প্রজাপতি ছাপ চিঠিটা এখনও  টেবিলে! একরাশ স্বপ্ন শ্যামলা মেয়েটির কালো চোখে কাজল টানে বাসন্তী রঙ তাঁতের শাড়ি — কপালে টিপ্ , হাতে- মেহেদীছাপ, আলতা পরা পা খুশির রোশনাই উছল মুখে শরমের লালিমা। লোকজনের আনাগোনা, আত্মীয়ের কলকন্ঠেউলুধ্বনি , পুরুতের মন্ত্রোচ্চারণ, আশীর্বাদ, মিষ্টিমুখর পরিহাস — কথকতা , চব্য – চোষ্য আপ্যায়ণে- […]

কথা ছিল- – –

কথা ছিল—–  -শিবানী গুপ্ত   এ্যাই,একটু শুনবে? কথা ছিল- – – – ওফ্ কি বললে! সময় নেই বুঝি? তা, কিসের এতো ব্যস্ততা শুনি! সেই—-পঁচিশ থেকে ষাট অব্দি ছুটেই তো চলেছো বাপু! কোনদিন, কখনো সময় হয়েছে শুনবার? হুঁ,যত্তোসব! আজ কেন, কোনদিনই সময় আর হবেনা তোমার, সে আমি হলফ করে বলতেপারি। বিলক্ষণ জানি বটে। অথচ, কথা প’রে […]

পয়লা বৈশাখ

পয়লা বৈশাখ -শিবানী গুপ্ত     চৈত্র শেষে নতুন বেশে বৈশাখী দাঁড়ালো এসে মিষ্টি মধুর হাসিটি হেসে।   হাতে নিয়ে তার প্রীতির ডালা ঐক্য–প্রত্যাশার গেঁথে মালা নতুন দিনের ভোরে।   বাংলার নারী লালপেড়ে শাড়ি মঙ্গল শাঁখে করিতে বরণ আলপনা আঁকে দ্বারে।   প্রভাত পাখির সুমধুর তানে বৈকালিক গীতে নবীন উদ্যমে নবপ্রেরণার টানে উল্লাস জন–চিতে। দিকেদিকেজাগেআনন্দেরসাড়া […]

প্রেম কথা

প্রেম কথা -শিবানী গুপ্ত   বলছে সুজন,আয়লো সজনী নয়ন ভরে তোরে দেখি ওষ্ঠে এঁকে অনুরাগের পরশখানি সোহাগে ভরিয়ে রাখি শরমলালিমা সব ঝেড়ে ফেলে ছুটে আসে ত্বরা সজনী “ভালবাসি প্রিয়,ভালবাসি বলে বক্ষলগ্না কামিনী প্রেমের সায়রে যায় ভেসে দোঁহে মায়াময় এক অপরূপ মোহে প্রকৃতি সুন্দরী কান পেতে রাখে প্রেমের ধুন হৃদয়েতে মাখে

হে পুরুষ! মনে রেখো, আমি নারী

হে পুরুষ! মনে রেখো, আমি নারী -শিবানী গুপ্ত     তোমরা যারা দম্ভভরে পুরুষত্ব জাহির করো, নারীর সমান স্নেহ–মমতা কখন কি দেখাতে পারো! নিজেকে নারী দেয় জ্বালিয়ে সুগন্ধী ধুপেরই মতো, বিনিময়ে পুরুষ তোমরা তাদের মর্য্যাদা কি তারে দাও ততো? সেবায় নারী মাত্র মতন মমতায় –সে বোন বিছানায় –তোমার বিলাসসঙ্গী বহুরূপী নারীর গুণ! পুরুষ! তোমার তৃষ্ণা […]

মধুনিশি

মধুনিশি -শিবানী গুপ্ত     আকাশ জুড়ে     তারারা  স’ব ঝিলমিলিয়ে  হাসে হাত বাড়ালেই    নামবে জেনো      আমায়   ভালোবেসে চাঁদটা  কেমন    মায়াবী মায়ায় নীলাভ  দ্যুতি  ছ’ড়ায় শ্যামল  বনানী      উদ্ভাসিতা তারই অরূপ ছ’টায় মধুনিশি  ডাকছে    আমায় ব্যাকুল  উষ্ণতায় উতল  মন     একছুটে    ধায় মাতাল   মগ্নতায়   চলো না যাই  […]

ইচ্ছে তর্পণ

ইচ্ছে তর্পণ -শিবানী গুপ্ত  বুকের নিভৃতে — তুষের আগুনে পল পল নিত্য দগ্ধ বাসনার আশ মন-দেরাজে রাখা। ছিল ধৈর্য্যের চাবিকাঠি ‘ দীর্ঘদিনে–তাতেও ধরেছে জং ইচ্ছেগুলি কর্পূর হয়ে ওড়ে- এতোদিন হাসঁফাঁস করছিল- বন্ধ দেরাজে মাথা কুটে আমার সাধ ছিল- একআকাশ সুন্দর নকশা দেবো ইচ্ছের গা’য় দিচ্ছিলাম, সান্ত্বনার বাতাস সুসময়ের প্রত্যাশায় — হলো না। বন্ধ দেরাজে—- অপর্যাপ্ত […]

বসন্ত! আমার গঙ্গাজল (বসন্তকে ) 

বসন্ত! আমার গঙ্গাজল (বসন্তকে )  -শিবানী গুপ্ত ওগো, চিরসখা বসন্ত, সেই মেয়েবেলার সন্ধিক্ষণ হতেই তুমি আমার সই—-আমার গঙ্গাজল! মনে পড়ে কি.তোমার! সেদিনের শুভলগ্নের শুভ—- মুহূর্তের অনুরাগময় একান্ত নিভৃত আলাপচারিতার কথা! বিচিত্র রঙবাহারী ফুলে বাগানটা যেন হেসে হেসে আমায় ইশারা করে ডাকছিলো আমি কাছে যেতেই তোমার উজ্জ্বল উপস্থিতি আমায় বিমুগ্ধ করে। কি সুন্দর কস্তুরী সুবাসে ছেয়ে আছে […]