-
চাতক তুই.
চাতক তুই
-কৃষ্ণ বর্মনতোর ঘাতক চোখের চাতক পাখির জন্য
একট জলপ্রপাত এনেছি আমি বুকে করে।
অথচ তুই ফাগুনের আগুন দিনে
একটা মিথ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায়
প্রতারক আকাশের দিকে চোখ পেতে বসে আছিস।
তোর যতটা না পাওয়ার তৃষ্ণা
আমার দেওয়ার তৃষ্ণা তার চেয়ে বেশি।জলপ্রপাতটার খরস্রোত ক্রমশঃ আরো তীব্র হচ্ছে,
শিলায় নুড়িতে ঘর্ষনে ক্ষয়ে যাচ্ছে পার্শ্ব ও তলদেশ,
জলরাশির প্রবল উচ্ছ্বাসে প্লাবিত উপত্যকা।
তবুও এক ফোঁটা জলে
চঞ্চু ভেজালি না তুই।যদি আমার প্রতি তোর এটা অবহেলা হয়,
তবে ভয় পাস না।
বুকের জলপ্রপাতের জল
এভাবেই তোর পাশ দিয়ে বয়ে যাবে তোকে বিরক্ত না করে।
আর এ যদি তোর স্বেচ্ছা মৃত্যুর প্রস্তুতি হয়
তবে সারা পৃথিবিটাকে বুকের জলপ্রপাতের জলে
ডুবিয়ে দেব আমি,
ভাসিয়ে দেব অগনিত মেঘের ভেলা।
মনে রাখিস জল থেকে তোর নিস্তার নেই
আর তুই ছাড়া বৃষ্টির বিস্তার নেই। -
শরণার্থী
শরণার্থী
-কৃষ্ণ বর্মনউৎপাটিত বিতাড়িত আগাছাগুলো জলের তোড়ে ভেসে চলেছে,
কূলের কাছাকছি বিশ্রাম ওদের জন্য নয়।
পালে পালে আস্তানাহীন মেষ শাবক
এসে উপস্হিত মরুভূমির প্রান্তে।
ওরা অবাঞ্ছিত,নিষিদ্ধ।
এক ফোঁটা তৃষ্ণার জল তো দূরের কথা
একটু ছায়াও নেই ওদের জন্য।ওদের সরন নেই,
ওদের মুক্তি মরণে।
ওদের অস্তিত্ব বিপন্ন,
তাই ওরা আজ শরণাপন্ন।একদিন সবাই কক্ষচ্যূত হবে।
আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেনা কেউ।
ধীরে ধীরে সবার অলক্ষ্যে নিজের বিপক্ষে যাবে নিজেই।
সেদিন নিরপেক্ষতার অভিনয় করতে করতে
সবাই হয়ে উঠবে শরণার্থী
কারণ সম্পূর্ণ পৃথিবাটা সেদিন
স্বেচ্ছায় মরণকামী। -
রক্তে বাংলা
রক্তে বাংলা
-কৃষ্ণ বর্মনরক্তাক্ত বাংলা নয়,
রক্তে বাংলা চাই।
যে বাংলা একুশের হৃদয়ে
ফুটিয়েছে চেতনার কৃষ্ণচূড়া ফুল,
সে বাংলার জন্য গলিপথ আবার মিশুক রাজপথের মিছিলে।
স্মৃতির ফলকে শ্যাওলা আচ্ছাদিত ঊনিশে মে
শিলচরের রক্তস্রোতে প্লাবিত করুক প্রতিটি শিরা-উপশিরা।আমাদের রক্ত আধুনিকতা বিরোধী নয়।
শুধু আধুনিকতার মাদক সেবনকে ধিক্কার জানায়
এই রক্তের রক্তরস-রক্ত কণিকা।
বিজাতীয় ভাষা আহরণের নামে
যারা বাংলা ভাষার দূষণ ঘটায়
তাঁদের রক্তে প্রবাহিত হোক
আপন ভাষায় কথা বলার গর্ব।
যারা চলনে বলনে নব্য শব্দ ভান্ডারের নামে
ভাষার শরীরে দূরারোগ্য ক্যানসার কোষের জন্ম দেয়
তাঁদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
সরাসরি প্রতিবাদী দুঃসাহসের নাম-‘রক্তে বাংলা’।
সমাজ মাধ্যম কিংবা সমাজের মাধ্যেমে
যারা আমার বাংলাকে বিকৃত করে
নিজেরা বিক্রীত হয় মানসিক বিকারের কাছে
তাঁদেরকে ঘরে ফেরানোর বিনম্র প্রচেষ্টা
আর ভালবাসার নাম -‘রক্তে বাংলা’।সংকরায়ন নয় সংস্কার হোক
আমাদের ভাষা সংষ্কৃতি।
ওপার বাংলা যদি পারে
পারবে এপার বাংলাও,
পারবে এ বিশ্বের আপামর বাঙালী।তাই তো এই যুদ্ধের ডাক,
রক্তপাতে আর নয় বাংলা
শুদ্ধ বাংলার বিশ্বযুদ্ধে
নির্ভীক সৈনিক-‘রক্তে বাংলা’।