কোহিনূর-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ী পথের বাঁকে,নীল কুয়াশার দল ঘন হয়ে এল।ঢেকে দিলো কত সম্পর্কের দাগ।শিশিরের জলকুচি মেখে আবছায়া মুখ।হিমেল বাতাসে অবশ মন।হঠাৎই মখমলি রোদ্দুর এসেসরিয়ে দিলো কুয়াশা।আবার স্পষ্ট সবকিছু।কত সাদা মেঘ ফিরে গেলো নীল আকাশে।দূরে বনপাহাড়ের কোল ঘেঁষে,উড়ে গেলো এক হলুদ পাখি।সাথে উড়িয়ে নিলো আমার পরিযায়ী মনকে।ভালোবাসার ওম পেতে,ভালোবাসার কাঁটায়,ভালোবাসার রঙে,বাহারী নকশা বুনে চলে মন।পান্না সবুজ […]
কবিতা- উপলব্ধি
উপলব্ধি– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমান তো দমবন্ধ কালো অন্ধকারে বন্দী।ভবিষ্যৎ কালের গর্ভে, আলো নেই কোনো-শুধু মৃত্যুর প্রতীক্ষা, আশাহীন।অতীতও শুধু রেখে গেছে কিছু স্মৃতি।কালের নিয়মে স্মৃতিরও বয়স বাড়ে,হয়তো’বা মুছে যায় কিছু। যেতে যেতে বেদনা কুড়িয়ে যাই।কিছু মুখ ভালোবাসাহীন, ঈর্ষায় নীল।যেতে যেতে যদি কিছু ভালোবাসা, আলো আসে কুড়োবো দ্বিধায়।বোকা আজও আমি প্রেম খুঁজি প্রেমিকের চোখের পাতায়।উজানের […]
কবিতা- নতুনের ডাক
নতুনের ডাক– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় যা কিছু পুরোনো তারই মাঝে শুনি নতুনের কোলাহল।ডাক দিয়ে যায় নতুন সূর্য সোনালী আলোয় সোনার ধানে।নানা রঙে সাজে অসীম আকাশ,আসমানী নীল,গোধূলিতে রাঙা–সাদা মেঘ ভাসে।চিলের ডানায় সন্ধ্যা ঘনালে গভীর কালো সে।ঝিকিমিকি চাঁদ খেলা করে ওই কালো দীঘি জলে।পুরোন পৃথিবী নতুন প্রেমের গল্প বলে। কালো মেঘে ছাওয়া বৃষ্টির ধারা খেলা করে […]
গল্প- শুভ বিবাহ
শুভ বিবাহ– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন একটা মেয়েকে খুব ভালো লাগতো অংশুমানের। কিন্তু সে মেয়ে তাকে বিশেষ পাত্তা দিতো না। আর দেবেই বা কেন? অংশুমান নিতান্তই গোবেচারা, ভালোমানুষ টাইপের। আজকাল মেয়েরা আবার একটু হ্যান্ডু কায়দাবাজ ছেলে পছন্দ করে। সে যাক গে। মনের দুঃখ মনেই চেপে মন দিয়ে পড়াশুনোটাই করেছে অংশু আর তারপর বেশ […]
কবিতা- অপেক্ষায় এক জীবন
অপেক্ষায় এক জীবন– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় সব অনুভূতি দেখানো যায় না।যেমন সব ভালোবাসা গুছিয়ে বলা হয়ে ওঠে না।ভালোবাসা আছে বলেই তো তোমাকে খুঁজি।ভালোবাসা আছে বলেই তো তোমার কথা ভাবি।ভালোবাসা আছে বলেই তো তোমার অনুভবের সঙ্গী হই।ভালোবাসা আছে বলেই তো তোমার অপেক্ষায় কেটে যায় অনন্ত সময়।এই ভালোবাসার কোনো শর্ত নেই–কোন প্রত্যাশা নেই।শুধু ভালোবেসে আনন্দ আছে।অপেক্ষার […]
গল্প- বড় শুভ দিন
বড় শুভ দিন– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় এখনো পায়ের জোর পুরোপুরি পায়না…হাঁটতেএকটু অসুবিধাই হয় প্রতীকের। গতবছরেও দিব্যি ছিলো কিন্তু বড়দিনে বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড় করতে গিয়েই তো যত অঘটন। গতবছর বড়দিনে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করবে বলে মায়ের কাছে পঁচিশ হাজার টাকার বায়না করেছিলো ও।মা বাবাকে জানান কিন্তু বাবা ওই টাকা দিতে রাজী হন’না।বলেন–“খাওয়াদাওয়া আনন্দ করতে এত […]
কবিতা- কখনো না
কখনো না– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতকে ভুলে যেতে পারো তুমি অনায়াসে।কিন্তু মনে রেখো, অতীত তোমাকে ভোলেনাসবকিছু ফিরে ফিরে আসে তোমার জীবনে।অতীত তোমাকে ভোলে না। সম্পর্কের শিকড় ভুলে যেতে পারো তুমি।কিন্তু শিকড় তোমাকে ভোলে না।বারেবারে টানে মাটির গভীরে।শিকড় তোমাকে ভোলে না। সময়ের হিসেব করেছো কখনো?বুঝেছো সময়ের দাম?সময় শুধু দাগ রেখে যায়।সময়তো কখনো ফেরে না। আর […]
কবিতা- হে ঈশ্বর
হে ঈশ্বর– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় হে ঈশ্বর,একটা খোলা আকাশই তো চেয়েছিলাম আরচেয়েছিলাম তার নীচে নিশ্চিন্ত আশ্রয়।এক থালা গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতই তো চেয়ে ছিলাম ঈশ্বর।এক থালা সাদা ভাত।জ্যোৎস্না মাখা একটা জীবন…বৃষ্টিমাখা শান্ত দিনই তো চেয়েছিলাম ঈশ্বর। আমিতো কাঙাল হতে চাইনি।চাইনি গৃহহীন উদ্বাস্তু হতে।চাইনি ভুখা পেটে হাত পাততে।আমি তো ধর্ম চাইনি, চাইনি হানাহানি, অনিশ্চয়তা।আমি তো […]
কবিতা- বাকী পথটুকু
বাকী পথটুকু– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় আত্মমগ্ন থাকতে থাকতে কখন ভুলেছি তোমাকে।কখন যেন আত্মচিন্তা, আত্মপ্রদর্শন গ্রাস করেছে সব।তারপর…নিরবিচ্ছিন্ন একাকিত্ব—আর তখনই আবার তোমাকে খোঁজার শুরু…কিন্তু তুমিও তো তখন পাল্টে ফেলেছো নিজেকে!ভাঙা মন কখনো জোড়ে না।আর সম্পর্কের শিকড় মাটিছাড়া হলে,সেও তো শুকোয়।অনুভূতিগুলো জমতে জমতে কখন যেন মস্ত পাহাড়।আর অভিমানের নদী ছুটে চলে নিঃশ্বাসের তরঙ্গ তুলে।মন বলেতুমি আছো…তুমি […]
অণু কবিতা- সমর্পণ
সমর্পণ– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় দু’দিনের অতিথি হয়ে আশ্রয় নিয়েছিআকাশের নীচে।আর শুধু জেনেছি সমর্পণ। জীবনের কাছে সমর্পণ।সময়ের কাছে সমর্পণ।নিয়তির কাছে সমর্পণ। সবকিছু হাতে নেই।তাই মাথা নীচু করে সমর্পণকরে যাই চিরকাল।ক্লান্ত মন পথ খোঁজে অন্ধকার থেকে আলোয়।পায়ের বালুরাশি ধুয়ে দেয় সময়ের জল।আকাশের নক্ষত্ররাজি ঘুম আনে চোখে।।