-
কবিতা- ১৬ই ফাগুন
১৬ই ফাগুন
-শুক্রাচার্য্য…বিংশ শতকের ফাগুন বদলেছে
নবীন বহ্নির অর্ণবে…
বাঞ্ছিত তিমিরের অভিলাষ না জানি
অন্তরীক্ষে চাহিয়া কবে…
বৃন্তে গাথা পরিণয়ের গল্প শিশিরের
ন্যায় ঝরে যাবে…
লগ্নের জাহ্নবী সায়াহ্নের তিতিক্ষায়
মৃত্যু কে খাবে…
তবুও রোমাঞ্চিত হবে বসন্ত তুমি!
সেই আগের মত…
কেন রহে আড়ালে বসন্ত অন্তরালে
মন চঞ্চল অবিরত…
ভালো মন্দের বাতাসে উড়িছে আকাশে
জানা অজানা কুঞ্জে…
শব্দে শব্দে বিমর্ষ হৃদি নিসর্গের বুকে
ছবি আঁকে গুঞ্জে… -
কবিতা- তমসার ব্রীড়া
তমসার ব্রীড়া
-শুক্রাচার্য্য…চন্দ্রিমা প্লাবিত সলিলে চিত্তের তরণী
যত স্বপ্ন সে স্রোতে ভেসে যায়…
অলির গুঞ্জনে শরমের অভিষেকে
অপলক শির নিশিথের ন্যায়…
হিমিকার বিন্দুর মতো স্মৃতি যত
চিত্তের সায়াহ্নে মালা গেঁথে…
হৃদয়ের সোপান তলে জলধির তরঙ্গ
চিত্তের শ্বশ্মানে মৃত্যু বেঁধে…
চারুতার আমি কালিমাখা লজ্জা
অপছন্দের চেনা অচেনা লগ্নে…
কৌমুদী রজনী চলে গেল সেদিন
নির্ভুল রুদ্রাণী নিপুণ আচরণে…
ঝটিকার বারি চূর্ণ বিচূর্ণ করেছে
কত শত ভাবনা না জানি…
জন্ম অসমাপ্ত মৃত্যুর নাহি অন্তিম
কায়া শুধু চিতার ফুলদানি… -
কবিতা- টুকরো মনের অল্প কথা
টুকরো মনের অল্প কথা
-শুক্রাচার্য্যটুকরো পানার ফুল ফুটেছে ভর দুপুরে…
ঘাস ফুলেদের ঘুম ভেঙেছে রং নুপুরে…
টুকরো আলোর ঝিকির মিকির অল্প কথা…
আকাশ ছাড়া নীহার বুকে ভীষণ ব্যথা…
টুকরো আলোর খামখেয়ালে গানের তালে…
টুকরো নদীর উজান বেয়ে আকাশ চলে…
টুকরো আমি টুকরো তুমি টুকরো সবাই…
টুকরো কিছু আঁকড়ে ধরে বাঁচছি তো তাই…
টুকরো দিয়ে তৈরি করা অসীম ঘরে…
অনন্তকে রাখবো এনে বন্দী করে… -
কবিতা- দূরন্ত বেলা অবেলায়
দূরন্ত বেলা অবেলায়
-শ্রী শুক্রাচার্য্যবিশাখার বিজলী গল্প বলেছে,
সমন্বয় খেলা ছলে…
লগ্ন চলেছে তরঙ্গিনী স্রোতে,
অলীক বহ্নিশিখায় হৃদয় জ্বলে…
চৈতন্য ডুবায় চঞ্চল শর্বরী,
ত্রিনয়ন অস্থিরতা জোনাকির মতো…
শূন্য অর্ণব বিতানে আলো ছায়ার ঢেউ,
জন্মের উত্তর যোনী কুন্ডে আহত…
যন্ত্রনার শিক্ষা বিগলিত আমন্ত্রণে;
সাড়া দেয় খামখেয়ালী মন…
বিষন্নতার আকাশ রামধেনু অভিমানে,
রং হারিয়েছে কে জানে কখন… -
কবিতা- একাকিনী স্রোতস্বিনী
একাকিনী স্রোতস্বিনী
-শ্রী শুক্রাচার্য্যএক নদীর স্রোত অনন্ত পথে,
কিনারায় ধাক্কা খায়…
ঠিকানার খোঁজে, শুধু বারবার
পেছনে তাকায়…
বালির সম্পর্কের শেষ নেই !
চেতনার স্রোতে নিস্তব্ধ…
অগুন্তি বালুকণা বুকে দানা বেঁধে রাখা।
খালি শোঁ শোঁ শব্দ…
হয়তো কান্না ! দিন চলে যায়,
রাতটাও কেটে গেছে…
চন্দ্রিমার বেদনার কথা; জ্যোৎস্নায়
মাখিয়ে বুক ভরেছে…
বুকের ভিতর অমাবস্যার ক্ষত চিহ্ন,
ডুকরে কেঁদে ওঠা আঘাতে…
অনর্গল অভিমানের অশ্রু নিশ্চিহ্ন,
কথা দেওয়া পূর্ণিমা রাতে…
জোয়ারে খুলেছে মনের দুয়ার,
এই বুঝি ঠিকানা…
অসংখ্য পিপাসু শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে,
মন করেনি মানা…
তবু নয়নে ভাটা পড়েছে ! শূন্য পলকে
যন্ত্রনা লুকিয়ে…
যত রাগ অভিমান মুছে গেছে, একবার বলে যা
সামনে গিয়ে… -
কবিতা- “আমি নারী আমিই পুরুষ”
“আমি নারী আমিই পুরুষ”
-শ্রী শুক্রাচার্য্য…ওরে ও মানবী…
দেহটাই যে দোতারা মন
তোদের ঘুম ভাঙ্গবে কখন…
এই তারে যে নাভীর সুর
মনের ছন্দ বহুদূর…
বল না তুই হারিয়ে যাবি
যে ঠিকানায় আকাশ পাবি
গাইবো আমি সেই বাউলী
খামখেয়ালী নাচ দেখাবি…
ওরে ও মানবী…
ক্ষিতি আজি ক্ষিপ্ত হিয়া
ব্যোম খেয়েছে শূন্য মরুত…
অগ্নি যেন অপ মানের
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ুক…
কৃষ্ণ যে তোর রক্ত বীজে
সাড়া দেবে অন্য ডাকে…
যৌনতার এক অন্য লাজে
ধরতে যদি পারিস তাকে…
ওরে ও মানবী…
ইরা তোদের একতারা যে
পিঙ্গলা যে দোতারা মন…
ওরে বাজা রে পাগল মন খুলে আজ
থাকবে না রে এ শুভক্ষণ…
জ্বলছে হোমের যজ্ঞ রূপে
সৃষ্টি রসের গন্ধ এখন…
নিসর্গের বুকে যে শব্দ কাঁপে
ওরে ঝড় তুলে দে স্পর্শে মন…
ওরে ও মানবী…
স্পন্দনে দেখ লুকিয়ে আছে
ঘুমন্ত যত শক্তি তোর; নিকষ অন্ধকারে…
জাগা রে মন জাগা ওরে
অনুভূতিহীন ঐ উপাস্থিরে…
যা মন হারিয়ে মুক্ত সুষুম্নায়
আজি তুই সেই পথ ভোলা…
মূলাধারে পিশাচী প্রাণ ভরে
অষ্টম দ্বারে মৃত্যু খোলা…
ওরে ও মানবী…
ঝংকারে কম্পন উপাস্থির শিহরিত
আপানবায়ূ ,বাউলী ডাকে সাড়া…
সে ডাক শুনে পাগল উবুন্টু
সহজিয়া আউলী দিশেহারা…
প্রাণবায়ু শব্দের খোঁজে সপ্তচক্র পথে
অচেনা নাড়ীর কামিনী কাঞ্চনে…
ওরে চমকিয়া ওঠে বজ্র নাড়ী
লাউয়ের খোলে একান্ত গোপনে…
ওরে ও মানবী…
মর্কট বৈরাগী সজ্জিত ভাবনা তোর
বাউন্ডুলের পথে মানা…
বেদনার জ্বলে অশান্ত চিত্তের
আক্ষেপে, বৈরাগ্য পাবি না…
ছিঁড়ে যাওয়া তারে হারিয়েছে স্বরাজ
প্রশ্ন উত্তরে ভরা কাল…
ওরে ছদ্দবেশী বৈরাগী হারিয়ে যাবি
থাকবে না কামিনীর তাল…
ওরে ও মানবী…
আয় প্রাণ খুলে যা নেচে যা আজ
নেইকো আমার কোনই লাজ…
থাকব আমি শ্বশ্মান বেলার সাজে
লজ্জা পেলি জন্ম মৃত্যুর মাঝে…
তোর পলকে ভাসিয়ে নেব
মোর বাঁধন খোলা তরী…
সেই খুশিতে বাউল আমি
আপন প্রেমে মরি… -
কবিতা- একাকিনী স্রোতস্বিনী
একাকিনী স্রোতস্বিনী
-শ্রী শুক্রাচার্য্যএক নদীর স্রোত অনন্ত পথে,
কিনারায় ধাক্কা খায়…
ঠিকানার খোঁজে, শুধু বারবার
পেছনে তাকায়…
বালির সম্পর্কের শেষ নেই !
চেতনার স্রোতে নিস্তব্ধ…
অগুন্তি বালুকণা বুকে দানা বেঁধে রাখা।
খালি শোঁ শোঁ শব্দ…
হয়তো কান্না ! দিন চলে যায়,
রাতটাও কেটে গেছে…
চন্দ্রিমার বেদনার কথা; জ্যোৎস্নায়
মাখিয়ে বুক ভরেছে…
বুকের ভিতর অমাবস্যার ক্ষত চিহ্ন,
ডুকরে কেঁদে ওঠা আঘাতে…
অনর্গল অভিমানের অশ্রু নিশ্চিহ্ন,
কথা দেওয়া পূর্ণিমা রাতে…
জোয়ারে খুলেছে মনের দুয়ার,
এই বুঝি ঠিকানা…
অসংখ্য পিপাসু শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে,
মন করেনি মানা…
তবু নয়নে ভাটা পড়েছে ! শূন্য পলকে
যন্ত্রনা লুকিয়ে…
যত রাগ অভিমান মুছে গেছে, একবার বলে যা
সামনে গিয়ে… -
কবিতা- ‘তুমি আছো’
‘তুমি আছো’
-শ্রী শুক্রাচার্য্যশেষ পর্যন্ত তোমাকে পাওয়ার কথা,
মন ভুলে গেছে না হয়…
তাই বলে ভালোবাসি না এখনও আমি,
এটা বলা ঠিক নয়…
পাওয়া টা আসলে সেটা ই সবকিছু জানি
কিছু একান্ত কথার স্বাক্ষী…
নাই বা হলো বন্ধ ঘরে তোমাকে ঘিরে থাকা,
মুক্তির বিরোধীতায় লাভ কী…
জানো তো তোমার দেওয়া অনেক কিছু
ছোট ছোট শব্দের ভীড় আজ…
আমাকে ভীষন ব্যস্ত করে ডেকে বলে,
আমার নাকি লেখাই কাজ…
খেয়ালী মন হারিয়ে ফেলেছে সময়ের কথা,
এখন যদিও মনে পড়ে কখনও…
আসলে আঘাত যদি নাই থাকে জীবনের পথে
ভালোবাসার মানেটাই অন্য…
তুমি চলে গেছ জেনেও মন ভাবে না তুমি নেই
কাছে ই আছো শ্বাসে আছো…
প্রেম তোমার অফুরান ছিল জানি না কতটা পেয়েছি,
মনে নেই! ওইটুকু নিয়ে বেঁচে আজও… -
কবিতা- “নিক্ষেপ স্পর্শে”
“নিক্ষেপ স্পর্শে”
-শ্রী শুক্রাচার্য্যআমায় ডেকেছে পরিতোষের অন্তরীক্ষ শর্বরী সম্ভাষণের নুর…
মনোহর অনিলের মৌল চিত্তে, ছিল কিয়ৎ অনুতাপ;
দেখেছে বিষাদের সুর…
অপটু অক্ষম লোচনে চেয়েছিলাম, নিথর হৃদয়ের মালা গেঁথে…
মহীরুহে ঝরা বিবর্ণ পুষ্প দুহাতে কুড়িয়ে নিয়েছি,
নিপীড়িত বুক বেঁধে…
বৈরিতার ভবন ভেঙেচুরে গেছে, যেথায় যা সঞ্চিত ছিল; অতল রোদনের অভিষিক্ত হৃদয় পথের ধুলায়…
তব কুন্তল কোটাল স্রোতে ভেসে গেছে,
ছিল যত বিদ্বিষ্ট ব্যত্যয়…
বনানীর কবরে সমাহিত করা রূদ্ধ শ্বাসের উচ্ছাস,
ছুঁয়ে গেছে কিছু রাগের নীরব নিক্ষেপে…
বিবিধ অপ্রসন্ন বিপুল সম্ভার,ক্ষত বিক্ষত করে গেছে
বজ্র চিত্তের আক্ষেপে…
আমি অনাহত নাভিকুন্ডের হোমে পুড়িয়েছি,
যত স্থিত ইচ্ছার স্নায়ূ জালে…
অভিষিক্ত চন্দন চিতায়,মম চিত্ত প্রেয়সীর কোমল দেহ জ্বলে…
হায় ! পিপাসার্ত প্রণয়ের আত্মহুতি রুক্ষ চিত্ত,
প্রাপ্তির খতিয়ান কাগজে রাখা ছন্দে;
শুধু স্বাক্ষী হিয়ায়…
ভেসে যায় যাক্ মহাকাশের নিয়মভঙ্গ শূন্যে,
আরও এক চেতনার খেয়ায়… -
কবিতা- অন্তর পূজারী
অন্তর পূজারী
-শ্রী শুক্রাচার্য্য...পাশে আছি মুখে যদি নাই বলি
তবু কেন ভেবে নাও ভুলে যাই…
মনে রাখি সে কথা মুখে নাই তুলি
তবে কী নীরবতায় প্রেম নাই…
যে আকাশে ধুপ হারিয়ে গেছে
সে আকাশ ই শিল ছড়িয়েছে…
মেঘ যদি তোমার ভাবনায় নাচে
হৃদয়ের বৃষ্টি সরসী ভরিয়ে গেছে…
গভীর অন্ধকারে জোনাকির মত
গাছের পাতায় লুকিয়ে আছি…
অজানা ঠিকানায় ভুল হোক পথ
তোমার ডাকে সাড়া দিতে রাজি…
মহাকাল নিয়তির ক্রান্তির পথ
জন্ম বা মৃত্যু হোক কর্মের দরজা…
নাচে বন্দী নাচে মুক্তির শপথ
আমি গৃহ শ্বশ্মানের তরজা…
আপন গহীনে উত্তর খুঁজে পাবে
ভালো করে ভেবে দেখো…
ভালোবাসা নাই বা দিলে তবে
অন্তর পূজারী আমি মনে রেখো…