-
কবিতা- মানুষটি
মানুষটি
-সুমিত মোদকঅভিমান গুলো সাজিয়ে সাজিয়ে রামধনু
এঁকে দিয়েছে আকাশের বুকে ;
নিজের বুকটা কখন যে মহাকাশ হয়ে গেছে
বুঝে উঠতে পারে নি
মহাপ্রস্থানের পথে হেঁটে যাওয়া মানুষটি ;রাতের পর রাত জেগে শুনেছে
সন্তান হারা মায়ের কান্না ,
আতঙ্কে জেগে ওঠা শিশুর সংলাপ …পলেস্তরা প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে
সময়ের অলিন্দ থেকে ;
ভেঙে পড়ছে অলীক মানুষের মেরুদণ্ড ;মানুষটি বাতাসে ছড়িয়ে দেয় আগমনী সুর ।
-
কবিতা- সভ্যতার মেরুদণ্ড
সভ্যতার মেরুদণ্ড
-সুমিত মোদকবার বার মরে যায় , বার বার জেগে ওঠে মানুষ ;
কত বার যে মরে থাকে আবার জেগে উঠে ভিতর থেকে ;
সে কারণে শেষ বারের মতো মরে যাওয়ার সময় বুঝতে পারে না জীবনের বর্ণমালা ;
অথচ , মানুষ-ই মৃত্যুকে বেশি ভয় পায় ;সরস্বতী নদী মাটির গভীরে চলে গেলে ধ্বংস হয়ে পড়ে প্রাচীন এক সভ্যতার মেরুদণ্ড ;
একটু একটু করে নষ্ট হতে থাকে হৃদয়ের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অনুভূতি গুলো ;
জন্ম নিতে থাকে আলো-অন্ধকারের গোপন রহস্য ;হয়তো মানুষ ভুলে যেতে চেয়ে ছিল সনাতন পরম্পরা সকল ;
তাই নতুন প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে পারেনি মাটি ;
যেখানে পা রাখতে পারে ;মাথার উপর আকাশ আছে ঠিকই ,
কিন্তু সেখানে যে গভীর কালো মেঘ …
গুহা মুখ থেকে বেরিয়ে এসে এক ভবিষ্যতের মা অন্ধকার আকাশের দিকে মুখ তুলে দেখার চেষ্টা করে চলেছে কালপুরুষ ;এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গল পথে পা রেখেছে
একটা জাতি , একটা সময় ;
যেখানে কোনও পাখির কলরব নেই ;
কেবলই নৈঃশব্দ্য এক ;
সূর্যের আলো ছুঁতে , রোদ্দুর মাখতে বেশ কিছু গাছ
মেঘ গুলোকেও ছুঁয়ে নেয় ,
মাটির গভীর থেকে আরও গভীরে ছড়িয়ে দেয় শিকড় ;অথচ মানুষ উপড়ে ফেলেছে তার শিকড় ,
তার ভবিষ্যৎ ;
আবার মৃত্যু ভয়ও পায় ;
আসলে বুঝে উঠতে পারে না কি সে চায় ;বার বার মরতে মরতে , সত্যিকারের মরে যাওয়ার সময়
বাঁচার প্রবল ইচ্ছা জাগে ;
আর তখন কিছু করার থাকে না ;যে জাতি সভ্যতা ছেড়েছে ;
যে জাতি সময় কে ছেড়েছে ;
ছেড়েছে অতীত , ভবিষ্যৎ , নিজেরই অস্তিত্ব …
সে জাতির কাছ থেকে কেবল মৃত্যু ছাড়া
আর কি আশা করা যায় ;প্রথম ভোরে আসনে ধ্যানস্থ হলে জেগে উঠে
মুলাধার চক্র , চৈতন্য …
তখনই ফিরে ফিরে আসে পূর্বপুরুষের চলার পথ
ভবিষ্যতের সুর ;একটু একটু করে সকালের আলো ফোটে ;
একটু একটু করে জীবনের স্বরলিপি সেজে ওঠে ;
আর তখনই উত্তর পুরুষ গেয়ে ওঠে জীবনের গান ;
গনদেবতার গান –
জাগো বোধ , জাগো বিবেক , জাগো মনুষ্যত্ব ,
জাগো চেতনা , জাগো হৃদয় , জাগো অমৃত … -
কবিতা- মেঘ মল্লার
মেঘ মল্লার
-সুমিত মোদকএক এক করে যখন সকলে ফিরে আসে মোহনায়,
তখন পূর্ণিমার চাঁদও নেমে আসে নদীর বুকে,
আর ঠিক সে সময় মহাকাশ নারী হয়ে ওঠে …পুরুষ কোনও দিনও জানলো না কখন
অমাবস্যার বুক চিরে বেরিয়ে আসে ধূমকেতু,
কেবল মাত্র এটুকুর খবর রাখে
সামনে আর কতটা পথ বাকি আছে।আকাশ থেকে নেমে আসা জ্যোৎস্না-রেণু
একটু একটু করে সোহাগ মাখিয়ে দিচ্ছে
সাদা সাদা ফুলের পাপড়ি,
আর সেখান থেকে শুরু হয় রূপকথারাা।যদিও মানুষগুলো এখন আরশি নগরে চলে গেছে
হারিয়ে ফেলেছে একের পর এক সভ্যতা;
তবুও কেউ কেউ খুঁজে চলেছে নীরবে,
প্রাচীন সভ্যতার পরম্পরার সূত্র…এখন এখানে এক টানা ঝিঁঝির শব্দ
দূরে, বহু দূরে চাপা ফিসফাস …
আশেপাশে কোথাও মানুষ দেখা যাচ্ছে না
শ্মশান জুড়ে অস্পষ্ট ছায়া …নদীর বুকে নারী ভাসছে
পুরুষ ভাসছে মেঘের দেশেে,
অথচ, কোথাও কোনও বৃষ্টির স্বরলিপি নেই ;ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আছে মেঘ মল্লার ।
-
কবিতা- এক পরম্পরার নাম
এক পরম্পরার নাম
–সুমিত মোদকভারতবর্ষ, সনাতন এক পরম্পরার নাম;
ভারতবর্ষ, দেবভূমির আর এক নাম;ভারতবর্ষ, আমার জন্মভূমি, আমার মা;
এখানে দস্যু রত্নাকর, ঋষি বাল্মীকি হয়ে ওঠেন,
রচনা করতে পারেন মহাকাব্য – রামায়ণ;
এখানেই কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বেদব্যাস রচনা করেন
আরেক মহাকাব্য– মহাভারত;এখানে দেবাদিদেব মহাদেবের আদি বাসভূমি;
এখানে সতীর একান্ন পীঠ;
এখানেই কপিলমুনির সাংখ্য দর্শণ;
শূন্য তত্ত্ব …এখানে সকলেই আর্য, সকলেই অনার্য;
সকলেই রাজার রাজা …
সকলেই ভারত মায়ের সন্তান;
কেবল আজ নয়, সেই হাজার হাজার বছর আগে থেকেই;যে দেশের মাটিতে সোনালী ধান ফলে, গম ফলে,
মাঠে মাঠে দুগ্ধবতী গাভী চরে …
সে দেশের শ্রীকৃষ্ণ তো আড়বাঁশিতে সুর তুলবেন,
যুদ্ধ ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে গীতা-র বাণী শোনাবেন;নতুন করে জেগে উঠছে একের পর এক নালন্দা;
একের পর এক আর্যভট্ট, বরাহমিহির, খনা, চাণক্য …প্রতি মুহূর্তে সমুদ্র মন্থনে উঠে আসে অমৃত কুম্ভ,
লক্ষ্মী;
গরলটুকু পান করে নেন নীলকন্ঠ;
জ্যোতিরলিঙ্গ নিয়ে জেগে থাকে আমার দেবভূমি,
আমাদের সনাতন ভারতবর্ষ;ভারতবর্ষ, কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের নাম;
ভারতবর্ষ এক সুপ্রাচীন সংস্কৃতির নাম;
এখানে প্রতিটি মানুষের হৃদয় সে কারণে এতো সুন্দর, পবিত্র;
জেগে থাকে রাষ্ট্র বোধ, প্রেম …এ দেশেই আমার জন্ম, আমাদের জন্মান্তর।
-
কবিতা- সভ্যতার আধার
সভ্যতার আধার
–সুমিত মোদকপশ্চিম আকাশের এক মুঠো আলো নিয়ে রেখে দিয়েছি
পুব আকাশে;
সে আলো বুকের ভিতর ছড়িয়ে পড়ে;
সে কারণেই সারা রাত জেগে
মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বেদব্যাসের সামনে বসে শুনি
বেদ মন্ত্র;একটা একটা করে নক্ষত্র জেগে উঠলে
নতুন করে জন্ম নেয় সমুদ্র-ঢেউ,
না বলা কথা;
ফিরে আসে হারিয়ে যাওয়া প্রেম, প্রেমিকা;কেন জানি না অলৌকিক পরীগুলো
একটা বলয় সৃষ্টি করে ঘিরে রেখেছে;
তার ফলে কখনও ছুঁয়ে দেখছি পুবের আকাশ,
পশ্চিমের আকাশ, উত্তর ও দক্ষিণের আকাশ;
ছুঁয়ে চলেছি একের পর এক সমুদ্র-ঢেউ;হয় তো এখনও উদাস মাঠের আলপথে
বসে আছে বাস্তু-পেঁচা;
সে’ও ভোরের সঙ্গে সঙ্গে ডানা মেলে দেবে
আরেক স্বপ্নের দিকে;
যেখানে বিভোর হয়ে থাকে আমাদেই উত্তর পুরুষ;সেই এক মুঠো আলোটুকু নিয়ে পুবের সূর্য
আলোকিত হয়ে উঠবে,
জন্ম দেবে অন্য আরেক পৃথিবীর;
যেখানে থাকবে না সমাজের এ জটিল অঙ্ক;
কেবলমাত্র তরঙ্গ …
আর সেই তরঙ্গ থেকে উচ্চারিত হবে
আমাদেরই পূর্বপুরুষের বৈদিক মন্ত্র,
সভ্যতার আধার । -
কবিতা- এঁকে চলেছে
এঁকে চলেছে
–সুমিত মোদকজীবনের কোনও ছবি হয় না ;
সব ছবি মৃত্যুর …
একা এক নির্জন দুপুরে একের পর এক
ছবি এঁকে চলেছে শিল্পী ,
ঈশ্বর ;
ঈশ্বরের কোনও নাম হয় কি !
হয়তো হয় !
জানা নেই ;সকাল থেকে দুপুর ,
দুপুর থেকে রাত , গভীর রাত …
একটু একটু করে হৃদয়টা মেলে ধরে
প্রেমের জন্য পাগল হয়ে গেছে শিল্পী ;
শিল্প তখন গোপন প্রেমিকা এক ;যদিও নদীর জলে ভেসে যায়
জলজ অভিমান ;
তবুও মনে পড়ে সে দিনের সেই ওড়নার
না বলা কথা গুলো ;আদিবাসী রমণী জানে কি ভাবে
কুড়িয়ে আনতে হয় রাঙা পলাশ ,
দুপুরের রোদ্দুর ;
আর তখনই খ্যাপা বাউল গান ধরে ;
সুর উঠে জীবনের .…ঈশ্বরের সঙ্গে প্রতি দিন দেখে হয় ,
কথা হয় ,
মৃত্যুর কথা , আত্মশুদ্ধির কথা …
অথচ , জানা হয়নি নাম ;চিতাকাঠ বাষ্প হয়ে উড়ে যায়
মহাশূন্যের দিকে ;
মহাকালের কাছে …
সেখানে মেঘ হয় না ;
হয় না জল কণা ;অথচ , শিল্পী সেখানে খুঁজে নিতে চায়
জলের স্মৃতি কথা ,
জীবনের ধারাপাত ;একটা একটা করে ছবি টাঙিয়ে রাখছে
গোটা এক আকাশ পথে । -
কবিতা – রাতের স্বরলিপি
রাতের স্বরলিপি
–সুমিত মোদক– নামটা যেন কি বলে ছিলে!
– চাঁপাডাঙা;
এ রকম কারোর নাম হয় কখনও!
– কে বলেছে হয় না, আমার তো নাম;
– বাড়ি যেন কোথায় বলে ছিলে!
– বলিনি তো, আমি কিছুই বলিনি;
কিছুই বলি না কাউকে;
সবটাই তোমার কল্পনা …
– তা হলে তোমার দু’ চোখে আমার সকল রূপকথারা
মেলে দিক ডানা;
তার পর পক্ষীরাজের ঘোড়ায় চড়ে উড়ে যাব
কোনও এক অচিনপুরে;
– তা তো হবে না, আমাকে তো থাকতে হবে
এ পাড়াতে;
জাগতে হবে রাতের পর রাত
ঘামের গন্ধ মেখে;
– চলো না, দুজন মিলে পালাই;
– কোথায় পালাবে! চারিদিকে যে অন্ধকার এক পাঁচিল;
তোমার কাছে কাব্য মানায়, মানায় পাগল প্রেমিক ;
যুদ্ধ করা তোমায় সাজে না;
– যুদ্ধ আমি করছি রাত-দিন;
নিজের সঙ্গে, সময়ের সঙ্গে অসময়ে;
কেবল তুমি আমাকে ছুঁয়ে থাকো;
আর আমি ছুঁয়ে থাকি তোমার ভিতরে জেগে থাকা
আমারই বেঁচে থাকার ঈশ্বর। -
কবিতা- আগুন-পলাশের দেশে
আগুন-পলাশের দেশে
–সুমিত মোদকবসন্তের আলো গায়ে মেখে এসো
আমাদের এই লালমাটির দেশে,
আগুন-পলাশের দেশে;তুমি এলে জানি,
গাছে গাছে কোকিল ডেকে উঠবে;
পলাশ তার ফুল টুপটাপ করে বিছিয়ে দেবে
তোমার ফিরে আসার পথে;
আর মাদলের বোল উঠবে –
ধিরতা-ধিতাং -ধিরতা-ধিতাং …
বসন্ত বাতাসের শরীর জুড়ে;জানো তো টিলার মাথার উপর দিয়ে
সূর্য্যটা যখন পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে
তখন বুকের ভিতর শব্দ ওঠে;
তোমার শব্দ, ভালোবাসার শব্দ– আসি …তার পর মাস গেল, বছর গেল,
বছরের পর বছর গেল,
তোমার আর আসা হলো না;
তোমার আসার অপেক্ষায় থেকে গেলাম
আমার মাটিতে;জানি , তুমি হয়তো ভুলে গেছো
আমার চোখ, আমার ঠোঁট, আমার …
আমাদের …
কিন্তু, তুমি কি ভাবে ভুলবে বসন্তের আগুন-পলাশ!
যে তোমাকে আগুন জ্বেলে ছিল বুকের ভিতর;
যে তোমাকে দিয়েছিল ভালোবাসার শব্দ,
সে যে আজ আগুন জ্বেলেছে এ লালমাটির দেশে,
এ টিলাভূমির দেশে;আমি এখন টিলার উপর দাঁড়িয়ে
আকাশ ছুঁয়ে থাকি;
তোমার আকাশ, তোমার স্বপ্ন, তোমার শব্দ …
তুমিই তো শিখিয়েছিলে– শব্দই ব্রহ্ম …
অথচ, তুমি আজ নাগরিক বাউল;
আমি সেই দিন্দা ঝোরা;
ঝরঝর করে প্রতিনিয়ত দু’ চোখ থেকে
জল ঝরে পড়ছে,
আবার সে জল বাষ্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে শূন্যে,
মহাশূন্যে;মহুলের গন্ধে বুনো হাতির দলও
ঢুকে পড়ে গ্রামে;
যেখানে আটপৌরে জীবনের ধারাপাত;
যেখানে খসে পড়া পাখির পালক
জায়গা করে নেয় সাঁওতাল রমণীর মাথার খোঁপায়;যদি কোনও দিন ফিরে আসো
এ আগুন-পলাশের দেশে,
এ নুড়ি কাঁকুরে পথে;
সে দিন দুজন মিলে টিলার উপরে উঠে
পূর্ণিমার জ্যোৎস্না মাখবো,
আর তোমাকে ফিরিয়ে দেবো তোমারই প্রতিশ্রুতি;তুমি ভালো করেই জানো
আমার সব আছে, সব, সব কিছুই …
এই আমার আগুন-পলাশ,
এই আমার লাল মাটির ধুলো,
এই আমার টিলার উচ্চতা;
এই আমার কুমারী নদী,
যে কি না আজও প্রবাহিত পাথর নুড়ি
ছুঁয়ে ছুঁয়ে;
ঠিক আমার মতো;
ঠিক আমাদের মতো।। -
কবিতা- আমার সরস্বতী
আমার সরস্বতী
-সুমিত মোদকনদীটির নাম সরস্বতী ;
মেয়েটির নামও …নদীটির নাম শুনেছি , মেয়েটির নামও …
নদীটি এখন মাটির নিচে , পুঁথির বুক জুড়ে ;
সভ্যতার পরম্পরায় শাস্ত্র কথা মুড়ে ;মেয়েটি কোথায় কেউ জানে না !
সরস্বতীর রূপ কেউ চেনে না !কেবল জাগে মিথ ;
আর্য মন্ত্র উচ্চারণে ভক্তি আসে প্রাণে …
আদর্শ গড়ে ভীত ;যদি কোনও দিন মেয়েটির সঙ্গে দেখা হয়ে যায়
তাকে জিজ্ঞাসা করবো –
কখনও তুমি ছুঁয়ে দেখেছো আকাশের কালপুরুষ !আর নদীটির সঙ্গে দেখা হলে বলবো –
ইচ্ছা আছে কি আগের মতো প্রবাহিত হতে ,
সূর্য-স্নান করতে !এখন আমার বসন্ত পঞ্চমী ;
এখন আমার মাথার উপর মহাকাশ ,
দক্ষিণের বাতাস ;
তবুও , অঞ্জলির ফুল দু হাতে …প্রতিটি ঘরে আমার সরস্বতী ;
প্রতিটি হৃদয়ে আমার হৃদয়-নদী ;সে কারণে প্রতি মুহূর্তে তোমাদের প্রণাম করি ।
-
কবিতা- সহজিয়া
সহজিয়া
-সুমিত মোদকজোয়ার আসবে প্রথম ভোরে …
জোয়ার আসবে অজয় নদে ;
জোয়ার আসবে বাউল সুরে
কেন্দুলিয়ায় ;একটু একটু করে ভরে উঠছে গোঁসাই-আখড়া
হৃদয় ;
সেই কবে পথে নেমেছি মনে নেই ;
মনে নেই ব্যর্থ প্রেমের দিনটি ;
কেবল জেগে থাকে কন্ঠিবদলের রাত
বনজ্যোৎস্না ;কবি জয়দেব একের পর এক
চরণ সৃষ্টি করে ;
আর বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে পদ্মাবতীর বুকের গভীরে ,
আরেক পরকীয়া প্রেমের গভীরে ;কোনও সময় বদলায়নি ;
বদলায়নি কাল …
সে কারণেই সুর ভাসে বাতাসে বাতাসে ;
বেঁচে থাকে কাব্য ও কবি ;লাল মাটির দেশ ,
হলুদ সরষে ফুলের দেশ জেগে উঠে ;
জেগে থাকে ;
জন্ম নেয় সুর , সপ্তসুর ;নদীর এপার থেকে ওপারে হেঁটে যাই ;
ওপার থেকে এপারে …
খুঁজে চলি নিজেকে ;
খুঁজে চলি সংক্রান্তি সকল ;বাউল আসে , বাউল যায় ,
থেকে যায় সহজিয়া এক পরম্পরা ।