আষাঢ়ে প্রেম
– অলোক শীল

সাদা কালো বা রঙিন
রঙিন’এ আসক্ত,
ভালোবাসা’কে বলা হয় অপমান!
তুমি জানো সুন্দরী নারী?
এক-হাজার বছরের প্রেম ভালোবাসা
আজ আষাঢ়ে গল্প

সেদিনও প্রেম ছিল অল্প-সল্প
হুংকারে ভয়, তুমি চরিত্রহীন!
দিন যাবে, বছরও, আমি তুমিও..
মনে পড়ে সেদিন? ভাত ঘুমের স্বপ্নে
তুমি তুমি,
আজ অতিক্রমের অতীত
হায়রে ভালোবাসা সর্বনাশা।

মৃত্যু..
-অলোক শীল

সময়ে অসময়ে নিঃশ্বাস গোনা,
আমি ছোঁয়াছে
চুপ করে থাকো, নিমন্ত্রণ নিশ্চিত
আজ কাল কিংবা পরশু..

শেষকৃত্যে অপরিচিত মুখ,
আধপোড়া মাংসে নিশাচরের পেটপুজো
তারপর তুমি!
আর
কবিদের মুখে মৃত্যুর সীমাহীন সংজ্ঞা..

অবেলায় ঝড়
-অলোক শীল

বাদলা বেলায় অভিশপ্ত রোদের হাসি,
মিনিট পাঁচেক আগে ছিল ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি
জানা ছিল না, ঝড় এসেছিল অবেলায়
সতেজ আজও স্মৃতিরা বন্দি মুঠোফোনে।

একাকী পথচলা অভ্যাসটা নতুন
ঘড়ির কাঁটা ছুটছে দুর্বার গতিপথে
অজানা ঠিকানা গোধুলি জানে সে ভালোবাসা
কাছে টানে ভেসে আসা মহুয়ার গান।

গড়ে ভাঙে নদী জানে আত্মকথা
বুকের বাম পাশে ঘর বেঁধেছে অপরিচিত ব্যাথা
রোমান্টিক কবিদের বিরহ কথা ।

ভালোবাসা যাবে না আমায়…
-অলোক শীল

আগোছাল জীবন নিয়ে আমি ব্যস্ত,
আগেই বলেছি, ভালোবাসা যাবে না আমায়
সমুদ্রের নোনাজলে আমার খেলাঘর
কখনো চাঁদ তারায় আমিটা হারায়।

বলছি না, ভালোবাসা যাবে না আমায়
তুমি দেখেছো মেঘের দেশের নীল পাহাড়?
গরমকালে চোখ ধাঁধানো কুয়াশার খেলা
ছুঁতে চাইলে পাবেনা আমায়,
ঐখানে আমার ঘর।

ভালোবাসাবে আমায় তবে!
পান্তা ভাত নাস্তাতে, নেই পাউরুটি মাখন
সাইকেলে চড়ে রাতে দুজনে জোনাকি গায়ে মাখবো
বৃষ্টি ভিজবো ছেঁড়া ছাতায়
পাহাড়ি ফুল দেবো ভালোবাসার উপহার
লাল নীল সবুজ হলুদে গা ভাসাবো দুজনে
ভালোবাসাবে আমায় ?

বলছি না ভালোবাসা যাবে না আমায় …

বাঁচার তাগিদ
– অলোক শীল

চুপ, প্রাণে নির্মম প্রহার,
বিকেলের আড্ডায় চায়ের সঙ্গে গরম সিঙ্গারা
আবারও বাঁচার তাগিদ
আরাম প্রিয় কবিদের নতুন লেখা
আধুনিকতার ছোঁয়া।

শ্বাস নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীরা হাত তোলো
নয়তো সারি পাতবে ছাই আর অস্থি
কুকুর শকুন আসাক্ত পোড়া মাংসে
মনে তবু বাঁচার ইচ্ছা প্রবল।

পকেট ভর্তি টাকার অহংকার
খাওয়া নেই, পেট জর্জরিত কান্নায়
জাত পাত কোথায় গেলো রে
আবারও শখ নেশা নতুন কবিতা সম্পদনার।

সবশেষে
-অলোক শীল

ধরে নে!
আজ আমার শেষ যাত্রা, তুই কাঁদবি?
না- না, আমি তো ওসব দেখবো না
নাও কাঁদতে পারিস!
হতে পারে তুই,
হয়তো বা অন্য কারুর প্রেমে
মেসেঞ্জারের নীল আলো প্রেম প্রেম লাল দেখছিস

আর
আমার দেহটা ততক্ষণে ছাই হয়ে গেলো
তুই গভীর ভাত ঘুমে প্রেমের স্বপ্নে মগ্ন

মনে পড়বে না আমার কথা বলা
বা কবিতাগুলো?
আর তোর অপছন্দের গাল ভরা দাড়ি গোঁফ

ধীরে ধীরে অনেকটা দিন মাস বছর
ভুলতে বসলো সবাই আর তুইও..

তার পর যদি ফিরে আসি আবার
নিছক গল্প মনগড়া আমার
সবশেষে॥

দিনগুলো
– অলোক শীল

পসরা গুটিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা,
দিনগুলো পিছিয়ে কেমন যেন পড়েছে
মুহুর্তের ভালোবাসা সবই মুঠোফোনে
দেখতে কি দারুণ লোকচোক্ষে!

আবার তাজা রক্তের দাগ হৃদয়ে
শরীর জুড়ে মৃত্যু শোক অবিরত
জীবন যুদ্ধে জয় পরাজয়
আবার কি জানার আছে শেষ ইচ্ছে?

ঘুমের ঘোরে ডাকছে যমরাজ
আজ নয়তো কাল
নেশায় দোলে শহর আর লোক
সবাই অত্যাচারিত অবহেলিত
তবুও সবাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

ইচ্ছামৃত্যু
– অলোক শীল

বিনীদ্র রাত্রি যাপন, পর নাকি সবাই আপনজন;
গ্লানিতে অবহেলায় অপমানে টইটুম্বুর,
রোমকূপ আমার হতাশাগ্রস্ত
ধার দেনায় তর্কে কয়েক প্রস্থ..

জানো কি অবসাদে অক্ষর গোনা?
আরো কয়েক হাজার মাইল পথচলা
তারপর একটু বিশ্রাম
আবার একই পথ ধরে হাঁটা..

অবসরে আতকে ওঠা
যেমন আজকের ভুমিষ্ঠ শিশু
একটু ভালোবাসা মায়ের ছোঁয়া
তোমাদের মতো আমিও নিজেকে সাজিয়েছি

একফালি চাঁদ, মেঘের গল্প
আঁকাবাঁকা পথে খোঁজে রোজ মৃত্যু-ইচ্ছামৃত্যু_

” কাটাকুটির গল্প “
– অলোক শীল

ক্রমশ হারায় প্রাণ, ভয় হয় অদ্ভুত বাস্তবে;
বিশে সত্যি এবার মিশেছে বিষ,
না কি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের প্রস্তুতি?

চাকুরিজীবি সামান্য অবলম্বন
প্রকৃতির করাল গ্রাসে ভাঁরায় হাত
এবার, জীবন জীবিকা শিখিয়েছে বাঁচার তাগিদ!

প্রসংসা মানপত্র দেয়াল শোকেসে সাজায় ভালো
ক্ষিদের জ্বালা ‘ভাত’ চেনেনা জাত বর্ন ধর্ম,
আবার চেষ্টা একটু শ্বাস নেওয়ার

আমিও জীবনের শেষ প্রান্তে, যুদ্ধের যোদ্ধা,
এ-যুদ্ধে লড়বো নইতো মরবো…

“লুইত”
– অলোক শীল

জানো তুমি সব লুকানো ব্যাথার আর্তনাদ
রক্তক্ষরণ যন্ত্রণা মিথ্যে অপবাদ আঘাত
তার মতোই বাঁচাতে চেয়েছিলাম বড় হয়ে
সব সহ্য করার ক্ষমতা নিয়ে॥

কিন্তু কই বাঁচতে পারলাম তার মতো
কিন্তু সাক্ষী আছে সে তার উদ্যাম গতিতে চিরে যাওয়া যন্ত্রণা

লুইত তোমার মতো আরেকটা জীবন চাই

তোমার জলধারার মতো মনকে শক্ত করতে চাই
হাজার ঝড় তুফান আসুক তবুও বাঁচতে চাই বাঁচার মতো

কতো মৃত্যু মিছিলের সাক্ষী তুমি
কতো কবির লেখনীতে সামিল তোমার নাম
আমিও তোমার মতো হতে চাই

তোমাকে নিয়ে আরো কবিতা গল্প লিখতে চাই
তোমার হিমালয়ে আবির্ভাব সম্পর্কে আরো জানতে চাই।