• কবিতা

    কবিতা- লাশ

    লাশ
    – সুব্রত আচার্য্য

    লাশ ভেসেছে ! লাশ ভেসেছে !
    খবরটা ছড়িয়ে পড়ে বাতাসের গতিতে , শহর থেকে গ্রামে। গ্রাম তখন ঘুমিয়ে ছিল। সারাদিনের ব্যস্ততা , যানজট , কোলাহল তারপর রবিবার , ছুটির দিন , একটু দেরিতে ঘুম ভাঙবে শহরের। ততক্ষণে কাগজে- কাগজে , চায়ের দোকানে , পাড়ার রকে ছড়িয়ে পড়েছে খবরটি।

    আমরা খবর পেতেই দেখতে গেলাম। দেখি জীবন্ত লাশের ভীড়ে শুয়ে আছে বছর কুড়ি- বাইশের নিথর এক দেহ। নিথর দেহটি যেন সবুজের অঙ্গিকার। পুলিশ এসে সরেজমিনে সবকিছু দেখছে।

    আজ এই ফাগুনে ভেসে ওঠে কুড়ি থেকে বাইশ বছরের লাশ। উপচে পড়া ভীড়ে কারা যেন বলে উঠলো , দেখতো ভালো করে কোন দলের লাশ। আমাদের কেউ নয় তো ? কখাটা শুনে চমকে উঠলাম। লাশের আবার দল হয় না কি !

    রবিবারের সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো। আমার মাথার ভিতর ঘুরতে থাকে সেই শব্দ গুলো। শব্দের পর শব্দ বসাতে বসাতে এগিয়ে যাই মানচিত্রের দিকে , কখনও নিজের চারণভূমিতে , কখনও- – – – -।
    লাশের স্তুপে আজ তুমি। হয়তো আমি আগামীকাল। হয়তো বা , হয়তো বা জীবন্ত লাশ।

  • কবিতা

    কবিতা- আমি ফরিদ পুরের মেয়ে

    আমি ফরিদ পুরের মেয়ে
    -সুব্রত আচার্য‍্য

     

     

    আমি ফরিদ পুরের মেয়ে , মা বলেছিল। দেশ জুড়ে যখন দাঙ্গা হল, আকাশে – বাতাসে বারুদ আর বারুদ। রাজপথের পথে পথে চাপ চাপ রক্ত। প্রতিটি রক্ত বিন্দু দিয়ে প্রতিবাদের ছবি আঁকা। আমার জন্ম হল , জন্ম লগ্নে না বেজেছিল শঙ্খ , না ছিল হাসি। মা শুধু শত চুম্বনে আগলে রেখেছিল আমায়।

    জানোতো , আমার কোন জন্ম লগ্ন নেই। জন্মদিনও নেই। জন্মদিন কেউ কোনদিন পালন করেনি আমার। দূর থেকে দেখেছি , ঐ বড়লোকদের জন্মদিন পালন উৎসব।
    জানোতো , বেশ কয়েকদিন আগের কথা , চৌধুরীদের পাড়ায় হঠাৎ জ্বলে উঠল বাহারি আলো , সঙ্গে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত , প্রতিবেশীরা সব দল বেঁধে একে একে এগিয়ে যাচ্ছে মাষ্টার মশাইয়ের বাড়িতে , মহা ভোজের আয়োজন। মাষ্টার মশাইয়ের বাড়িতে একটা বিলেতী কুকুর , শহর থেকে আনা , তার জন্মদিন।

    আমার কোন জন্ম লগ্ন নেই। নেই জন্মদিন। একদিন মায়ের কাছে খুব কেঁদে ছিলাম , বলেছিলাম এবছর আমার জন্মদিন পালন করতে হবে। পরমান্ন খাওয়াতে হবে। মা বলেছিল , তোর জন্ম লগ্নে তোর বাবাকে ওরা – – – – -।
    মা আর আমি একে অপরকে জড়িয়ে খুব কেঁদেছিলাম।

    আমি আর জন্মদিন বা পরমান্নের জন্য বায়না করিনা। কেঁদেও উঠি না। মায়ের চোখের জলে ভিজতে ভিজতে আমার কণ্ঠ আরও শাণিত হয়। স্বরলিপি বিহীন সুর আমি আজও শুনতে পাই। মনে হয় কেউ আমায় ডাকছে।

    আমি ফরিদ পুরের মেয়ে , মা বলেছিল। যার জন্ম লগ্ন নেই। নেই কোন জন্মদিন। দূর থেকে দেখেছি জন্মদিনের উৎসব।

  • কবিতা

    কবিতা- কালো মেয়ের কালো অধ‍্যায়

    কালো মেয়ের কালো অধ‍্যায়
    -সুব্রত আচার্য‍্য

    মা বলেছিল , রঙে মরা মেয়ে —- ব‍্যাসন মাখো।
    ঠাকুরমা বলেছিল , ওসব কিছুই নয় , কাঁচা হলুদ মাখো।
    বন্ধুরা বলেছিল , বাজারে এখন কত নামি-দামি ফেস ওয়াস , ফেস প‍্যাক আছে ঐ গুলো ব‍্যবহার কর।
    ঘটক মশাই বলেছিল , ওদের আসতে বলব বিকেলে , রোদ্দুর পড়ে গেলে।
    পাত্র পক্ষের বাবা বলেছিল , নগদ কত দেবে ?
    আর তুমি বলেছিলে , পালিয়ে যেতে।
    শুধু বাবা বলেছিল – – – – – – -।

    আর কত ! ছোটবেলা থেকে এভাবেই পালিয়ে বেড়িয়েছি সমাজের সেই কালো অধ‍্যায় থেকে আজ এই আধুনিকতম বর্ণপরিচয়ে। শুধু অধ‍্যায়ই পরিবর্তন হয়েছে। ক্লান্ত মন , ভারাক্রান্ত নয়নে জীবনের স্মৃতি গুলো ভেসে আসছে কনে দেখা আলোয়। আর কতবার! পাত্র পক্ষের সামনে বিজ্ঞাপনী পণ‍্য হবো।

    নিন্দায় ঝলসে ওঠা শরীর আগুন খোঁজে। স্মৃতির চাদরে বিশ্রাম নিচ্ছে সময়। হস্তিনাপুর থেকে গান্ধার , একই ছবি ভেসে ওঠে।

  • কবিতা

    কবিতা- শেষ বিকেলে

    শেষ বিকেলে
    -সুব্রত আচার্য‍্য

    শেষ বিকেলে , ছায়া যখন
    দীর্ঘ হয় , দিগন্তের শেষ ঠিকানা থেকে ভেসে আসছে মৃত্যুর গান। সময়ের অলিন্দে শব্দ পোড়ার দাগ। মানুষের মিছিলে মানবতা মরে।

    চেনা অচেনার গোপন ছন্দ বেয়ে নেমে আসছে উত্তাপ। উত্তাপে উত্তাপে গোধূলি নামে।

    দুধ সাদা রঙের পায়রাটা , যে একসময় শান্তির কথা বলত , সেও আজ অন্ধকারে। চেনা ছন্দ কিভাবে অচেনা হয়ে যায়
    তা ঐ দুধ সাদা রঙ আর পায়রাটাই জানে। দূর থেকে ভেসে আসছে চাতকের কণ্ঠ স্বর। বেলা অবেলায় হারাতে হারাতে হারিয়েছি দুধ সাদা শব্দ – ।

    নীলচে গাঢ় শোক জমা হয় বুকের ভিতর। সেলাই করা ভাগ‍্য শুধুই স্বপ্ন দেখায়।

    স্বপ্নে বাঁচি – স্বপ্নে মরি ,
    স্বপ্ন দেখি রোজ।
    দিগন্ত জুড়ে আগুন আভা ,
    কেউ রাখে-না খোঁজ।

    জ্বলছে আগুন , পুড়ছে সময়।
    মানবতা হচ্ছে চুরি।
    ভাগ‍্য শুধু স্বপ্ন দেখায় ,
    আঁধারে আঁধারে মরি।

  • কবিতা

    কবিতা- প্রেমিকের অক্ষর

    প্রেমিকের অক্ষর
    -সুব্রত আচার্য্য

     

     

    অন্তিম অভিমানের জলরঙে ধুয়ে যাচ্ছে সময়। প্রেমিকের অক্ষরে অক্ষরে কান্না। বোবাচোখে তুমিও দেখো- ; আমিও…! গৃহস্থলীর লৌকিকতা চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঝরে পড়ছে গোপন রোদ্দুর। শর্ত বিহীন শব্দেরা জীবনের জলরঙে নিজের ছবি আঁকে ।

    বাতাসের সাঁকো দুলে উঠলে জোছনাও লজ্জা পায় । এক হৃদয় ভালোবাসার পর , যে প্রেমিক কবিতা লিখতে চেয়েছিল-, সেও আজ অপাঙক্তেয় !

    তাহলে কি অক্ষরে অক্ষরে শুধু বর্ণমালাই রচিত হবে ? ক্ষুধার্ত সংসারে আঁধারে আঁধারে স্বপ্ন মেশে। দাউদাউ করে জ্বলে উঠছে ফুটপাত।

    নিরবতায় মোড়া উপবাসী চাঁদের কাছে রেখে যাচ্ছি আমার স্বপ্ন।

    সময় লিখছে সময়ের পাণ্ডুলিপি। ঘড়ির কাঁটায় ঝুলে আছে স্বপ্ন – সময় – আপন অধিকার।

  • কবিতা

    কবিতা- ভালোবাসা’র জন্য

    ভালোবাসা’র জন্য
    -সুব্রত আচার্য্য

    আমি মাকে আর-একবার দেখতে চাই , আরও একবার দেখতে চাই আমার মাতৃভূমি – ভারতবর্ষকে।

    মায়ের আলতা পরা পা কিংবা নিকনো উঠান , এক একটা ভারতবর্ষের ছবি আঁকা। শৈশবের দুষ্টুমি মাখা বিকাল আর মায়ের আঁচলের ঘ্রাণ , আজানে – শঙ্খ ধ্বনিতে আজও খুঁজে বেড়াই আমার মানচিত্রে ।

    মা তুমি কেমন আছো ? তোমাকে কতদিন দেখিনি ! তুমিও তো – – – – – -।
    তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে মা। তুমি খুব কষ্ট পেয়েছিলে , না মা ! মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম , ওদের মুখ
    দেখে। যারা আমার দেহে পাঁচ পাঁচটি বুলেটের আঘাত করেছিল , ওরা আর কেউ নয়- সিরাজ আর শিবু ।

    সিরাজকে তো ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি , ও একটু ডাকাবুকো। ওর দিদি সেলিমা আমার সঙ্গে পড়তো। ওরা প্রতি বছর দূর্গা পূজোয় আমাদের বাড়িতে আসতো। সারাদিন হাসি , মজা , আর খাওয়া দাওয়ার পর সন্ধ্যায় একসঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাওয়া। আমরাও যেতাম ঈদের সময় ওদের বাড়িতে। সিরাজের মা আমাকে খুব ভালোবাসতো। আমিও – – – -।
    শিবু তো , ও আমার পাড়ার ছেলে। ছোট বেলায় আমরা লুকোচুরি খেলতাম , কতবার একসঙ্গে সিনেমা দেখতে গেছি , কালী পূজো – দূর্গা পূজোয় চাঁদা তুলেছি একসঙ্গে।

    মাগো , খুব কষ্ট হচ্ছিল , যখন যন্ত্রণায় প্রাণটা বেরিয়ে যাচ্ছিল আমার শরীর ছেড়ে। খুব দেখতে ইচ্ছা হচ্ছিল তোমাদের। চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠছিল মা তোমার মুখটা আর সেলিমার মুখটা।

    মা তুমি বলেছিলে এবছর দূর্গা পূজোয় সেলিমাকে একটা শাড়ী কিনে দেবে। শাড়ী পড়লে সেলিমাকে খুব সুন্দর দেখায়। আগুন রঙ ওর খুব প্রিয়। অথচ – – – – আগুনকেই ও বেশি ভয় পেত। মা, সেলিমা এখন কেমন আছে ? ও ভীষণ কেঁদে ছিল না ! তুমি আর কেঁদো না , মা। তুমিই তো শিখিয়েছিলে ভালোবাসার জন্য সব কিছু ত‍্যাগ করতে হয় , কোন কিছুর জন্য ভালোবাসা ত‍্যাগ করতে নেই।

    ওসব কথা থাক মা। যারা আমার দেহে পাঁচ পাঁচটি বুলেটের আঘাত করেছিল ওরা কেউ আতঙ্কবাদী নয়। ওরা পাকিস্তানীও নয়। ওরা আমার পূর্ব-পরিচিত- আমার আপনজন !।

    আচ্ছা আতঙ্কবাদী কারা ? ওদের কেমন দেখতে ? ওরা কোথায় থাকে ? ওদের মা আছে- ? আর ভালোবাসা ?ওরা কি পারে ভালোবাসার জন‍্য সব কিছু ত‍্যাগ করতে ?

    আমি আর একবার মা’ তোমাকে দেখতে চাই , আরও একবার দেখতে চাই আমার মাতৃভূমি – ভারতবর্ষকে।

    এক মায়ের কোলে জন্ম আমার , মৃত্যু আর এক মায়ের কোলে।

  • কবিতা

    কবিতা- পোয়াতি

    পোয়াতি
    -সুব্রত আচার্য‍্য

     

     

    অন্তিম আঁচড়ে আঁচড়ে গুছিয়ে নিচ্ছে সময়।

    গোধূলিও জেনে গেছে কখন তাকে ভালো দেখায়।

    বেঁচে থাকার লড়াইটা তোমার কাছে শেখা।

    নতুন ভোরের গন্ধে জানি সূর্য উঠবে।

    ভাগ‍্য আর সূর্য যেন একসুতোয় বাঁধা।

    আমরা প্রত‍্যেকে আধিপত্য দেখাতে চাই , নিজের খাতায়।

    অভিমান ধুয়ে গেলে শব্দেরা নক্সী কাঁথায় বিনীসুতোর গল্প বোনে।

    দিঘির জল টল টল করে উঠলে পোয়াতি মেয়েটার কথা মনে পড়ে।

    পোয়াতিদের একটা নিজস্ব স্বপ্ন থাকে।

    ভালোবাসা ঠিক যখন উর্দ্ধ গগনে , সমস্ত বিশ্বাস – লজ্জা – গোপনীয়তাকে আড়ি দিয়ে সে আজ পোয়াতি।

    আজ যে পোয়াতি, কালকে হবে মা। মায়েরা নষ্ট হয় না।

    ঘাত-প্রতিঘাত সহ‍্য করতে করতে পাথর হয়ে যায়।

  • কবিতা

    কবিতা- স্বপ্ন

    স্বপ্ন
    -সুব্রত আচার্য্য

    শিক্ষা যখন ভিক্ষাজীবী
    কেনা-বেচা হয় ফুটপাতে;
    ভালো-মন্দ একই দামে
    দিনের শেষে, শেষ পাতে।

    আমরা যারা চালাক ভেবে,
    করছি কত চালাকি।
    হিসাব নিকাশ করে দেখ,
    জীবনের অঙ্কেতে ফাঁকি।

    ভাবছো মুঠো মুঠো সুখ কিনবে তুমি,
    সুখের পাহাড় বানাবে গোপনলোকে।
    তোমার দূঃখে, তোমার সহপাঠী,
    স্বপ্ন বেচে দূঃখের সাগরে অনাহারে।

    যাচ্ছে চুরি বিহান বেলায় অষ্টাদশীর স্বপ্ন।
    বিদ্বজনেরা কাঁচের ঘরে, কাঁচের গ্লাসে মগ্ন।
    স্বপ্ন দেখো নিজের মতো, স্বপ্ন কোরোনা চুরি।
    স্বপ্ন নিয়ে আমরা বাঁচি, তুমিই মারো ছুরি।

    দাঁড়ি-পাল্লায় ঝকঝকে রোদ্দুর,
    পেটের নাড়ীতে দিচ্ছে টান।
    সম্প্রীতি আজ কেঁদেই মরে,
    তুমি হিন্দু, আমি মুসলমান।

  • কবিতা

    কবিতা- আমি আমজাদের মা

    আমি আমজাদের মা
    সুব্রত আচার্য‍্য

     

     

    আমি আমজাদের মা গো … পদ্মা পাড়ে, মোল্লা পাড়ায় থাকি।

    পদ্মার দুকুল ঝাপিয়ে যখন বন্যা এলো, আমজাদের তখন জন্ম হল। সবাই বলত বাপের মতো হয়েছে। কেউ কেউ বলত মাথা ভর্তি চুল হয়েছে। আমার মতো নাকি ছোট্ট কপাল। যেই বন্যার জল শুকিয়ে গেল, আমজাদের বাপ কোথায় হারিয়ে গেল। সবাই বলে ওর বাপ নাকি কাঁটাতারের ওপারে নতুন ঘর বেঁধেছে।

    আমজাদ তখন ছোট, দশ কি বারো হবে, এক ফকির বাবা কে দেখে সে কি কান্না। স্মৃতির অদূরে ভেসে চলে আমার ভাগ‍্য লেখা। ভাগ‍্য আমায় বেঁধেছে কাঁটাতারে, পদ্মায় ভেসেছে জীবন।

    আজ কতদিন হয়ে গেল, কতদিন দেখিনা ওকে। মায়ের মন পদ্মার জল আর কাঁটাতারে। আগে তবুও ছ’মাস ছাড়া আসত, বলত কাজের খুব চাপ, তুই চিন্তা করিস না মা আব্বাকে ঠিক ফিরিয়ে নিয়ে আসব। চোখ থেকে চোখে এক বোবা কান্নার ছবি ফুটে ওঠে।

    তোমরা কেউ কি বলতে পারো, আমজাদ কে কোথায় পাবো? কেউ কিছু বলছো না কেন? এই সিরাজ তুই তো ওর ছোট বেলার বন্ধু। তুই কি জানিস আমজাদ বাড়ি ফিরবে কবে? আজ বাড়িতে সব বাড়ন্ত।

    আজ সূর্য উঠুক পবিত্র নামাজে সুরে। নামাজের ধ্বনিতে ছিঁড়ে যাক কাঁটাতারের বাঁধন। আমি কাঁটাতারের ওপারে কি আছে কোনদিন দেখিনি। শুধু পদ্মায় ভাসিয়েছি এ জীবন। তাই আমি যাব কাঁটাতারের দেশে। আজ যে সব বাড়ন্ত। চিৎকার করে বলব, শুনতে পাচ্ছো… আমি আমজাদের মা বলছি … পদ্মা পাড়ে, মোল্লা পাড়ায় থাকি।

  • কবিতা

    কবিতা- মুখোমুখি অন্ধকার

    মুখোমুখি অন্ধকার
    -সুব্রত আচার্য‍্য

     

     

    গৃহস্থের দরজা খুলে ঢুকে পড়ে একসুতো রোদ্দুর।
    জলপাই রঙের ভালোবাসায় সন্ধ্যা নামে।
    কাব‍্যিক রঙে ভেসে যেতে চাই আমরা সবাই।
    নিঃশব্দে ফুটে ওঠা ফুল, সেই জানে যন্ত্রণা কাকে বলে।

    যন্ত্রণাও আজ বিক্রি হচ্ছে। সস্তা দামে।

    যন্ত্রণা নেবে গো – – – – যন্ত্রণা।

    মুখোমুখি আমার সবাই এক আকাশের নীচে।
    মুখোমুখি অন্ধকারে ভালোবাসা কেঁদে মরে।

    আমরা যারা হাভাতে, সস্তা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছি এক বুক যন্ত্রণা; প্রতিদিন প্রতিনিয়ত!
    আমরা জানি না পৃথিবীর কোন গোধূলিতে ধুয়ে যাবে এ যন্ত্রণা।
    শুধু স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখি, একদিন একসুতো রোদ্দুর নয়;
    রোদ্দুর উঠবে শরৎ-এর রোদ্দুর গৃহস্থের ঘরে।
    জলপাই ভালোবাসায় চিক্ চিক্ করে উঠবে গোটা সমাজ।

    মুখোমুখি আমরা সবাই অন্ধকারে।

    যন্ত্রণা নেবে গো – – – – যন্ত্রণা ।

You cannot copy content of this page