-
বিচিত্র দৃশ্যপট
বিচিত্র দৃশ্যপট
-শংকর হালদারদৈনিক ক্রমিক ক্রমানুপাতে
নিরপেক্ষ ভূমিতে পুষ্ট আগাছা
ধর্মের নামাবলী গায়ে বিধর্মের-
শাসন দেশ জুড়ে ,
পোলিওমায়েলাইটিস ভাইরাস
আইনের হাত ধরে পৌছে যায়
মানব গহ্বরে।
শিক্ষা অমাবস্যার কোট গায়ে…
জন্ম দেয় বীজহীন ফল।
শাসনের পর্দা ফুঁড়ে সময়ের খোপে খোপে
প্রসব করে আগাছা,
স্ব-জাতির পরিপূরক নীতির আদর্শকে
স্বাগত জানায়,
স্বাগত জানায় আলেয়ার বেশ্যা গিরি।
ক্ষণিক নিমিত্ত হলেও মোহিত চিত্তকে
ঠেলে দেয় অন্ধকূপে,
হয়তো এটি চক্রব্যূহের প্রথম ধাপ।
গভীর থেকে গভীরে আগাছার মূল
শুষে নেয় সমাজের রস,
উড়িয়ে দেয় ঊষর পাংশু সমাজ চোখে ।
পবিত্র ভারত তীর্থভূমিতে এঁকে দেয় পদচিহ্ন
রবি কাজী শরৎ বঙ্কিম আজ খাবারের ঠোঙা
পায়ে পায়ে অঞ্জলি পথের ধূলোয়
আর্বজনার আন্দোলনে নাভিশ্বাস-
পতিত পাবনীর, সন্ধিকরে খাল বিলে,
দেশ জুড়ে শ্মশানের স্বর্গ, শবের মিছিল
অবৈধ লাইনে ভিড় যমলাপুরী
ক্লান্ত পথিক মৃত্যু রাজ
লজ্জিত যত … -
গল্প হলেও সত্যি
গল্প হলেও সত্যি
-শংকর হালদারগঙ্গা যমুনা একক বসনের দ্বৈত পাড়
বৈরাগী কচু পাতার নিঃসঙ্গ জীবন,
তটিনীর শান্ত প্রবাহে বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন
এসব ধরনীর ওঠা পড়া হাঁড়ির খবর
গল্প হলেও সত্যি ।শরৎ প্রভাতে তৃণের সয়ম্বর
রবির কিরনে মুক্তোর মালা
অঞ্জলি পায়ে পায়ে,
বিধাতা পুরুষের সৃজন ব্যঞ্জনা দেখে
আজও খর্ব হয় লোমকূপ।যোগীর সাধনার ধন গচ্ছিত রতি
রসলা নারী প্রকৃতির সঙ্গ পেয়ে
নির্গত হয় মাথা ফুঁড়ে,
শ্বাস নেয় শবের মতো নিঃসাড় আগ্নেয়গিরি
খেয়ালিপনার গল্প হলেও সত্যি।সবুজের বারান্দা বৃষ্টি বোনে
হারানো যৌবন প্রাপ্তির প্রত্যয়
রামধনুর সাতকথার বাজারে
এখন লেগেছে বাদলা
গর্ভবতী ধরিত্রী
কবিতা রূপকথার রং মাখলেও
সত্যি এসব।বরফের মরণ কান্না…অন্তর্ঘাতী Co2
অকাল নিয়তি হানা দেয় শিয়রে
মুক্তির আলো ঘন ধোঁয়াশা
গল্প হলেও সত্যি।বাঁচা বাড়া আজ বিপদ সঙ্কুল
বিষাক্ত শাসন বারবার শাসায়
হংস স্বামী রবি কাজীর বাণী ঘন তমসা
কেঁদে বেড়ায় পথের ধূলিকনা
গল্প হলেও সত্যি এসব
এক্কেবারে সত্যি। -
ধ্বংসের মুখোমুখি
ধ্বংসের মুখোমুখি
-শংকর হালদারকান পেতে শুনি ছন্নছাড়ার আর্তনাদ
নিঃশ্বাসে বারুদ গন্ধ
পিপাসার নীর কীটের খেলা ঘর
সমাজ ও ওতপ্রেতে আছে
হায়নার মতো থাবা বসাতে ,
মননের আকাশে আবছায়া স্বপ্ন
সদ্যজাত শিশুর অকাল ভবিষ্যৎ
মুখের হাসিও ম্লান…
সবুজ বুকে মনুষ্য অস্তিত্ব
আজ বিপন্ন…
প্রাণ নিয়ে টানাপোড়েন
‘এ’ বলে আমার দ্যাখ ‘ও’ বলে আমার …
খিদের অন্নটুকু পাথরে ভরা
মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু পাবে কি…
মাথা গুঁজে থাকতে ,
বিপন্ন পৃথিবীর বুকে মরু যেন
খিলখিল করে হাসে … -
সম্পর্ক
সম্পর্ক
– শংকর হালদারবসন্তের গোধূলি লগন মাড়িয়ে পথ চলা
মরুর বুকে বালির টানাপোড়েন
বারির বুকে ঢেউয়ের উচ্ছাস
অমলিন সম্পর্ক থিতিয়ে পড়ে
কাঁচের গেলাসে,উষ্ণতার হাতাহাতি হাতের মুঠোতে
ধরে রাখা যায় না,ফুলে ফুলে মালা যত গাঁথি
সুতোকে রেখে নিরবে ঝোড়ে যায়
আদৌ থাকে না মালা হয়ে,নক্ষত্রের আলো সম্পর্ক বাড়ালেও
নিভে যায় নিজে, নিজে থেকে ।আমার ছায়ায় তোমাকে হাঁটতে দেখে
সম্পর্ক ছড়িয়ে পড়ে শিরায় শিরায়,ঘাম হয়ে ঘাসের আগায় ধরা দেয়
শিশির হয়ে আমার পায় । -
ভিখারি
ভিখারি
-শংকর হালদারজনতার ভিড়ে ঢেকে যায়
নিঃস্ব দেবতার স্বর ,
অভুক্ত শকুনির মতো
জরাজীর্ণ প্রাণের টানাপোড়েন
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত,
রাজপথ থেকে রাজদ্বারে
ফুটপাত থেকে গলি
খসে পড়ে ভগ্ন দালানের মতো
পায়ের চামড়া , ভরে না উদর ।অনাদরে অবহেলায় কলঙ্কিত দেহ,
আধুনিকতার আবর্তনে মানব মননে
এখনও কি আঁচড় লাগেনি!চিল শকুনের মতো ঠুকরে ঠুকরে খায়,
ছুঁড়ে দেয় মুখে যত উচ্ছিষ্ট!
পাওয়ার প্রত্যাশায় লেজ নাড়তে থাকে,
সাগর চোখে তাকিয়ে থাকে
চাতকের দৃষ্টি নিয়ে,
কুসুমের মতো ঝরে যেতে থাকে
রবির প্রভা নীরবে গায়ে মেখে
একই ছাদের তলায়।কেউ তো হিসাব রাখেনা
অভুক্ত বাসিন্দার। -
নিছক স্বপ্ন
নিছক স্বপ্ন
– শংকর হালদারস্বপ্ন মানে সময়ের খোপে খোপে
পাখির মতো ঠুকরে ঠুকরে বাসা বাঁধা
কালের স্রোতে স্থায়ী কারো তাসের ঘর।স্বপ্নচারী চাতকের প্রাণ
দমকা কিংবা মৃদু হাওয়ার ক্ষত
নীরবে সয় শরীর পেতে।নিছক খোলা ইটের পাঁজরে
কখনো সখনো নিছক খেলা ঘর
সাক্ষী হয় দগদগে ক্ষত
তখন ও স্বপ্ন ..স্বপ্নের মায়াহরিণী
আপন খেয়ালে স্বপ্ন রচে বিজন পথে।
উষ্ণ বুকে মরুযান যেমন
পথচলে অবহেলিত পায়
রজ্জুহীন মরূদ্যানের মায়াবী টানে।চঞ্চুর মায়াকানন এখনও রচে।
উদভ্রান্ত মন নিছক স্বপ্ন গেঁথে বেঁচে বর্তে আছে
বিবর্ণ চোখে বর্নের জলছবি এঁকে । -
ঘাতক
ঘাতক
-শংকর হালদারসূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের রক্তিম আভায়
জৌলুস চেহারার পোশাকি নামে
বলির খড়গে দীক্ষিত হিংস্র সত্তা
জেগে ওঠে নিশীথ অরণ্যের কোলে ।লুপ্ত সমাজ বুকে
সুপ্ত পিতৃত্বের কিংবা ভ্রাতৃত্বের পরিচয়
মানবিকতার সবুজ ঘাস
দলা পাকিয়েছে নিজেকে বিকিয়ে ।পাবকের দ্বিধাহীন রুচিতে
চুষে নেয় শোণিত প্রবাহ
খোসার মতো ছুঁড়ে ফেলে
নিথর দেহ ।কাগজের বুকে গা ভাসালো
কলমের কালির বমিতে
ধাঁধিয়ে যাওয়া নীরব অপলক দৃষ্টি
হারিয়ে ফেলে ভাষা ।জরাজীর্ণ শাসকের কলুষিত শাসনের অধীনে
অবাধ গতিতে ছুটেছে
তার রথ ।অজস্র নজরের ভিড়ে ঢেকে যায়
স্পর্শকাতর মুখচিত্র ।.