• কবিতা

    নির্মম পরিহাস

    নির্মম পরিহাস

    -নীলোৎপল সিকদার

     

     

    জ্বলেছো সারাটি জীবন
    পুড়ে পুড়ে হয়েছো অঙ্গার,
    অধিকারহীনতায় কেঁদেছো দিনরাত্রি,
    কেউ তোমার দিকে ফিরেও তাকায়নি…

    করেছো নিপুণ হাতে গৃহকর্ম- সুচারু,

    কঠোর কায়িক শ্রমে ঝরিয়েছ-ঘাম,

    মাথা নীচু করে ভয়ে ভয়ে থেকেছো-সারাক্ষণ,
    মন গলেনি তবু কারো-দেখায়নি দরদ…

    মমতার হাতে করেছো সকলের- সেবা যত্ন
    বিনিময়ে পেয়েছো লাথি-ঝাঁটা
    তুচ্ছতাচ্ছিল্য-অবেহলা-ঘৃণা,
    ধন্য তুমি গৃহ লক্ষী-স্বামীর বউ…

    পৃথিবীর সর্বোত্তম মহতী কর্ম করেছ
    কঠিন কঠোর প্রসব ব্যথা সয়ে,
    মহা বীরের মত দিয়েছ সন্তানের জন্ম,
    তবু স্বামীর ভালোবাসা জোটেনি কপালে,
    তোমাকে করেছে যৌনদাসী
    ভেবেছে বংশ রক্ষার যৌনযন্ত্র…
    সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্র…

    সারাটি জীবন যাতনা যন্ত্রণা
    দিয়েছে যে মানুষটি
    তাকে কখনো স্বামী মনে হয়নি,
    মনেও হয়নি সহানুভূতিশীল বন্ধু,
    মনে হয়েছে দেও-দৈত্য-দানব…

    অথচ দেখো ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস
    সেই মানুষটি মারা গেলে
    তোমাকেই বহন করতে হয় বৈধব্য দশা,
    পরতে হয় বিধবার পোষাক
    সাজতে হয় বিধবার সাজে,
    হায়রে সর্বংসহা মহীয়সী নারী
    আর কত কাল!
    আর কত কাল…

  • কবিতা

    তুলনা

    তুলনা

    -নীলোৎপল সিকদার

    কত মেঘ আকাশে ওড়ে
    সব মেঘে ঝরঝর বৃষ্টি ঝরে না,
    কিছু মেঘ উড়ে যায় ভেসে যায় দূরে,
    সব মেঘ সূর্য ঢাকে না
    মেঘ ভাঙ্গা রোদের আলো ছড়ায় না,
    উড়ে উড়ে ভেসে যায় আকাশ নীলে…

    সব পথ ফুলে ছাওয়া নয়
    সব পথ সরল সহজ নয়,
    পায়ে পায়ে সব পথ
    রাধা বৃন্দাবনে যায় না,
    সব পথেই হাঁটে পথ
    যার যেমন খুশি…

    কত ফুল ফোটে রোজ কুসুমবাগে,
    কত ফুল ঝরে পড়ে-ধুলায় লুটায়,
    সব ফুলে দেবতার পূজা কি হয়,
    তবুও মাটির জমিনে শোভা বাড়ায়
    বর্ণিল পাপড়ি মেলে…

    সব মানুষের সমান গুণ-প্রতিভা কি হয়
    সবাই তো একরকম নয়-একই যোগ্যতা নেই,
    সবাই সবার মত নয়–যার যার মত সে ভালো
    তবুও প্রতিটা মানুষের গভীরে
    বিপুল সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে…

    কাউকে কারো সাথে তুলনা চলে না
    যে যেমন সে তেমনই
    সেটাই বড় এক আশ্চর্য প্রাণ…

    তুলনা করলে কত মন হতাশ হয়
    উৎসাহ হারিয়ে কষ্টজলে ভাসে,
    কারো কারো বুকে পাথরের আঘাত সম লাগে এ তুলনা…

    তুলনার ঘায়ে হতাশ হয়ে
    কোন কোন হৃদয়-থেমে যেতে পারে,
    হারিয়ে ফেলতে পারে কর্ম তৎপরতায় এগিয়ে যাওয়ার আকাঙ্খা…

    এই তো ভালো নিজেকে কারো
    দুঃখের কারণ না করা,
    কাউকে সর্বনাশের পথে এগিয়ে না দেওয়া,
    তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের আগুনে কারো মন জমিনে
    সাজানো বাগান না পুড়ানো…

    থেট করে না বলা অমুক এই করেছে- সেই করেছে
    তুমি করতে পারো নাই- কি করেছ,
    অমুক এমন তেমন-তুমি কেন সেরকম নয়-তেমন কেন হতে পারো না!
    তার চেয়ে
    উৎসাহ প্রশংসায় ভিতরের স্পৃহাকে বেগবান করাই ভালো…

    উৎসাহ পেলে লেংড়াও টপকাতে পারে
    ঐ সুউচ্চ পর্বত,
    বিশ্বাস দৃড় হলে আহত সৈনিকও
    প্রবল আত্মবিশ্বাসে ইস্পাত কঠিন প্রতিরোধ গড়ে
    বীরের লড়াই লড়ে
    বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারে…

    উৎসাহ ও প্রশংসার শক্তি এক
    প্রচন্ড প্রভাবিত শক্তি…
    এক দুর্বার অপ্রতিরোধ্য প্রেরণাদায়ী
    বিস্ময়কর আত্মবিশ্বাসের জন্মদাত্রী…

  • কবিতা

    বিবর্ণ হালখাতা

    বিবর্ণ হালখাতা

    -নীলোৎপল সিকদার

     

     

    খেলতে খেলতে রাস্তা পায়ে হেঁটে যায়
    থৈ থৈ রৌদ্র ঢেউ খেলে- রাস্তা নির্জন
    আগুন পোড়া বালি উড়া জ্বালা
    বুক পেতে রাস্তা একা তপ্ত ধুলি মাখে…

    সবুজের কাছে তবু ঋণ-দিন কাঁদে
    ফুলে ফুলে দুলে উঠা শাখা কাঁদে
    অবাক বিস্ময়ে চোখের কোণে বৃষ্টি ঝরে…
    সবুজের কাছে পড়ে থাকে দিনের ঋণ…

    চন্দন ফোঁটার আল্পনা আঁকতে
    হলুদ উৎসব থেমে যায় নিবিড় কল্পনা অরণ্যে,
    লাল বেনারসি শাড়ীর ঘোমটা
    বুকের কান্নায় ভেজে
    কপালে সিঁদুর মেখে সূর্য ডোবে অস্তরাগে…

    সবুজের বুকে ঋণ
    বিবর্ণ জীবন হিসাব গড়াগড়ি খায় শ্রাবণ ধারায়…

  • কবিতা

    বিস্ময়

    বিস্ময়

    -নীলোৎপল সিকদার

    অনন্ত রহস্যভরা এ পৃথিবী
    পলে পলে অনুপলে ধ্বনিত- প্রতিধ্বনিত…

    আকাশ-বাতাস-গ্রহ তারা,
    সাগর-নদী-পাহাড়-নিবিড় ঘন অরণ্য,
    বহু বর্ণিল বহু আকার প্রকারের প্রাণী,
    ধুলি-মাটি- চন্দ্র-সূর্য-মেঘ-বৃষ্টি-ঝড়,
    সবই দুর্বোধ্য জটিল রহস্যঘেরা…

    মানুষের মন কালে কালে যুগে যুগে
    জানতে চেয়েছে বুঝতে চেয়েছে,
    কি-কেন এবং কে এ অপার রহস্যের সৃজনকারী?

    বোধদ্বীপ্ত অনন্ত জিজ্ঞাসার উত্তরে
    ভয়- বিস্ময়ে মানুষ ভৌতিক শক্তি,
    অলৌকিক শক্তির কল্পনা করেছে,
    বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন সৃষ্টি জগতের এ সেরা প্রাণী,
    মানুষ এ ভাবেই জানতে চেয়েছে- উত্তর খুঁজেছে…

    প্রাথমিক ধারনায় মানুষ মন গড়া কল্পনায়,
    যার যার মত এ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছে
    কল্পনা আর অতি কল্পনায়…

    মানুষের বুদ্ধি বিকাশ-জ্ঞান বিজ্ঞানের ক্রম অগ্রতিতে,
    বিস্ময়কর ভাবে মানুষের চেতনায় এসেছে
    নির্গুণ নির্বিকার নিরাকার অসীম শক্তির আধার
    প্রেম করুনাময় আনন্দঘন ঈশ্বর…

    সসীম মানুষের চিন্তা চেতনায়
    অসীম ঈশ্বরের কল্পনা করা-চিন্তা করা
    কঠিনতর দূরদর্শী আশ্চর্য একটি ঘটনা…

    ভাষার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে
    যুক্তির কষ্টিপাথরে যাচাই করে,
    ঈশ্বরকেই সৃষ্টি- স্থিতি-রক্ষা-পালন ও বিনাশের সর্বশক্তিমান কর্তা বলে
    পরম ভক্তি আর আদরে বিশ্বাস করেছে….

    সসীম মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের চিন্তা করা
    একটি মহা বিস্ময়কর অর্জন,
    অপার বিস্ময়কর জ্ঞান লাভ…

    জ্ঞান বিকাশের ঊষালগ্নে এই কল্পনার ঈশ্বর,
    যুক্তি আর বিশ্বাসে আজ বহু নামে বহু বর্ণে বিভূষিত,
    পূজিত আরাধ্য এবং মানুষের শেষ আশ্রয়…

  • কবিতা

    অচেনা

    অচেনা

    -নীলোৎপল সিকদার

     

     

    কতদিন চলছি জীবনের রৌদ্র পথে,
    যেতে যেতে দেখেছি কত খুচরো দৃশ্য,
    পেয়েছি কত তরুনীর চোখের রঙ,
    ক্ষণিক আবেশ দিয়েছিল
    আকাশ কোণে রংধনুর মত,
    আবেশ মুছে যাওয়ার আগেই
    সে রঙ ঢেকে গেছে কৃষ্ণ মেঘে,
    মিশে গেছে আকাশ নীলে নীলে…

    একটি মায়াবী চোখের কাজল
    এঁকেছিলো জীবনের আল্পনা,
    সেও হারিয়ে গেলো চাওয়া- পাওয়া
    লাভ ক্ষতির হিসেব নিকেশে…

    মিছে হলো এ রৌদ্র পথে-পথ হাঁটা ,
    আহা চিরদিন অচেনা থেকে গেলো ভালোবাসা,
    তীব্র পিপাসাটুকু রয়ে গেলো মন যমুনায়…

    ভালোবাসা আর আমার বিরহ
    যমুনায় বয়ে চলে স্রোতের টানে,
    যুগে যুগে কালে কালে পুড়ে পুড়ে-পোড়ায়…

    অচেনা আমি-আমার জগৎ জীবন,
    এতোদিন চিনেছি বলে যা জেনেছি
    আজ মনে হয় চিনি নাই তারে মোটেও,
    বিরহ তাই জনমে জনমে
    রাধার মত বয়ে যায় যমুনায়
    মিলনের পিপাসায় কেঁদে কেঁদে..

  • কবিতা

    আলো

    আলো
    -নীলোৎপল সিকদার

     

     

    চারিদিকে নিকষ কালো আঁধার ভেজা,
    হাজারো মন্দ-অসৎ-লোভীর ছড়াছড়ি,
    ক্ষেপা ষাঁড়ের মত চারিদিকে দাপিয়ে বেড়ায়
    ঘুষ-দুর্নীতি গ্রস্ত অশুভ প্রবৃত্তির মানুষ.
    তার মাঝেও জেগে থাকে- নীতি আদর্শে অটল
    সৎ সুন্দর সাদা মনের মানুষ,
    কেবল সেই এ জীবন জগতের
    রূপ উপলব্দি করে বিমল আত্ম প্রসাদ লাভ করে…

    নিজের বিবেকের কাছে এমন অমলিন আলোর মানুষ
    পৃথিবীর আনন্দ স্রোতে অবগাহন করে,
    পরম আনন্দ ছুঁয়ে ছুঁয়ে আত্ম আনন্দে বিভোর থাকে…

    ও সে সোনার মানুষ আলোর রশ্মি হয়ে
    তার জীবন জগৎ আলোয় আলোয় ভরে রাখে,
    সংসারের দুঃখ-তাপ-জ্বালা তাকে স্পর্শ করতে পারে না..

    এমন দ্বীপ্ত আলোর রশ্মি ছড়িয়ে
    হাজারো মন্দ-কাপুরুষের মাঝে কেউ কেউ
    সৎ সুন্দর ভালো থেকে
    মহা পৌরুষত্বের গৌরব অর্জন করে…

    একটিই জীবন একবারই জন্ম
    দ্বিতীয়বার কখনো নয়…
    সৎ সুন্দর মানুষ হওয়ার জন্য
    আর কি কোন জন্ম পাওয়া যাবে!
    এ মানব জন্মই সেই দুর্লভ জন্ম
    সোনার মানুষ হয়ে অমৃত ঐশ্বরীক আনন্দ লাভের…

  • কবিতা

    অপেক্ষা

    অপেক্ষা
    -নীলোৎপল সিকদার

     

     

    কতদিন রাস্তা চোখ নির্নীমেষ
    বৃষ্টিফুল লুটিয়ে কাঁদে ধুলো বুকে…

    মন ভেজা ফাগুন রোদ আকাশ
    কৃষ্ণমেঘে মুখ ভার,
    শূন্য চাঁদের সংসার–নক্ষত্র গোনে একা…

    দুরন্ত আগমণী রথ এতো আস্তে আসে
    আসতে আসতে বেলা ফুরায়,
    সন্ধ্যার পকেটে জমা হয় আঁধার…

    অপেক্ষায় বৈষ্ণব ভাবনা দোল খায়
    মন মন্দিরে বিসর্জনের ঘন্টা বাজে…

    এখনো একটু আলো বাকী আছে
    রাস্তাচোখে মুছে যাওয়া প্রহরে…

  • কবিতা

    বাধা

    বাধা
    -নীলোৎপল সিকদার

     

     

    যতবার দরজা পেরুতে চাই
    ততবার চৌকাঠে আটকে যাই,
    কবে কার ভুলে যাওয়া অশরীরি কিছু কথা
    শপথের মত পা আটকায়,
    কিছুতেই পেরুতে পারি না চৌকাঠ…

     

    জানি এ ঘরে এ বাড়ির আঙিনায়
    কেউ নেই আর আপন!
    দুখানি হাতে বেঁধে নিয়ে গেছে
    সেই পলাশের দিন-ধবল কাশ বনে ছুটে চলা

    শরতের সাদা মেঘের ভেসে যাওয়া দিন,
    কে আছে আর আমার!
    তবুও ছেড়ে যেতে পা আটকায়
    সজল একখানি নরম মুখ…

     

    বর্ষার কদম বনে কত কদম ফুলে ভরা
    ঝরঝর বাদলধারা আজও অবিরল
    কে আছে আর ডাকবে “আয় বৃষ্টি ভিজি “

    কেউ নেই কিছু নেই কেন যেন তবু যেতে পারিনা
    শপথের মত চৌকাঠে দুখানি পা আটকায়…

  • কবিতা

    খোঁজ

    খোঁজ
    -নীলোৎপল সিকদার

     

    আমি দাঁড়িয়ে আছি শতাব্দী প্রাচীন কাল
    মানুষ সৃষ্টির ঊষা লগ্ন হতে,
    আমি মানুষ আপন দু-পায়ে
    শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি
    শ্বাপদসংকুল পৃথিবীর মাটির উপর…

    আমার চারপাশে অগণিত প্রাণী
    অথচ আমার পাশে-সাথে কেউ নেই,
    আমি একা–সত্য ন্যায়ের মশাল হাতে
    দৃপ্ত পায়ে সময়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছি…
    আমি মানব সন্তান-আমি মানুষ…

    আমি কত মত-পথ-ধর্ম অতীতে বদলিয়ে
    মানব কল্যানে সুস্থ সুন্দর একটি
    আদর্শ পথের অন্বেষণে যাতনা যন্ত্রণা সহ্য করে
    এগিয়ে যাচ্ছি মানুষের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবীর খোঁজে…

    এ আকাশ-বাতাস-সাগর-নদী-গ্রহ-নক্ষত্র
    আমাকে প্রেরণা দিচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার,
    যেন ফিসফিস করে বলছে এগিয়ে যাও
    আমরা শক্তি সাহস নিয়ে আছি তোমার সাথে…

    সামনে তোমার প্রিয় মানুষের জন্য
    একটি বাসযোগ্য আলোকিত পৃথিবী অপেক্ষা করছে,
    সে পৃথিবীতে ধর্ম, অর্থ-মোক্ষ নয়
    সেখানে সবার উপরে মানুষ সত্য,
    কোন ধর্ম-বর্ণ বিভেদ নেই
    একটিই ধর্ম-নাম তার মানবতা…

    সেখানে প্রথম কথা মানুষ এবং শেষ কথা মানুষ,
    সে পৃথিবীতে কোন ভিন্ন ভিন্ন নামের ধর্ম নেই
    নেই ভিন্ন ভিন্ন নামের ঈশ্বর,
    আছে ধর্ম একটিই-নাম তার মানবতা
    মানুষই সে ধর্মের ঈশ্বর…

    এসো বন্ধু বেঁচে থাকার এ বেলা গেয়ে যাই
    মানুষ এবং মানবতার জয় গান,
    আর সব পিছে পড়ে থাক…

  • কবিতা

    অন্ধ

    অন্ধ
    -নীলোৎপল সিকদার

     

    দেখি সবই তবু মনে হয় দেখি না কিছুই,
    দেখি  না শিউলির পাতায় ঝুলে থাকা
    শিশির বিন্দুর অনুপম নৈঃসর্গের ছবি আঁকা,
    ঝরা শিউলির কান্নার আনন্দ…

    দেখি সাত রঙা রংধনু মেঘের কোণে
    দেখি না সে অপরূপ রঙে হৃদয়ের রঙ দোলে
    মন রাঙানো ফাগুন গান গেয়ে…

    ফুল দেখি-পাখি দেখি-সবুজ তৃন দেখি
    দেখি ঝর্ণার গড়িয়ে চলা
    ঝর্ণার ছুটে চলা ছন্দ দেখি না…

    দেখি না সতেজ তৃণের অপূর্ব সবুজ হাসি
    দেখি না ফুলের অসম্ভব মধুর রূপ
    পাখির মন মাতানো তান শুনি না…

    অবিরল বৃষ্টি দেখি টিনের চালে ঝরতে
    বৃষ্টি ভেজার জলজ গন্ধ পাই না
    পাই না বৃষ্টির স্পর্শে উদাস হাওয়ার টান…

    যুবতী মেয়ে দেখি কামনার ময়লা চোখে
    দেখি না মেয়েলি সৌন্দর্যে কত পবিত্রতার ছবি,
    দেখি না নিরস পৃথিবীর জীবনে সকল শান্তির সূতিকাগার
    ও দুটি মায়াবী আঁখিতে…

    একটি কোমল হাতের ছোয়ায়
    কেমন করে কোন যাদুতে চোখ খুলে যায়
    এ পৃথিবী সকল রূপের আলোয়
    নীবির সুন্দরে হেসে ওঠে!

    হাত ধরে নিয়ে এলে আনন্দের
    অমৃত সাগর তীরে
    এ দুচোখ–সকল সুন্দর দেখে
    হাজার আলোর আশ্চর্য প্রদীপে
    আলোয় ভুবন ভরে উঠে…

You cannot copy content of this page