• কবিতা

    কবিতা- তাই আজও হয়তো

    তাই আজও হয়তো
    – দেসা মিশ্র

     

     

    চাঁদ গলে পরে রাত গায়ে, দেহ মনে নেমেছে ক্লান্তি।
    মেঘের সিঁড়ি বেয়ে নেমেছি রজনীগন্ধা জুঁইয়ে, তুমি ভালোবাসো তাই।
    দূরত্ব এক পৃথিবী – মনে মেশা মন,
    আলো মাখা দুই চোখ জীবনের গভীর থেকে আরো গভীরে নিয়ে যায় – মুক্তির স্পর্শ।
    রঙ তুলি খুঁজে যাই পথ জুড়ে, অথচ রক্তের নেশা লাগে দানবের।
    সৃষ্টির গায়ে গায়ে ধ্বংস – মুখ গুঁজে শ্বাস নি কবিতায় ।
    তাই আজও হয়তো…..

  • কবিতা

    কবিতা- ও মেয়ে… শোন

    ও মেয়ে… শোন
    – দেসা মিশ্র

    মেঘ নৌকা তোর জন্যে, তোরই জন্য চাঁদের ঢেউ,
    ও মেয়ে তুই কাঁদিস কেন ? নেই বুঝি তোর কেউ ?
    ওই তো আছে সূর্য বুড়ো কবে থেকে জেগে,
    রোজ সকালে আদর করে তোকে যে দেয় ডেকে।
    ওই যে আছে পাখির দল – কিচির মিচির গাই,

    মিছে বলিস – তোর সঙ্গী কেউ নাই।
    পাহারা দেয় পাহাড় সবুজ – তোর নকশা কাটা মনে,
    বৃথা কাঁদিস মুখ লুকিয়ে একলা ঘরের কোণে।
    ঘাস ফুলে দেখ ডুব দিয়ে যায় -প্রজাপতির দল,
    মুখ তুলে দেখ, – কি রঙ নিবি বল?
    উঠিয়ে মাথা আকাশ দেখ – কতো সুখের ছবি,
    বল না মেয়ে – বাসবি ভালো? ওদের বন্ধু হবি?
    সবাই তোকে ভালোবাসে, নেয় যে তোর খোঁজ,
    তাই তো মেয়ে, তোর ঘুমের দেশ স্বপ্ন মাখা রোজ।।

  • কবিতা

    কবিতা- মুখোশ জীবন

    মুখোশ জীবন
    – দেসা মিশ্র

     

     

    নিদ্রাহীন অনেক অনেক রাত,
    এক নৌকা জোনাকি -স্বপ্নের অপেক্ষায় ।
    দেহের ক্লান্তি মিটে যায়, মন পড়ে থাকে মনের অতলে।
    শুরু শেষ হয় দিন রাতের ব্যস্ত লুকোচুরি –
    আমিও লুকিয়ে যাই আমার আরো গভীরে আরো গভীরে ।
    ছুঁয়ে দেখতে দিই না ক্ষত,
    ভালবাসতেও দিই না ভুল করে।
    দূরত্ব আঁকতে থাকি এক জীবনের, এভাবেই মৃত্যু আসে অবহেলায়, প্রতি শ্বাসে।
    তবুও সবুজ বেশে মুখোশের দেশে সুন্দর এক মুখোশ -তুমি ও আমি।

    ইচ্ছের ঘুড়িটাকে মুক্ত নীলে উড়তে না দিয়ে, বেঁধে বেঁধে রক্তাক্ত করি।
    আর নাম দি গোলাপ কিম্বা রক্ত পদ্ম।
    জীবন ঠিক তার চেনা পথে হাঁটে দেহের মৃত্যু পর্যন্ত।

    অথচ অগুন্তি মৃত্যু মুখোশে লুকিয়ে রাখি আমি আর তুমি।

  • কবিতা

    কবিতা- আগুন স্রোত

    আগুন স্রোত
    – দেসা মিশ্র

     

     

    হারিয়ে গেছে চেনা রঙ রোদ আলাপ, আবারো ঠোঁট দুটো ফুলে ওঠে কান্নায়,
    কদমের পাতায় পাতায় লেখা চিঠি ভিজে যায়,
    মনের অনুভূতি ধুলো কাদা মেখে ক্লান্ত ভীষণ।
    চিলেকোঠা তে মুখ গুঁজে কান্না’রা ।অবহেলা গুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে- আগুন স্রোত,
    রোজ স্নান করে দেহ মন,,
    প্রশ্ন গুলো সব প্রশ্নই থাক না – জীবনের শেষ বিন্দুতে ও।
    সবটুকু উত্তরে, – ভাবনার মৃত্যু।।
    অস্পর্শ মিলন আর শর্তহীন ভালোবাসা।।
    যেদিন ক্লান্তির সন্ধ্যা নামবে দেহ জুড়ে, –
    একটি কবিতা উপহার দিও –
    আমি নিস্তেজ, কোলে মাথা রেখে – অনন্ত নিদ্রায় লীন হব।

  • কবিতা

    কবিতা- আলো আঁধারে মিশে তুই,,

    আলো আঁধারে মিশে তুই,
    – দেসা মিশ্র

     

     

    আকাশের ভাঁজে ভাঁজে আকাশ, রঙ মেলেছি ইচ্ছে মতোন নীল হলুদ লাল,
    আলো আঁধারে তোর মুখ,
    কপালের চুল থেকে ঠোঁট পর্যন্ত হালকা তুলির আঁচর,
    যেনো বিধাতার হাতে আঁকা ছবি কোনো l
    রহস্যের আড়ালে আরো অনেক রহস্য সাজানো,
    হয়তো খুব চেনা বা হয়তো অচেনা অনেক খানি ।
    সব টা রহস্য ভেদে ছবি টির হৃদয়ে পৌঁছে যাব।
    যেখানে এক আকাশ সত্যি আছে,
    মিষ্টি প্রেমের বৃষ্টি ও,
    আলোর গন্ধে ছন্দ আছে।
    আর এক জীবন কবিতা ও।

  • কবিতা

    কবিতা- মূর্তি

    মূর্তি
    – দেসা মিশ্র

     

     

    দেখি আমায় হন্যে হয়ে খোঁজ,

    ভিড়ের মাঝে আগলে ধর হাত
    কথার মালায় গল্প হোক গাঁথা –

    ঘুম না আসা টুকরো কাঁচের রাত।

    প্রথম থেকে আবার ভুল ভাঙা

    জাগিয়ে দে আমায় নতুন করে,

    ঘুমিয়ে আছি প্রথম বসন্ত থেকে
    হৃদয়ে এবার আবীর রঙ মাখা।

    তোর পরশে জন্ম নেবো আবার,
    নীল তারারা হাসবে মিটিমিটি,,
    ঢেউ চিবুকে ঝিনুক আঁচর দিয়ে,
    লিখব আবার হারিয়ে যাওয়া চিঠি।

    খুঁজে নিস অনেক রঙের ভেতর ,
    আজও সেই নিখুঁত কালো আছি,,
    বেজান সব মূর্তি গুলোর মাঝে, –

    আমি ও এক মূর্তি হয়েই বাঁচি।

  • কবিতা

    কবিতা – আকাশ বাণী

    আকাশ বাণী
    – দেসা মিশ্র

     

     

    সামনে এখন অশেষ শূন্যতা,
    তবু আজও আকাশ নীল মাখি-
    ধুসর মনের উপর আজও- সবুজ চাদর খুব জড়িয়ে রাখি ।।

    ব্যস্ত এখন তোমার রাস্তা গুলো, বৃথা আশায় তবুও চেয়ে থাকি,

    আমার নামে জমেছে মেঘের ধুলো – উড়ে গেছে ছোট্ট সুখ পাখি।

    আজকে আবার পাতায় দাগ কাটি,
    হয়েছে জানি অনেক অঙ্ক ভুল,,
    শুকিয়ে গেছে সুগন্ধি সব ফুল –
    আস্ত জীবন মস্ত এক ফাঁকি।।

    নষ্ট সব হাতের আঁকা ছবি,
    রক্তে ভেজা তুলির সারা গা – বৃথা প্রাণে আলো জাগায় রবি,
    -প্রেম বিনা যে মন বাঁচে না ll

    কিসের লাগি ব্যথা এতো মানি?
    চোখের জলে বৃষ্টি আসে রোজ – দু হাত বাড়িয়ে কিসের নি খোঁজ?
    ‘একা তুমি’ – এসেছে আকাশ বাণী।

  • কবিতা

    কবিতা- অনন্তের পথে

    অনন্তের পথে
    -দেসা মিশ্র

     

     

    সেই তো বয়ে যাওয়া- সাগরের টানে টানে,
    শুধু পথে পথে নামের বদল রূপের বদল।
    পিছু ফিরে তাকাই না আর, – কুড়িয়ে নি সবটুকু,
    সুখ দুঃখ, হাসি কান্না, ভালোবাসা – আঘাত- অপমান পূর্ণ জীবন ঝোলা ।
    স্বাদেনন্দ্রিয় কি শুধুই মিষ্টি মাখে?
    বালিশের উপর বালিশ চাপা, নিদ্রা হীন মৃত্যু।
    জানালার কাচ গিলে গিলে এ খায় অমাবস্যা।
    তবু সূর্যের চুম্বনে আসে পূর্ণিমা – দু হাত বাড়িয়ে ভালোবাসার আড়ালে দায়িত্ব লুকিয়ে যায়।
    তাই রজনীগন্ধার সিঁড়ি বেয়ে আসে রঙিন মলাট জীবন, আবারো তোমাকেই চাই,
    ঠিক যেমন চেয়েছিলাম কাগজের নৌকা হতে –
    প্রথম পৃথিবীতে, আর পৃথিবীর প্রথম বৃষ্টি ফোটা তুমি,
    নিঃশব্দে ভেসে যেতে চেয়েছিলাম অনন্তের পথে – আবারো অশেষ প্রেমের সাগরে ।

  • কবিতা

    কবিতা- তবু আরো পথ বাকি

    তবু আরো পথ বাকি
    – দেসা মিশ্র

     

    জানি হারিয়ে যাচ্ছি স্রোত থেকে আরো আরো নীল স্রোতে,
    আঁধারের কোলে মৃত আয়ু,
    মায়া যতো জড়িয়ে – দুর্বল মন, প্রবল যন্ত্রণা গুচ্ছ।
    সৃষ্টির নিয়মে এতেই সুখ ও অসুখ।

    কিছু পথ একাই চলতে চাই উদ্দেশ্যহীন, দায়িত্ব হীন,
    দরজা বন্ধ বা খোলা – সামনের পথে – আঁধার কিংবা আলোয়।
    পথের গায়ে পথের যাওয়া আসা,
    পথিকের নামে সব ভালোবাসা।
    সেটুকু শুষে নেবো। পরে থাক সব প্রাণ আপ্রাণ।
    অবাধ্য চঞ্চল নদী হব আজ।

  • কবিতা

    কবিতা- শুধু মৃত্যু আছে বেঁচে

    শুধু মৃত্যু আছে বেঁচে
    – দেসা মিশ্র

    রোজ একটা ছন্দ খুঁজি নতুন করে জীবন কবিতা লেখার জন্য।
    ছন্দ মেলে না ঠিক হিংসা ঘৃণা আর লোভে।
    তাল লয় হারিয়ে চোখের ঢেউ নীলচে হয় আরো।
    তুমি নিঃশ্বাস নাও ফুলের পাপড়ি ছিঁড়ে,
    আমি কেন ঘ্রাণ পাই পোড়া মাংস আর কিছু স্বপ্নের উড়ো ছাই এর।
    আর শব্দ আসে না সাদা পায়রার ডানায়, পায়ে তার শিকল বাঁধা।
    ডানা ঝাঁপটে ওড়ার ছন্দ ভুলে গেছে সে।
    আকাশ মিশে গেছে আকাশে, শুধু ভেঙে গেছে কবিতার প্রতি টি রস রূপ ।
    ছন্দ ডুবে গেছে – বিবেকের সাথে।
    প্রাণ নেই কোনো প্রাণে,
    বেঁচে আছে মৃত্যু শুধু মৃত্যু সবার মাঝে।

You cannot copy content of this page